সংস্কৃতি ও সভ্যতার পার্থক্য লিখ।

অথবা, সংস্কৃতি ও সভ্যতার মধ্যে কতিপয় পার্থক্য তুলে ধর।
অথবা, সংস্কৃতি ও সভ্যতার মধ্যকার বৈসাদৃশ্যসমূহ সংক্ষেপে তুলে ধর।
অথবা, সভ্যতা ও সংস্কৃতির মধ্যে পার্থক্যসমূহ সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
সংস্কৃতি ও সভ্যতা অনেক সময় একই অর্থজ্ঞাপক মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এ দুটি প্রত্যয়কে অনেকে আলাদা অর্থে ব্যবহার করেন। সভ্যতা বলতে আমরা বুঝি উন্নত ও শোভন জীবনযাপন প্রণালি, আর সংস্কৃতি হলো তার উৎকর্ষ বা গুণ । এদিক থেকে সংস্কৃতি ও সভ্যতার মধ্যে ভাবগত বন্ধন বিদ্যমান।
সংস্কৃতি ও সভ্যতার মধ্যে পার্থক্য : নিম্নে সংস্কৃতি ও সভ্যতার মধ্যে পার্থক্য উপস্থাপন করা হলো :
১.সংস্কৃতি হচ্ছে প্রধানত মানুষের অবস্তুগত সৃষ্টি, আর সভ্যতা হলো বস্তুগত সৃষ্টি।
২. সংস্কৃতি হচ্ছে মানুষের ভিতরের দিক। সভ্যতা হলো মানুষের বাহিরের ব্যবহার।
৩. সংস্কৃতি মনোজগতের বিষয়। সভ্যতা বাহ্যিক জগতের বিষয়।
৪.সংস্কৃতি হচ্ছে খাঁটি হওয়া, বা মার্জিত হওয়া বা রুচিশীল হওয়া এটা একটা মানসিক অবস্থা। আর সভ্যতা হচ্ছে কোনোকিছু থাকা, কোনো পদার্থ বা বস্তু থাকা বা অর্জন করা। এটা একটা বাহ্যিক পরিবেশ বা অবস্থা।
৫. সংস্কৃতিকে পরিমাপ করা যায় না। সভ্যতাকে পরিমাপ করা যায়।
৬. সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ ধর্ম, দর্শন, রাজনৈতিক আদর্শ ইত্যাদি অগ্রদেশের লোক দ্বারা সহজেই গৃহীত হয় না। সভ্যতার ফল রা আশীর্বাদ যে কেউ সহজে গ্রহণ করতে পারে।
৭.সভ্যতার ক্ষেত্রে একজন আরেকজনের কাজ করে দিতে পারে। সংস্কৃতির ক্ষেত্রে সম্ভব নয়।
৮.সভ্যতা সাধারণত অপ্রতিহত এবং দ্রুতগতিতে একটি বিশেষ ধারায় এগিয়ে চলে। অপরপক্ষে, সংস্কৃতির গতি তুলনামূলকভাবে মন্থর।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সভ্যতা আর সংস্কৃতি কথা দুটো একই অর্থে ব্যবহার করা হয় যদিও এ দুটোর অর্থ সম্পূর্ণ পৃথক। সভ্যতা আর সংস্কৃতি অবিচ্ছেদ্য এবং একে অপরের পরিপূরক সন্দেহ নেই।