Download Our App

সমাযোজনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য বর্ণনা কর।

অথবা, যোগযোগের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা কর।
অথবা, যোগাযোগ কেন গুরুত্বপূর্ণ?
অথবা, যোগাযোগের প্রয়োজনীয়তা কী?
অথবা, সমাযোজনের তাৎপর্য লেখ।
অথবা, সমাযোজন কেন প্রয়োজন?
উত্তর৷ ভূমিকা : প্রশাসনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, সংগঠনের বিভিন্ন বিভাগ,উপবিভাগ প্রভৃতির মধ্যেসংযোজন একান্ত প্রয়োজন।
সমাযোজনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য : নিম্নে যোগাযোগের গুরুত্ব ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করা হলো :
১. পরামর্শ অনুসন্ধান : সমাযোজন একটি দ্বিমুখী প্রক্রিয়া। নির্বাহীকে প্রশাসন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের প্রতিক্রিয়া জানার প্রয়োজন হয়।বিভিন্ন পর্যায় থেকে তথ্যসংগ্রহ করে উচ্চস্তরে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, যা একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যমেই সম্ভব।সুষ্ঠু সমাযোজন চালু না থাকলে এটা সম্ভব হয় না।
২. তথ্যের প্রচারণা : প্রশাসনের কার্যক্রমের সাফল্য অর্জনে প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্টদের মধ্যে তথ্যের আদান-প্রদান করা আবশ্যক। এর ফলে প্রত্যেকেই নীতি পরিকল্পনা, কর্মসূচি এবং কি ধরনের কাজের উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে সে
সম্পর্কে জানতে পারে।
৩. কর্মসূচির সাফল্য অর্জন : একটি প্রতিষ্ঠান অন্য প্রতিষ্ঠানের সাফল্য, ব্যর্থতা প্রভৃতি অনুভব করে এগিয়ে যায়।আর এ সম্পর্কে ধারণা নেয়ার জন্য সঠিক ও সুষ্ঠু সমাযোজন কার্যক্রম চালু রাখা দরকার। এখানে একটি সংগঠনের ব্যর্থতা, সাফল্য প্রভৃতির কারণ ও বিষয় সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দেয়।
৪. সমঝোতা ও সহযোগিতা : সমাজকল্যাণমূলক সংস্থা বিভিন্ন লক্ষ্য, উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করে। তাদের নিজস্ব পরিকল্পনা আছে, যার উপর ভিত্তি করে সংগঠন এগিয়ে যায়। আর এজন্য কর্মকর্তা কর্মচারীদের বাস্তব শিক্ষা ও জ্ঞান থাকা জরুরি, যা শুধুমাত্র সমাযোজন প্রক্রিয়ার দ্বারাই সম্ভব।
৫. সিদ্ধান্ত গ্রহণ : একটি প্রশাসনিক সংগঠনে সিদ্ধান্ত গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কারণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ ছাড়া কোনো সংগঠন তার কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে না। কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সিদ্ধান্ত অপেক্ষা অধীনস্তদের ক্ষমতাকে
প্রাধান্য দিয়ে সিদ্ধান্ত নিলে তা অপেক্ষাকৃত যৌক্তিক হবে। এক্ষেত্রে যোগাযোগের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।
৬. সমন্বয়সাধন : সমন্বয়সাধন ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠান টিকে থাকতে পারবে না। এ সমন্বয় উচ্চস্তর, নিম্নস্তর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে হওয়া বাঞ্ছনীয়। এখানে সমন্বয়সাধন না হলে Intend conflict দেখা দিবে, যা সংগঠনের
জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
৭. পরিকল্পনা প্রণয়ন : পরিকল্পনা হলো ভবিষ্যতের জন্য সুনিশ্চিত নকশা। এটার উপর সংগঠনের সার্থকতা নির্ভর করে। এক্ষেত্রে অতীত অভিজ্ঞতা ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা রাখে, যা একমাত্র সমাযোজন ছাড়া সম্ভব
নয়। পরিকল্পনাকে বাস্তবে রূপায়নের জন্য সকলের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।
৮. কর্মসূচি বাস্তবায়ন : কর্মসূচি বাস্তবায়ন প্রত্যেক সংগঠনের একটি মূল বিষয়। কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য নিয়োজিত থাকে ব্যক্তিবর্গ, যাদের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনের জন্য সমাযোজন প্রক্রিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার শেষে বলা যায় যে, একটি সংগঠনের জন্য সংযোজন বা সমাযোজন প্রক্রিয়া অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা রাখে। সংগঠনের ক্ষমতা, গতিশীলতা, কার্যকারিতা প্রভৃতি নির্ভর করে সুষ্ঠু ও যথার্থ যোগাযোগের
উপর। আর আধুনিক সংগঠন ব্যবস্থাপনায় এ যোগাযোগের গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি।