অথবা, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে গঠিত গণবাহিনীর কার্যক্রম উল্লেখ কর।
উত্তর৷ ভূমিকা : বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গণবাহিনীর ভূমিকা ছিল অত্যন্ত বীরত্বপূর্ণ। অসীম সাহসিকতা প্রদর্শন করে গণবাহিনী শক্তিশালী পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মনোবল ভেঙে দেয়।
গণবাহিনী : মুক্তিযুদ্ধে অনিয়মিত বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে গঠিত হয় গণবাহিনী বা এফ এফ (ফ্রিডম ফাইটার)। যুব, ছাত্র, শ্রমিক, কৃষক ও সকল পর্যায়ের মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয়ে বিভিন্ন সেক্টরের অধীনে গণবাহিনী গঠিত হয়। গণবাহিনীকে দু’সপ্তাহের প্রশিক্ষণের পর একজন কমান্ডারের অধীনে তাদের নিজ নিজ এলাকায় গেরিলা পদ্ধতিতে যুদ্ধ করার জন্য প্রেরণ করা হতো। গণবাহিনীর সদস্যদের কোনো বেতন ভাতা প্রদান করা হতো না। মূলত স্থানীয় ভিত্তিতে ও রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিত্তিতে গণবাহিনী গড়ে উঠে। গণবাহিনীর সদস্য সংখ্যা ছিল প্রায় ১ লক্ষ ১২ হাজার। গণবাহিনীর মূল দায়িত্ব ছিল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে গেরিলা কায়দায় আক্রমণ চালানো এবং যথাসম্ভব পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ক্ষতিসাধন করা। আগস্টের পরপরই বিপুলসংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা গেরিলা পদ্ধতিতে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানি সামরিক ঘাঁটির উপর হামলা পরিচালনা করে। এছাড়া এ দেশীয় দোসর রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস্ প্রভৃতি মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী সংগঠনের উপর হামলা চালায়। গণবাহিনী সদস্যরা রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট ইত্যাদি
ধ্বংস করে যোগাযোগ ব্যবস্থা নষ্ট করে দেয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মুক্তিযুদ্ধে গঠিত গণবাহিনী দুঃসাহসিক ও বীরত্ব প্রদর্শন করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে নাজেহাল করে তোলে। মুক্তিযুদ্ধে গণবাহিনীর ভূমিকা বাঙালি জাতি শ্রদ্ধাচিত্তে স্মরণ করে থাকে।.