সমবায়ের প্রকারভেদ ও সংক্ষিপ্ত কার্যক্রম লিখ?

উত্তর ৪ ভূমিকা : সমবায় কতিপয় জনগণের সম্মিলিত প্রয়াসেরই এক নাম। সমবায়ের মাধ্যমেই জাতির উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়ে থাকে । আর্থ-সামাজিক কল্যাণ সাধনের নিমিত্তেই সমবায়ের প্রতিটি সদস্য এতে অংশগ্রহণ করে থাকে ।
তাই দিন দিন প্রতিটি দেশেই সমবায়ের গুরুত্ব বেড়েই চলেছে।
→ সমবায়ের প্রকারভেদ : সমবায়কে মূলত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা : ১. প্রাথমিক সমিতি; ২. মাধ্যমিক সমিতি।
১. প্রাথমিক সমিতি ঃ যেসব সমবায় সমিতি প্রত্যক্ষভাবে সদস্যদের সাথে সংশ্লিষ্ট তা প্রাথমিক সমিতি নামে পরিচিত। যেমনঃ ১. প্রাথমিক ঋণদান সমিতি; ২. প্রাথমিক অ-ঋণদান সমিতি ।
২. মাধ্যমিক সমিতি ঃ বাংলাদেশে এ ধরনের তিনটি সমিতি রয়েছে। যথা ১. ইউনিয়ন; ২. কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংক;
৩. জাতীয় সমবায় ব্যাংক।
সমবায়ের সংক্ষিপ্ত কার্যক্রম ঃ বাংলাদেশ সমবায়ের কার্যক্রম ছড়িয়ে দিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখে; বাংলাদেশ পল্লি উন্নয়ন বোর্ড, পল্লি কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন, কুমিল্লা প্রজেক্ট ও পল্লি দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাসমূহ। এ দেশে বিগত বছরগুলোতে সমবায় ব্যাংক ২১ কোটি টাকার ঋণ বিতরণের মাধ্যমে গ্রামীণ
জনগণের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প স্থাপনে সর্বাত্মক সাহায্য ও সহযোগিতা চালিয়েছে। বিগত বছরগুলোতে ২৩,৭২৬ জন লোকের প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফলশ্রুতিতে দেশে বেকারের সংখ্যা বহুলাংশে হ্রাস পেয়েছে। দেশের উন্নয়নে বেশ সহায়ক হয়েছিল। তাছাড়াও ২০০৪ সালের জুন পর্যন্ত দেশের সমবায় সমিতিগুলোর মোট শেয়ার
তহবিলের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬০,৫৩,৬০,০০০ টাকা আর সঞ্চিত আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২৬ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা। সেই সাথে সম্পদের পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ৯৯ কোটি ৮ লক্ষ টাকা। গ্রামের বেকার যুবকদের সংগঠিত করে তাদের মাঝে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার প্রেরণা যুগাতে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে এই সমবায় সমবায়ের মাধ্যমে গ্রামীণ নারীদের ক্ষমতায়নের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। তাছাড়াও এই সমবায়ে ব্যক্তি সঞ্চয়ের সুযোগদান করা। অল্প অল্প সঞ্চয়ের মাধ্যমে গচ্ছিত অর্থ কিছু সময় পরই ফেরতদানের ব্যবস্থা থাকে। অনেক ক্ষেত্রে সমবায়ের মাধ্যমে সুদমুক্তভাবে ঋণদানের ব্যবস্থাও থাকে এতে। সমবায়ের নানাবিধ কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশ উন্নতির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। সুতরাং, মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল অর্জনের সহায়ক শক্তি হিসেবে বাংলাদেশের দারিদ্র্য ও বঞ্চনা মুক্তির বুনিয়াদ হিসেবেও সমবায় কাজ করছে।
উপসংহার ঃ পরিশেষে বলা যায় যে, সমবায় কিছু ব্যক্তির স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে সংগঠিত এক সংঘ। যাতে প্রত্যেক ব্যক্তিই সুন্দর জীবন-যাপনের প্রত্যাশায় এর কিছু বিধি-বিধান যেমন মেনে চলে তেমনি নির্ধারিত হারে চাঁদাও প্রদান করে থাকে । সমবায় সংগঠনই পারে আত্মপ্রত্যয়ী মানুষের জন্ম দিতে। সমবায়ের প্রতিটি ধাপে ব্যক্তি মানুষের কল্যাণ নিহিত থাকে। তাই বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আরো এগিয়ে নিতে কিছু যুগান্তকারী পদক্ষেপে নিতে হবে সমবায়ের ক্ষেত্রে।