রাষ্ট্র ও সমাজের মধ্যে সম্পর্ক লিখ।

অথবা, রাষ্ট্র ও সমাজের মধ্যে সম্পর্ক তুলে ধর।
অথবা, “রাষ্ট্র ও সমাজ একে অপরের উপর নির্ভরশীল” বিশ্লেষণ কর।
অথবা, রাষ্ট্র ও সমাজের মধ্যে সম্পর্ক আলোচনা কর।
উত্তর ভূমিকা :
রাষ্ট্র ও সমাজের মধ্যে বিভিন্ন দিক থেকে পার্থক্য থাকলেও অনেকক্ষেত্রেই উভয়ের মধ্যে যে ও গভীর সম্পর্ক রয়েছে তা অস্বীকার করা যায় না। কারণ রাষ্ট্র ও সমাজ উভয়েরই উদ্দেশ্য হলো সুশৃঙ্খল সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলে ব্যক্তি সর্বাঙ্গীণ উন্নতি বা আত্মবিকারের পথ উন্মুক্ত করা।
রাষ্ট্র ও সমাজের মধ্যে সম্পর্ক : রাষ্ট্র ও সমাজের মধ্যে যেসব সম্পর্ক বিদ্যমান তা হলো :
১. সমাজ ও রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয়েছে মানুষের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষা হতে। আর সমাজের ধারাবাহিকতায় গড়ে উঠেছে রাষ্ট্র।
২.আদর্শগত দিক থেকেও সমাজ ও রাষ্ট্যের মধ্যে সম্পর্ক বিদ্যমান। উভয়ের লক্ষ্য হলো সুশৃঙ্খল সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে ব্যক্তির সর্বাঙ্গীণ উন্নতি সাধন করে ব্যক্তির আত্মপ্রকাশের পথ সুগম করা।
৩.সমাজ ও রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য হলো মানবকল্যাণ সাধন করা।
৪. রাষ্ট্র ও সমাজ এরা উভয় উভয়কে সহযোগিতা করে।
৫. দীর্ঘকাল থেকে প্রচলিত সামাজিক রীতিনীতি ও প্রথার ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় আইন প্রণীত হয়।
৬. রাষ্ট্রীয় আইন যদি সামাজিক স্বার্থের বিরোধী হয় তাহলে সমাজ রাষ্ট্রকে চাপ দিয়ে সেই আইন পরিবর্তনে বাধ্য করে।
রাষ্ট্র ও সমাজ একে অপরের পরিপূরক এক অর্থে রাষ্ট্রের সহযোগিতা ছাড়া সমাজব্যবস্থা অচল। আবার সমাজে কেউ স্বতন্ত্রভাবে চলতে পারে না।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে বুঝা যায় যে, সমাজের অন্তর্ভুক্ত সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয়, প্রভৃতি বিষয়ক সংগঠনের অস্তিত্ব ও কার্যকলাপ অনেকাংশ রাষ্ট্রের ইচ্ছা ও নির্দেশনার উপর নির্ভরশীল। সমাজ জীবনে মানুষের প্রয়োজনীয় কার্যাবলি সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকার রাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে রীতিনীতির বিরোধী হতে পারে না। আবার রাষ্ট্রকে সমাজ জীবনের মূল নীতিগুলোকে উপেক্ষা করলে রাষ্ট্রের অস্তিত্ব রক্ষায় বিঘ্নের সৃষ্টি হতে পারে।