বিষয়বস্তু বিশেষণ পদ্ধতি বলতে কী বুঝ? বিষয়বস্তু বিশেষণের উদ্দেশ্যসমূহ লিখ।

অথবা, বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ পদ্ধতি কী? এর উদ্দেশ্যসমূহ কী কী?
অথবা, বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ পদ্ধতি কাকে বলে? এর লক্ষ্য উদ্দেশ্য আলোচনা কর।
অথবা, বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ পদ্ধতির সংজ্ঞা দাও। এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য লিখ।
উত্তর৷ ভূমিকা : বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ পদ্ধতি হলো উপাত্ত সংগ্রহ ও উপাত্ত বিশ্লেষণ করার পদ্ধতি।এক্ষেত্রে গবেষকগণ কর্তৃক সংগৃহীত দলিলপত্র, নথি ও অন্যান্য বিষয়ের গুণবাচক ও সংখ্যাতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করা হয়ে থাকে। এ পদ্ধতিতে গবেষণার আওতাভুক্ত ব্যক্তিবর্গের নানা প্রকার উক্তি, ব্যবহৃত শব্দ, তাদের মনোভাব, দৃষ্টিভঙ্গি ইত্যাদি সম্পর্কিত বিষয় বিচারবিশ্লেষণ করা হয়।
বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ পদ্ধতি (Method of Content Analysis) : Fred N. Kerlinger এর মতে, “The content analysis is a method for study and analysing communications is a systematic. Objective and quantitative manner to measure variables.” অর্থাৎ, বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ গণযোগাযোগ ও এর চলক পরিমাপ করার জন্য নিয়মতান্ত্রিক ও সংখ্যাতাত্ত্বিক অনুসন্ধান ও বিশ্লেষণের একটি পদ্ধতি বিশেষ।
Phillips, “Content analysis is the research producer for relating symbolic data to their context.”
Berelson, “Content analysis is a research technique for the objective systematic and quantitative description of the manifest content of communication.” অর্থাৎ, বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ হলো গণযোগাযোগের প্রকাশ্য বিষয়াবলির বস্তুনিষ্ঠ, নিয়মবদ্ধ এবং গুণাত্মক বর্ণনা প্রদানের গবেষণা পদ্ধতি বিশেষ।উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ এমন একটি পদ্ধতি যেক্ষেত্রে গণযোগাযোগ ও চলকের পরিমাণের জন্য বস্তুনিষ্ঠ, নিয়মতান্ত্রিক গুণাত্মক ও সংখ্যাত্মিক উপায়ে অনুসন্ধান কার্য পরিচালনা করা হয়।
বিষয়বস্তু বিশ্লেষণের উদ্দেশ্য : সামাজিক গবেষণার একটি পদ্ধতি হিসেবে বিষয়বস্তু বিশ্লেষণের কিছু উদ্দেশ্য রয়েছে।Berelson, Holsti ও Sellti প্রমুখ সমাজবিজ্ঞানী তাদের নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করেছেন। তাদের মতামতের আলোকে নিম্নে এসব উদ্দেশ্যগুলো উল্লেখ করা হলো :
১. ব্যক্তি ও দলসমূহের মানসিক অবস্থা নির্ণয় করা।
২. যোগাযোগের দলিলপত্র বা নথিপত্র সঠিকভাবে পরিমাপ করা।
৩. জনগণের মনোভাব, রুচিবোধ, নৈতিকতা ও মূল্যবোধকে প্রতিফলিত করা।
৪. কৌশলগতভাবে সামাজিক গবেষণা পরিচালনা।
৫. প্রচারণার কৌশলসমূহ উদ্ভাবন করা।
৬. যোগাযোগের মান নির্ণয় ও প্রয়োগ করা।
৭. সংযোজনকারীর মনোভাব এবং আচরণগত বিষয়কে বর্ণনা করা।
৮. ধারণা, তত্ত্ব ও বাস্তব ঘটনার কার্যকারণ খুঁজে বের করা।
৯. কোন মতামত, বিশ্বাস ও আদর্শের বিপরীত বিষয়বস্তু নিরীক্ষণ করা।
১০. উপস্থাপিত বক্তব্যের সাথে উৎসের পরিচিত বৈশিষ্ট্যকে সম্পর্কিত করা।
উপসংহার : বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে গবেষণার আওতাভুক্ত ব্যক্তিবর্গের নানা প্রকার উক্তি, ব্যবহৃত শব্দ,তাদের মনোভাব, দৃষ্টিভঙ্গি ইত্যাদি সম্পর্কিত বিষয় বিচারবিশ্লেষণ করা হয়।