অথবা, গৌণ গোষ্ঠী কী?
অথবা, গৌণ গোষ্ঠীর সংজ্ঞা দাও।
অথবা, গৌণ গোষ্ঠী কাকে বলে?
অথবা, গৌণ গোষ্ঠী ধারণাটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা : মানুষের মধ্যে গোষ্ঠীবদ্ধতা প্রাচীনকাল থেকেই রয়েছে যা প্রত্যেক সমাজে আজও বিভিন্নভাবে বিদ্যমান। ফলে সমাজবিজ্ঞানের যে কোনো আলোচনায় গোষ্ঠী শব্দটি অনেকাংশে গুরুত্বপূর্ণ, যেহেতু সমাজবিজ্ঞান বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিয়ে কাজ করে থাকে। গোষ্ঠীর শ্রেণি বিভাজনে আমরা লক্ষ করেছি যে, বিভিন্ন সমাজতাত্ত্বিক বিভিন্ন
দৃষ্টিকোণ থেকে গোষ্ঠীর পৃথকীকরণ করেছেন। ফলে গোষ্ঠীর বিভাজনের মধ্যে প্রাথমিক বা মুখ্য গোষ্ঠী ও গৌণ গোষ্ঠীর আলোচনা প্রয়োজনীয় ।
গৌণ গোষ্ঠী বা (Secondary group) : মুখ্য গোষ্ঠীর প্রায় বিপরীত হলো গৌণ গোষ্ঠী। আধুনিক শিল্প সমাজ বুঝতে হলে গৌণ গোষ্ঠীর ধারণা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। গৌণ গোষ্ঠী প্রাথমিক গোষ্ঠীর চেয়ে অধিকতর বৃহৎ এবং এটি সাধারণত খুঁজে পাওয়া যায় সেসব সমাজে যেখানে জীবন তুলনামূলকভাবে সহজ-সরল। MacIver and Page এ ধরনের গৌণ গোষ্ঠীকে ‘Great Association’ বলেছেন। C. H. Cooley প্রাথমিক গোষ্ঠীর পাশাপাশি যে অন্যান্য গোষ্ঠীর ধারণা দিয়েছেন তাকেই গৌণ গোষ্ঠী হিসেবে ধরে অন্যান্য সমাজবিজ্ঞানী আলোচনা করেছেন ।
গৌণ গোষ্ঠী সম্পর্কে অধ্যাপক ডেভিস (Kingsley Davis) এর মতামত হলো, “Secondary groups can be roughly defined as the opposite of everything already said about primary group.” অর্থাৎ, প্রাথমিক গোষ্ঠী কি তা জানা হলেই গৌণ গোষ্ঠী সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। গৌণ গোষ্ঠীর সদস্যদের মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্ক
তা হলো নৈর্ব্যক্তিক ও অল্পকাল স্থায়ী। এ সম্পর্কের নিজস্ব কোনো মূল্যও নেই। এ হলো তৃপ্তিহীন ও ব্যাপ্তিহীন সম্পর্ক। এ ধরনের গোষ্ঠীর সম্পর্কের উদাহরণ হিসেবে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের কথা বলা যায়। কেননা, তারা একটা উদ্দেশ্য নিয়ে মিলিত হলেও প্রায়শই দেখা যায় শিক্ষক ছাত্রদেরকে চেনেন না।
উপসংহার : উপর্যুক্ত সংজ্ঞাগুলোর আলোকে বলা যায়, যে সকল গোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যে প্রত্যক্ষ এবং ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান থাকে না বরং সদস্যদের মধ্যে গৌণ অথবা দূর সম্পর্ক বিদ্যমান থাকে তাদের বলা হয় গৌণ গোষ্ঠী। একটি রাজনৈতিক দলকে গৌণ গোষ্ঠী বলা যেতে পারে।