প্রশ্নমালার সুবিধাসমূহ সংক্ষেপে বর্ণনা কর ।

অথবা, প্রশ্নমালা পদ্ধতির কী কী সুবিধা বিদ্যমান তা লেখ।
অথবা, প্রশ্নমালা পদ্ধতির সুবিধাসমূহ আলোচনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
সামাজিক গবেষণায় উপাত্ত সংগ্রহের বিভিন্ন কৌশলের মধ্যে প্রশ্নমালার নিজস্ব কিছু সুবিধা বিদ্যমান থাকায় বর্তমানে এটি একটি ব্যাপক প্রচলিত ও জনপ্রিয় কৌশলে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোতে প্রশ্নমালার ব্যবহার খুবই বেশি। দিকদর্শন’ প্রকাশনী লিমিটেড
প্রশ্নমালার সুবিধাসমূহ : নিম্নে প্রশ্নমালার প্রধান সুবিধাগুলো আলোচনা করা হলো :
১. সাশ্রয়ী কৌশল : প্রশ্নমালা একটি সাশ্রয়ী কৌশল হিসেবে স্বীকৃত। কেননা প্রশ্নমালার সাহায্যে উপাত্ত সংগ্রহের ক্ষেত্রে উপাত্ত সংগ্রহকারীকে সময়, অর্থ ও শ্রম ব্যয় করে উত্তরদাতার নিকট যেতে হয় না। কেবল ডাকের খরচ বহন করতে হয় । অধিকন্তু উপাত্ত সংগ্রহকারীর প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত খরচও প্রয়োজন হয় না। ফলে অন্যান্য কৌশলের তুলনায় প্রশ্নমালা সময়, অর্থ ও পরিশ্রম সাশ্রয় করে থাকে।
২. বিস্তৃত এলাকা অধ্যয়ন : প্রশ্নমালার সাহায্যে খুব সহজেই ব্যাপক ও বিস্তৃত গবেষণা এলাকা জরিপ চালিয়ে জনসাধারণ বা নমুনার নিকট থেকে প্রয়োজনীয় উপাত্ত সংগ্রহ করা যায় ।
৩. পক্ষপাতদুষ্টতা মুক্ত : প্রশ্নমালার সাহায্যে বিশেষকরে ডাক প্রশ্নমালার সাহায্যে উপাত্ত সংগ্রহের সময় উপাত্ত সংগ্রহকারী এবং উত্তরদাতার মধ্যে প্রত্যক্ষ কোন যোগাযোগ হয় না বলে উপাত্ত সংগ্রহকারী উত্তরদাতাকে প্রভাবিত করতে পারেন না। ফলে উত্তরদাতা সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে নিজের ইচ্ছামতো উত্তর প্রদান করে থাকেন। এমতাবস্থায় প্রশ্নমালার সাহায্যে সংগৃহীত উপাত্তসমূহ পক্ষপাতদুষ্টতা মুক্ত থাকে ।
৪. পুনরাবৃত্তির সুযোগ : প্রশ্নমালার সাহায্যে সংগৃহীত তথ্যের বা উত্তরের পুনরাবৃত্তি করার সুযোগ বিদ্যমান । কোন কারণে উত্তরদাতা প্রদত্ত কোন উত্তর পুনরাবৃত্তি করার প্রয়োজন মনে করলে গবেষক তা পুনরায় উত্তরদাতার নিকট পাঠিয়ে দেন । উত্তরদাতা সেটি যথারীতি সংশোধন করে গবেষকের নিকট ফেরত পাঠিয়ে দেন।
৫. গোপনীয়তা : প্রশ্নমালার সাহায্যে উপাত্ত সংগ্রহের ক্ষেত্রে উত্তরদাতার পরিচয়ের গোপনীয়তা নিশ্চিত থাকে । এর ফলে উত্তরদাতা স্বাধীনভাবে যে তথ্য সরবরাহ করে থাকেন তা অধিক সঠিক ও নির্ভরযোগ্য হয় ।
৬. সমরূপতা : প্রশ্নমালার মাধ্যমে সকল উত্তরদাতার উত্তরে সমরূপতা আনা যায়। কারণ প্রশ্নমালায় একদিকে যেমন থাকে কাঠামোগত এবং আবদ্ধ প্রশ্ন (Closed ended Question) তেমনি অন্যদিকে এতে থাকে একই শব্দচয়ন, প্রশ্নের ধারাবাহিকতা এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রভৃতি। ফলশ্রুতিতে সকল উত্তরদাতার প্রদত্ত উত্তরে সমরূপতা পরিলক্ষিত হয়।
৭. প্রশ্নের পুনর্বিন্যাস : প্রশ্নমালা চূড়ান্তকরণের পূর্বে সেটি প্রাক যাচাই (Pre-test) করে প্রশ্ন ও উত্তরের ভুলভ্রান্তি সংশোধন করে প্রশ্নের পুনর্বিন্যাস করা যায় ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, প্রশ্নমালা পদ্ধতির বহুবিধ সুবিধা বিদ্যমান । বিভিন্ন সুবিধার কারণে বর্তমানে প্রশ্নমালা বহুল প্রচলিত ও জনপ্রিয় পদ্ধতি হিসেবে বিদ্যমান ।