অথবা, প্রবেশন ও প্যারোল এর মধ্যে পার্থক্য সংক্ষেপে আলোচনা কর।
অথবা, প্রবেশন ও প্যারোল এর মধ্যে বৈসাদৃশ্যসমূহ নিরূপণ কর।
অথবা, প্রবেশন ও প্যারোল এর মধ্যে পার্থক্যসমূহ সংক্ষেপে উল্লেখ কর।
উত্তর৷ ভূমিকা : প্রবেশন ও প্যারোলের মধ্যে কিছুটা মৌলিক পার্থক্য থাকলেও উভয়ের মধ্যে সাদৃশ্যও বিদ্যমান । প্রবেশন ও প্যারোল উভয়ই সমাজবিজ্ঞানীর বা সমাজকর্মীর তত্ত্বাবধানে থাকতে হয়। উভয়ক্ষেত্রে সৎ আচরণের কতিপয় শর্ত মেনে চলতে হয়।
প্রবেশন ও প্যারোলের মধ্যে পার্থক্য : প্রবেশন ও প্যারোলের মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরার আগে আমাদের প্রবেশন ও প্যারোল সম্পর্কে ধারণা নেয়া উচিত। যথা :
প্রবেশন : প্রবেশন একটি প্রাতিষ্ঠানিক পদ্ধতি যার উদ্দেশ্য হচ্ছে ব্যক্তির পুনঃসামাজিকীকরণ। যে প্রক্রিয়ায় ব্যক্তির শাস্তি স্থগিত রেখে শর্তসাপেক্ষে প্রবেশন কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে অপরাধীকে সমাজে খাপখাইয়ে নেয়ার এবং চারিত্রিক পরিবর্তন আনার সুযোগ দেয়া হয়।
প্যারোল : প্যারোল হলো সংশোধন কর্মসূচির সর্বশেষ ধাপ। সাজা ভোগরত কোনো অপরাধীকে সংশোধনগার থেকে বিশেষ শর্তসাপেক্ষে মুক্তিদানের নাম প্যারোল। প্রবেশন ও প্যারোলের মধ্যে মৌলিক পার্থক্যগুলো নিম্নরূপ :
১. প্রবেশন দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তির চূড়ান্ত বিচার স্থগিত রেখে শর্তসাপেক্ষে সংশোধনের জন্য মুক্তি দেয়া হয়। অন্যদিকে, প্যারোল অপরাধীর চূড়ান্ত বিচার সম্পন্ন এবং কিছুদিন শাস্তি ভোগের পর শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেয়া
২. প্রবেশন অনুমোদিত হয় আদালত কর্তৃক। অন্যদিকে, প্যারোল অনুমোদিত হয় জেল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে।
৩. প্ৰবেশন প্রধানত কিশোর অপরাধী, নতুন ও কাঁচা অপরাধীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অন্যদিকে, প্যারোল বস্তুত বয়স্ক ও দাগি অপরাধীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
৪. প্রবেশন অপরাধীদের সামাজিক পঙ্গুত্ব ও কলঙ্কের হাত থেকে রক্ষা করে। অন্যদিকে, প্যারোল শাস্তি ভোগ করতে হয় বলে সামাজিক কলঙ্ক ও পঙ্গুত্ব মেনে নিতে হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, প্রবেশন ও প্যারোল কর্মসূচির সম্প্রসারণ ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি এবং সমাজসেবা, বিচার বিভাগ ও কারাগারসমূহের মধ্যে অধিকতর বাস্তব সহযোগিতা স্থাপন ও সমন্বয়সাধন করে বাংলাদেশে অপরাধী ও কিশোর অপরাধীদের সত্যিকার সংশোধন ও প্রকৃত পুনর্বাসন করা সম্ভব।