অথবা, সাংস্কৃতিক ব্যবধান কাকে বলে?
অথবা, সাংস্কৃতিক ব্যবধান বলতে কী বুঝ?
অথবা, সাংস্কৃতিক ব্যবধানের সংজ্ঞা দাও।
উত্তর৷ ভূমিকা : সমাজে সংস্কৃতির প্রধান দু’টি দিক তথা বস্তুগত সংস্কৃতি ও অবস্তুগত সংস্কৃতির মধ্যে যদি পারস্পরিক সম্পর্ক বিদ্যমান থাকে তবে সমাজের স্বাভাবিক গতি ও ভারসাম্য ত্বরান্বিত হয়। সমাজের এ অংশগুলো যদি যথারীতি ও আনুপাতিক গতিতে পরিবর্তিত না হয় তাহলে ভারসাম্য রক্ষিত হয় না। ফলে সৃষ্টি হয় সাংস্কৃতিক ব্যবধান। অর্থাৎ, সংস্কৃতির দু’টি উপাদানের মধ্যে যদি বস্তুগত সংস্কৃতি দ্রুতগতিতে এবং অবস্তুগত সংস্কৃতি ধীরগতিতে পরিবর্তিত হয় তাহলে এ দু’টি উপাদানের মধ্যে যে Gap সৃষ্টি হয় তাই Cultural lag বা সাংস্কৃতিক ব্যবধান।
সাংস্কৃতিক ব্যবধান (Cultural lag) : সাধারণ অর্থে বলা যায়, বস্তুগত সংস্কৃতি যে গতি ও হারে বৃদ্ধি পায় বা এগিয়ে চলে অবস্তুগত সংস্কৃতি সে তুলনায় অনেক ধীরে এগুতে থাকে। ফলে উভয় ধরনের সংস্কৃতির মধ্যে একটা ব্যবধান সৃষ্টি হয়। বস্তুত এটাই হলো সাংস্কৃতিক ব্যবধান।
প্রামাণ্য সংজ্ঞা : ডব্লিউ. এফ. অগবার্ন ও এম. এফ. নিমকফ (W.F. Ogburn & M. F. Nimcoff) এর মতে, “The strain that co-exists between two correlated parts of culture that change at unequal rates of speed.” অর্থাৎ কোনো সংস্কৃতির মধ্যে অসম জাতিতে চলমান দুটি অংশের মধ্যে বিদ্যমান চাপ বা প্রবল আকর্ষণবোধ হলো সাংস্কৃতিক ব্যবধান। সমাজের বিভিন্ন অংশের মধ্যে একটি পারস্পরিক সম্পর্ক বিদ্যমান থাকে যা সমাজের ভারসাম্য ও স্বাভাবিক গতিকে ত্বরান্বিত করে। অংশগুলো যদি যথারীতি বা আনুপাতিক গতিতে পরিবর্তিত না হয় তাহলে ভারসাম্য রক্ষিত হয় না। ফলে
সৃষ্টি হয় সাংস্কৃতিক ব্যবধান।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, সাংস্কৃতিক বিকাশের ক্ষেত্রে বিভিন্ন অংশ সমগতিবেগসম্পন্ন হয় না। ফলে একাংশ অপরাংশ অপেক্ষা পিছিয়ে পড়ে এবং একটি ব্যবধানের সৃষ্টি করে। এই পিছিয়ে পড়ার বিষয়টিকেই বলে সাংস্কৃতিক ব্যবধান।