বিষয়বস্তু বিশেষণ পদ্ধতির সুবিধা ও অসবিধাসমূহ কী কী?

অথবা, বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ পদ্ধতির সবল ও দুর্বল দিকগুলো উল্লেখ কর।
অথবা, বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ পদ্ধতির ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিকসমূহ লেখ।
অথবা, বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ পদ্ধতির ভালোদিক ও সীমাবদ্ধতা তুলে ধর।
উত্তর৷ ভূমিকা : বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ পদ্ধতি হলো উপাত্ত সংগ্রহ ও উপাত্ত বিশ্লেষণ করার পদ্ধতি। এক্ষেত্রে গবেষকগণ কর্তৃক সংগৃহীত দলিলপত্র, নথি ও অন্যান্য বিষয়ের গুণবাচক ও সংখ্যাতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করা হয়ে থাকে। এ পদ্ধতিতে গবেষণার আওতাভুক্ত ব্যক্তিবর্গের নানা প্রকার উক্তি, ব্যবহৃত শব্দ, তাদের মনোভাব, দৃষ্টিভঙ্গি ইত্যাদি সম্পর্কিত বিষয় বিচারবিশ্লেষণ করা হয়।
বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ পদ্ধতির সুবিধা : বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ পদ্ধতির সুবিধাগুলো নিম্নে উপস্থাপন করা হলো :
১. সামাজিক গবেষণায় অন্যান্য পদ্ধতিতে যে তথ্যটি পাওয়া সম্ভব এ পদ্ধতি প্রয়োগেও সেটা পাওয়া সম্ভব।
২. গবেষণার প্রয়োজনীয় তথ্য ও উপাত্ত সহজে পাওয়া যায়।
৩. এ পদ্ধতিতে যাদের উপর গবেষণা করা হয়, তাদের উপর কোন প্রভাব পড়ে না।
৪. এ পদ্ধতি প্রাপ্ত তথ্য ও অন্যান্য বিষয়ে ভুল-ত্রুটি কিংবা সমস্যাদি অতিসহজেই সমাধান করা যায়।
৫. এ পদ্ধতিতে গবেষক নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী তথ্যসংগ্রহের সুযোগ পান।
৬. বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মীর তেমন প্রয়োজন পড়ে না।
৭. এ পদ্ধতিতে সময় ও অর্থের সাশ্রয় হয়।
৮. এ পদ্ধতিতে তথ্য বিশ্লেষণ করে বিকৃত করার সুযোগও সীমিত।
৯, এই পদ্ধতিতে পক্ষপাতিত্ব করার সুযোগ সীমিত।
বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে গবেষণার আওডাভুক্ত ব্যক্তিবর্গের নানা প্রকার উক্তি, ব্যবহৃত শব্দ, তাদের মনোভাব,দৃষ্টিভঙ্গি ইত্যাদি সম্পর্কিত বিষয় বিচারবিশ্লেষণ করা হয়।
বিষয়বস্তু বিশেষণ পদ্ধতির অসুবিধা/ সমস্যাসমূহ : বিষয় বিশ্লেষণ পদ্ধতির যেমন কিছু সুবিধা আছে তেমনি কিছু অসুবিধাও রয়েছে। নিম্নে অসুবিধাগুলো উল্লেখ করা হলো :
১. বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ পদ্ধতিটি বেশি গুণাত্মক হওয়ার জন্য সাধারণীকরণ ও নির্ভরযোগ্যতা অর্জন করা কঠিন হয়।
২. এই পদ্ধতির একটি অন্যতম সমস্যা হলো প্রচুর নথিপত্র, পুস্তকাদি, দলিলপত্র বা সংগ্রহ করে সেগুলো সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করতে হয়। অনেক সময় এসব নথিপত্র খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।
৩. এই পদ্ধতিতে বিশ্লেষণের উপর অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয় ফলে সমাযোজন স্কুল বিষয়বস্তু গুরুত্ব হারায়।
৪. এখানে নমুনায়নের আকার, সমগ্রক, সময়কাল প্রভৃতি নির্ধারণ কঠিন।
৫. সংখ্যার উপর গুরুত্ব দেওয়ার কারণে এর বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করা যায় না।
৬. প্রাপ্ত বিষয়বস্তু ও নথিপত্র গবেষণার বিষয়বস্তুর সাথে যথেষ্ট প্রতিনিধিত্বশীল নাও হতে পারে।
৭. গবেষণার জন্য সংগৃহীত তথ্যসমূহ পক্ষপাতদুষ্ট হতে পারে।
৮. অনেক সময় একই শব্দ সাংকেতিকভাবে একাধিক অর্থে ব্যবহৃত হতে পারে। সেটা উদ্ধার গবেষণার পক্ষে সম্ভব নাও হতে পারে।
৯. কোন বাধ্যবাধকতা না থাকায় দক্ষ ও যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের কাজে লাগানো হয় না। ফলে সেখানে সঠিক তথ্য পাওয়া সম্ভব হয় না।
উপসংহার : বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে সংগৃহীত দলিল, নথি, প্রতীক ইত্যাদিতে অনেক ক্ষেত্রে ভুল ব্যাখ্যা করা থাকে।এখানে সঠিকতা যাচাই করা কঠিন ব্যাপার।