বস্তুগত ও অবস্তুগত সংস্কৃতির পার্থক্য লিখ ।

অথবা, বস্তুগত ও অবস্তুগত সংস্কৃতির মধ্যকার পার্থক্যসমূহ সংক্ষেপে লিখ।
অথবা, `বস্তুগত ও অবস্তুগত সংস্কৃতি মধ্যকার পার্থক্যসমূহ সংক্ষেপে আলোচনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
মানুষের সব ধরনের বস্তুগত সৃষ্টিকে বস্তুগত সংস্কৃতি এবং অবস্তুগত সৃষ্টিকে অবস্তুগত সংস্কৃতি বলা হয় ।
বস্তুগত ও অবস্তুগত সংস্কৃতির পার্থক্য : নিম্নে বস্তুগত ও অবস্তুগত সংস্কৃতির পার্থক্য তুলে ধরা হলো :
১.সমাজবিজ্ঞানী নিফের মতে অবস্তুগত সংস্কৃতির তুলনায় বস্তুগত সংস্কৃতি দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলে। সংস্কৃতির অসম অগ্রগতির ফলে সমাজের বিভিন্ন অনুষ্ঠান প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হয় ।
২.বস্তুগত সংস্কৃতির চাহিদা ও আবেদন অবস্তুগত সংস্কৃতির চাহিদা আবেদনের চেয়ে ব্যাপক।
৩.বস্তুগত সংস্কৃতির উপাদানের যে কোনো দেশ বা জাতি দ্বারা গৃহীত হতে পারে কিন্তু ভিন্ন দেশের অবস্তুগত সংস্কৃতি অন্য দেশ বা জাতি দ্বারা সহজে গৃহীত হয় না। যেমন- আমরা উন্নত কোনো দেশের কলকারখানা বা
যন্ত্রপাতি সহসা গ্রহণ করলেও ঐসব দেশের রাজনৈতিক আদর্শ, দর্শন, মূল্যবোধ সহসা গ্রহণ করি না।
৪.বস্তুগত সংস্কৃতির অগ্রগতিকে সহসা পরিমাপ করা যায়। পক্ষান্তরে, অবস্তুগত সংস্কৃতির উন্নতি বা মানকে সবক্ষেত্রে পরিমাপ করা যায় না। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, হস্তচালিত তাঁতের চেয়ে শক্তিচালিত তাঁতের
আবেদন বেশি এবং তাদের উৎপাদন ক্ষমতার মধ্যে পার্থক্য সহসা লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু দুই ধরনের সংগীতের মধ্যে কোনটি অধিকতর উন্নতমানের তা নির্ণয়ের সর্বজনস্বীকৃত মাপকাঠি নেই। যেমন- কারো কাছে পল্লিগীতি ভালো লাগে আবার কারো কাছে ভালো লাগে আধুনিক গান ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মানর সৃষ্ট সব কিছুই সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত। এদিক থেকে বস্তুগত ও অবস্তুগত সকল সৃষ্টিকেই সংস্কৃতি বলে। তাই বস্তুগত সৃষ্টিকে বস্তুগত সংস্কৃতি আর অবস্তুগত সৃষ্টিকে অবস্তুগত সংস্কৃতি বলে।