সুশীল সমাজের বৈশিষ্ট্য কী?

অথবা, সুশীল সমাজের বৈশিষ্ট্যসমূহ সংক্ষেপে লিখ।
অথবা, সুশীল সমাজের প্রধান প্রধান কিছু বৈশিষ্ট্য সংক্ষেপে উল্লেখ কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
রুশো ১৭৬২ সালে তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘Social Contract’ এর মাধ্যমে সুশীল সমাজ সংক্রান্ত আলোচনার সূত্রপাত করেন। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী এ সম্পর্কিত আলোচনা অত্যন্ত জোরালো রূপ ধারণ করেছে। আধুনিক গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় আইন, বিচার ও শাসন বিভাগের পর সুশীল সমাজকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার চতুর্থ উপাদান বা ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তারা রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজকে সাথে নিয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জনগণকে সচেতন করা, সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা পালন করে।
সুশীল সমাজের বৈশিষ্ট্য : সুশীল সমাজের বৈশিষ্ট্য নির্ধারণে সমাজবিজ্ঞানীদের মধ্যে ব্যাপক মতপার্থক্য বিদ্যমান। তবে সার্বিক বিবেচনায় নিম্নোক্ত অপরিহার্য বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করা যায় :
১. সর্বপ্রকার সামাজিক সংগঠন এর মূল উপাদান। এর সদস্যরা এমনসব ব্যক্তি, যারা সমাজসেবা হিসেবে এসব অধিকার ভোগ করে, অর্জন করে এবং সংরক্ষণ করে। এসব অধিকারসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গই আধুনিক সমাজে ও রাষ্ট্রে নাগরিক বলে গণ্য । সিভিল সোসাইটির সদস্যদের সংরক্ষণ আধিকারমূলক প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হয়, শুধু মৌখিকভাবে নয় ।
৫. অধিকার, আইনের শাসন, স্বাধীনতা ও নাগরিকত্ব যথার্থরূপে অর্জিত ও প্রতিষ্ঠিত হলেই কেবল সভ্য সমাজ রাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করার সামর্থ্য প্রদর্শন করতে পারে।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিশেষে বলা যায়, সিভিল সোসাইটি গণতন্ত্রের অস্তিত্বের অপরিহার্য পূর্বশর্ত। কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্র সিভিল সোসাইটিকে সমীহ করে চলে, ভয় পায় এবং তাকে দুর্বল করার সতত অপপ্রয়াস চালায়। অর্থাৎ এ ধরনের রাষ্ট্র যথাসাধ্য সিভিল সোসাইটির বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করে কিংবা এমন শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে যাতে সেটি স্বয়ং ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।