বাংলাদেশের দল ব্যবস্থা সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর ।

অথবা, বাংলাদেশের দল ব্যবস্থা সম্পর্কে সংক্ষেপে বর্ণনা কর।
অথবা, বাংলাদেশের দল ব্যবস্থার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।
উত্তর৷ ভূমিকা :
বাংলাদেশে বর্তমান সংসদীয় গণতন্ত্র বিদ্যমান। এ প্রক্রিয়ায় দেশের প্রতিটি জনগণই দল গঠনের অধিকার সংরক্ষণ করে। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার বহুদলীয় ব্যবস্থা বিদ্যমান। সংবিধান অনুযায়ী এটি একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র।
বাংলাদেশের দল ব্যবস্থা : আধুনিক কালে প্রায় প্রত্যেক রাষ্ট্রে রাজনৈতিক দল রয়েছে। তবে সকল রাষ্ট্রের দল ব্যবস্থা একরূপ নয়। দলের সংখ্যার ভিত্তিতে দল ব্যবস্থাকে সাধারণত তিনটি শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়। যথা : একদল ব্যবস্থা, দ্বিদল ব্যবস্থা ও বহুদল ব্যবস্থা। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় বহুদলীয় ব্যবস্থা বিদ্যমান। সংবিধান অনুসারে বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। এখানে মত প্রকাশ ও সংগঠনের স্বাধীনতা স্বীকৃত। অতএব, বাংলাদেশে একাধিক দল থাকাই স্বাভাবিক। ১৯৭৬ সালের জুলাই মাসে ‘রাজনৈতিক দলবিধি’ জারি করা হয়। এতে বিধান করা হয় যে, কোনো রাজনৈতিক দল গঠন বা পরিচালনা করতে হলে এর গঠনতন্ত্র ও কর্মসূচি সরকারের নিকট পেশ করতে হবে এবং কেবল সরকার অনুমতি দিলে এটি কাজ করতে পারবে। এ দল বিধির অধীনে প্রায় ৬০টি ছোট বড় সংগঠন রাজনৈতিক দল হিসেবে সরকারের অনুমতির জন্য আবেদন করে এবং ১৯৭৬ সালের শেষ নাগাদ ২১টি রাজনৈতিক দলকে অনুমতি দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, ১৯৭৬ সালের ৪ মে তারিখে এক সামরিক আদেশবলে সাম্প্রদায়িক ও ধর্মভিত্তিক দল গঠনের উপর বাধানিষেধ প্রত্যাহার করা হয়। ফলে মুসলিম লীগ, জামাতে ইসলামী, নেজামে ইসলাম প্রভৃতি সাম্প্রদায়িক দলগুলো দলবিধির অধীনে পুরাতন বা নতুন নামে পুনরুজ্জীবিত হয়। রাজনৈতিক দলগুলোর চাপের মুখে জিয়া সরকার ১৯৭৮ সালের নভেম্বর মাসে রাজনৈতিক দলবিধি প্রত্যাহার করেন। ফলে দল গঠনের ও পরিচালনার অবাধ অধিকার স্বীকৃত হয় এবং দেশে দলসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে। ১৯৯১ সালের প্রারম্ভে বাংলাদেশে ১০০টিরও বেশি দলের নাম শোনা যায় ।
উপসংহার : আলোচনার পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী এটি একটি বহুদলীয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। বর্তমান সময়ে এদেশে কতকগুলো রাজনৈতিক দল বিদ্যমান রয়েছে, যেগুলো প্রত্যেকেই গণতন্ত্রে বিশ্বাসী।