অথবা, সুশীল সমাজ কী? প্রত্যয়টি আলোচনা কর।
অথবা, সুশীল সমাজ বলতে কী বুঝ? প্রত্যয়টি বর্ণনা দাও।
উত্তর৷ ভূমিকা : বর্তমান বিশ্বব্যাপী Civil Society বা সুশীল সমাজ প্রত্যয়টি ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সংরক্ষণ, যথার্থ উন্নয়ন আনয়ন, সামাজিক সচেতনতা ও শিক্ষা বৃদ্ধি তথা সার্বিকভাবে রাষ্ট্র যন্ত্রকে অধিক কার্যকরী ও ফলপ্রসূ করতে সুশীল সমাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রায়ণ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হওয়ার সাথে সাথে এ সমাজের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব দ্রুতভাবে বাড়ছে। রাষ্ট্রকে জনকল্যাণকামী রাষ্ট্রে পরিণত করার ক্ষেত্রে সুশীল সমাজের ভূমিকার কোন বিকল্প নেই।
সুশীল সমাজ : অধিকাংশ চিন্তাবিদদের মতে, “ফ্রান্সের বিখ্যাত দার্শনিক Rousseau এর ‘Social Contract’ গ্রন্থের মাধ্যমে সুশীল সমাজ সম্পর্কিত আলোচনার সূত্রপাত হয়।”
Badiul Alam Majumdar, “The civil society as a distinct social force, composed of conscious and audacious citizen, has historically evolved to prevent….misdeeds by state or state supported groups.” Harun Ur Rashid, “The term ‘Civil Society’ has been loosely applied to moral force of the community…….. The moral force is the bedrock of establishing a peaceful, secure, just and progressive society and the collective force in society or community is often called the ‘Civil Society.”
সর্ব প্রকার সামাজিক সংগঠন সিভিল সোসাইটির একটি উপাদান। সিভিল সোসাইটির বাসিন্দারা হচ্ছে এমনসব ব্যক্তি, যারা জনসেবা হিসেবে এসব অধিকার ভোগ করে, অর্জন করে এবং সংরক্ষণ আর এসব অধিকার আইনানুগভাবে স্বীকৃত। রাজনৈতিক সমাজবিজ্ঞানের পরিভাষায় এসব অধিকারসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গই আধুনিক সমাজে ও রাষ্ট্রে নাগরিক বলে গণ্য। বস্তুত, সিভিল সোসাইটি গণতন্ত্রের অস্তিত্বের অপরিহার্য পূর্বশর্ত হিসেবে কাজ করে। অনেক চিন্তাবিদের মতে সুশীল সমাজের অপরিহার্য তিনটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে,
১. ব্যক্তিস্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা, ২. সুশাসনের জন্য প্রত্যাশা, ৩. গণতান্ত্রিক বহুত্ববাদ ।
উপসংহার : উপর্যুক্ত লোচনা হতে আমরা দেখতে পাই যে, সুশীল সমাজ একটি বা এক ধরনের নৈতিক শক্তি হিসেবে রাষ্ট্র ও জনসমষ্টির মধ্যস্থানে অবস্থান করে সমাজ তথা জনসমষ্টিকে রাষ্ট্রের দুঃশাসন হতে রক্ষা করে। অর্থাৎ সুশীল সমাজ সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও যথার্থ আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে। এক্ষেত্রে তারা তাদের লক্ষ্যার্জনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলকে সহযোগী অথবা প্রতিদ্বন্দ্বী উভয় ভূমিকায় মোকাবিলা হিসেবে গ্রহণ করে। অনেক দেশেই সুশীল সমাজকে জনগণের শক্তি হিসেবে অবিহিত করা হয়।