General Knowledge

রাষ্ট্র ও সমাজের মধ্যে পার্থক্য লিখ।

অথবা, রাষ্ট্র ও সামজের মধ্যে পার্থক্য কী? আলোচনা কর।
অথবা, রাষ্ট্র ও সমাজের মধ্যে পার্থক্য বর্ণনা কর।
অথবা, রাষ্ট্র ও সমাজের মধ্যে পার্থক্য উল্লেখ কর।
অথবা, রাষ্ট্র ও সমাজের মধ্যে পার্থক্য দেখাও।
উত্তর৷ ভূমিকা :
প্রাচীন গ্রিক দার্শনিকগণ রাষ্ট্র ও সমাজের মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য করেননি। তারা অনেক সময় রাষ্ট্রকে সমাজ এবং সমাজকে রাষ্ট্র বলে অভিহিত করেছেন। কিন্তু বর্তমানে রাষ্ট্র ও সমাজকে এক মনে করা হয় না।
রাষ্ট্র ও সমাজের মধ্যে পার্থক্য : নিম্নে রাষ্ট্র ও সমাজের মধ্যকার পার্থক্য আলোচনা করা হলো :
১. কোনো বিশেষ বা সাধারণ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য সমাজ গঠিত হয়। পক্ষান্তরে, রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য বহুবিধ এবং রাষ্ট্র রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত প্রতিষ্ঠান।
২. সমাজের নির্দিষ্ট কোনো সীমারেখা নেই, রাষ্ট্রের নির্দিষ্ট সীমারেখা রয়েছে।
৩.. রাষ্ট্র হলো সংগঠিত একটি প্রতিষ্ঠান, কিন্তু সমাজ অনেক ক্ষেত্রেই অসংহত।
৪. রাষ্ট্র সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী কিন্তু সমাজের সার্বভৌম ক্ষমতা নেই।
৫. রাষ্ট্রের সদস্যপদ বাধ্যতামূলক, কিন্তু সমাজের সদস্যপদ অভ্যাসগত বা ঐচ্ছিক।
৬. রাষ্ট্র একটি চিরন্তন স্থায়ী প্রতিষ্ঠান, কিন্তু কোনো কোনো সমাজ হলো অস্থায়ী প্রতিষ্ঠান ।
৭. রাষ্ট্রের বন্ধন তৈরি হয় আইনশৃঙ্খলার মাধ্যমে। সমাজের বন্ধন তৈরি হয় স্নেহ-ভালোবাসা প্রীতি ও বন্ধুত্বের মাধ্যমে।
৮. পদ্ধতিগত রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য সাধনের পন্থা হচ্ছে বল প্রয়োগ। কিন্তু সমাজ স্বেচ্ছাসেবকমূলক ব্যবস্থা বা প্রবর্তনমূলক পদ্ধতি আলোচনা করে তার উদ্দেশ্য সাধন করে।
৯. রাষ্ট্র আইন প্রণয়ন করতে পারে এবং আইনের মাধ্যমে আইন ভঙ্গ করলে তাকে শাস্তি প্রদান করতে পারে। কিন্তু সমাজ আইন প্রণয়ন করতে পারে না।
উপসংহার : পরিশেষ বলা যায় যে, রাষ্ট্র ও সমাজের মধ্যে উপর্যুক্ত দৃষ্টিকোণ থেকে পার্থক্য থাকলেও তারা পরস্পর ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত। সমাজের উপর যেমন রাষ্ট্রের প্রভাব থাকে তেমনি সমাজও রাষ্ট্রকে প্রভাবিত করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!