অথবা, এনজিও’র সংজ্ঞা দাও। এনজিও’র প্রকারভেদ আলোচনা কর।
অথবা, এনজিও বলতে কী বুঝ? এনজিও কত প্রকার ও কী কী -আলোচনা কর।
অথবা, এনজিও কাকে বলে? বাংলাদেশের উন্নয়নে অংশীদার এনজিওসমূহের ধরনসমূহ আলোচনা কর।
উত্তর।৷ ভূমিকা : বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৫৭,০০০ এনজিও রয়েছে। তবে বিবিএস পরিচালিত Voluntarism in Bangladesh 2010 নামক এক সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশে এনজিও’র সংখ্যা ৮২,০০০।সমীক্ষা অনুযায়ী এনজিও এবং বেসরকারি অলাভজনক সংস্থাকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সমীক্ষার পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে অলাভজনক বেসরকারি সংস্থার সংখ্যা ৯,১৫,০০০ (নয় লক্ষ পনেরো হাজার)। এসব এনজিও বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মধ্যে স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা রয়েছে। এসব সংস্থাগুলোর মধ্যে শিক্ষার্থী ও অন্যান্য অবস্থা বিবেচনা করে শিক্ষার্থীদের মাঠকর্ম অনুশীলনের জন্য সংস্থাপন করা হয়।
এনজিও’র ধারণা : ১৯৪৫ সালে জাতিসংঘ সর্বপ্রথম এনজিও (NGO) শব্দটি ব্যবহার করে। NGO এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Non-Government Organization. যার বাংলা অর্থ হচ্ছে বেসরকারি সংস্থা। আক্ষরিক বা শাব্দিক অর্থে যে কোন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে NGO বলা যায়। কিন্তু তাৎপর্যগত অর্থে বেসরকারি সংস্থা বা সংগঠন হলেও সরকারি নয় এমন সব ধরনের প্রতিষ্ঠানকে এনজিও বলা যায় না। যেমন- ক্লাব, সমিতি, ট্রেড ইউনিয়ন ইত্যাদিকে এনজিও বলা যাবে না।এগুলো বেসরকারি হলেও এনজিও নয়; বরং এগুলোকে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বলা যেতে পারে। এনজিও বর্তমানে আক্ষরিক অর্থ (বেসরকারি সংস্থা) পেরিয়ে একটি বিশেষ অর্থ লাভ করেছে, যা দিয়ে শুধু এনজিওকেই বুঝানো হয়।
প্রামাণ্য সংজ্ঞা : রহমান মোহাম্মদ মিজানুর (২০০৬ : ৫) এর মতে, “এনজিও হচ্ছে বেসরকারি পর্যায়ের সে সকল সংগঠন যারা সরকারি অনুমোদন নিয়ে নির্দিষ্ট কোন জনগোষ্ঠীর জন্য স্বেচ্ছাপ্রণোদিতভাবে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়ে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনে সচেষ্ট হয়।”
Mokbul Morshed Ahmad (2006 : 7) তাঁর গবেষণাধর্মী গ্রন্থে বলেছেন, “Any group or institution that is independent from government and that is humanitarian or co-operative, rather than
commercial objectives, specifically NGOs………. work in the areas of development, relief or environmental protection or represent the poor or vulnerable people.”
আনু মুহাম্মদ (১৯৯৯ : ১১) এর মতে, “বর্তমানে প্রচলিত এনজিও বলতে বুঝানো হয় সেসব সংস্থাকে যেগুলো উন্নয়ন ও সেবামূলক কাজে কোন না কোনভাবে জড়িত থাকে।”
Encyclopaedia of Public International Law (1986) এর সংজ্ঞানুযায়ী, “এনজিও হলো সেই সমস্ত বেসরকারি সংস্থা যা সরকার বা আন্তঃসরকারের মধ্যে চুক্তির মাধ্যমে গঠিত হয় না, কিন্তু তাদের কাজের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক বিষয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।”
ডেল (Dale : 2000) এর মতে, “সাধারণভাবে এনজিওগুলোর সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকে। এগুলো সচরাচর সেবা প্রদান করে, যা পেশাদাররূপে বিবেচিত হয় (যেগুলোর জন্য বিশেষায়িত দক্ষতা আবশ্যক। এদের একটা সুস্পষ্ট আনুষ্ঠানিক কাঠামো থাকে যারা ন্যূনতম সংখ্যক বেতনভুক্ত কর্মচারী নিয়ে কাজ করে। এরা প্রায়ই সমষ্টিভিত্তিক সংস্থা ও সরকারি সংস্থাকে সমর্থন করে।”
জাতিসংঘের সংজ্ঞানুযায়ী, “All kinds of private organization that are independent from government control can be recognized as NGOs.”
প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আব্দুর রব (২০০৩ : ৭) এর মতে, “এনজিও বলতে সাধারণত বেসরকারি সংস্থা বা Non- Government Organization সমূহকে বুঝায়, যারা সমাজের পিছিয়ে পড়া, দরিদ্র, অশিক্ষিত মানুষের সার্বিক উন্নতির জন্য নিজস্ব উদ্যোগে সরকারি সাহায্য ছাড়া কাজ করে থাকে।”
উপর্যুক্ত সংজ্ঞাগুলোর আলোকে আমরা বলতে পারি, এনজিও হচ্ছে এমন এক ধরনের বেসরকারি সামাজিক সংগঠন,যেগুলো মানুষকে বস্তুগত ও অবস্তুগত সেবা প্রদান করার উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়। এ ধরনের সংগঠন অবশ্যই মালিকানাধীন মুনাফা লাভকারী সংগঠন নয়। ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য, মুনাফা লাভের জন্য,সদস্যদের
ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য লাভের জন্য (আর্থিক, বিনোদনমূলক ইত্যাদি) যেসব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়, সেগুলো এনজিও নয়। যেমন- ক্লাব,সমিতি, রাজনৈতিক সংগঠন, ট্রেড ইউনিয়ন ইত্যাদি।
বাংলাদেশে কর্মরত এনজিওর শ্রেণিবিভাগ : ড. মুহাম্মদ সামাদ (২০০৩ : ৬১) বাংলাদেশে কর্মরত এনজিওগুলোর পাঁচটি শ্রেণিবিভাগ দেখিয়েছেন। যথা :
১. দাতা সংস্থা,
২. আন্তর্জাতিক কার্যক্রমের এনজিও,
৩. জাতীয় কার্যক্রমের এনজিও,
৪. স্থানীয় কার্যক্রমের এনজিও এবং
৫. পরিসেবা এনজিও।
অন্যদিকে, আনু মুহাম্মদ (১৯৯৯ : ১৩) এনজিওগুলোকে প্রধান চারটি ভাগে ভাগ করেছেন। এগুলো হলো :
১. ধর্মীয় সংস্থাসমূহ : আন্তর্জাতিক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের শাখা হিসেবে এসব সংস্থা কাজ করে। “চার্চের সম্পর্কিত খ্রিস্টীয় সংস্থা ছাড়াও ইদানীংকালে সৌদি আরব ও লিবিয়ার তহবিল নিয়ে বেশকিছু ইসলামি সংস্থা কাজ করেছে।বাংলাদেশেও এ ধরনের সংস্থা কাজ করছে।”
২. আয় বৃদ্ধিকারী সংস্থা : যেসব এনজিও ঋণ প্রদান, বিভিন্ন সমিতি গঠনের মাধ্যমে সঞ্চয় ও বিভিন্ন ধরনের বিনিয়োগের মাধ্যমে গ্রামীণ গবির ও ভূমিহীনদের কৃষিখাতে কর্মসংস্থান বা নিয়োজনের কর্মসূচি হাতে নেয়।
৩. শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দানকারী সংস্থা ও
৪. স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনায় নিয়োজিত সংস্থা।
ড. আফরোজা বেগম (২০০৩ : ২৪) এনজিওগুলোকে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে বিভিন্নভাবে বিভক্ত করেছেন।নিম্নে এগুলো উল্লেখ করা হলো :
ক. মৌলিক পরিচয়ের ভিত্তিতে শ্রেণিবিভাজন : মৌলিক পরিচয়ের ভিত্তিতে এনজিওগুলোকে চার ভাগে ভাগ করা যায়। যথা :
১. দানকার্য পরিচালনাকারী এনজিও : যেসব এনজিও দানশীলতার দর্শন নিয়ে কাজ করে সেসব এনজিওকে দানকার্য পরিচালনাকারী এনজিও বলে। এদের কাজ হলো দরিদ্রদের প্রয়োজন পূরণে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে সাহায্য-সহযোগিতা করা।২. উন্নয়ন সেবা সংশ্লিষ্ট এনজিও : যেসব এনজিও বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নে বিশ্বাস করে এবং মানুষের কল্যাণে নির্দিষ্ট ক্ষেত্রগুলোর উন্নয়ন সাধন করতে সচেষ্ট হয় সেগুলোকে উন্নয়ন সেবা সংশ্লিষ্ট এনজিও বলে। এসব এনজিওগুলো স্বাস্থ্যসেবা, পরিবার পরিকল্পনা, শিক্ষার উন্নয়ন প্রভৃতি বিষয় নিয়ে কাজ করে। তারা তাদের কাজে বা কর্মসূচি বাস্তবায়নে উপকারভোগীদের অংশায়নের উপর গুরুত্ব দেয়।
৩. অংশীদার এনজিও : এসব এনজিওর বৈশিষ্ট্য হলো তারা নিজেদের প্রকল্পে স্থানীয় লোকদেরকে তাদের সম্পদ ও সামর্থ্য নিয়ে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করে। এক্ষেত্রে এনজিও কর্মসূচি বাস্তবায়নে স্থানীয়রা এনজিওর পাশাপাশি তাদের নিজস্ব নগদ অর্থ, উপকরণ, জমি, শ্রম ইত্যাদি নিয়ে এগিয়ে আসে।
৪. ক্ষমতায়ন সংশ্লিষ্ট এনজিও : যেসব এনজিও অনগ্রসর মানুষদেরকে তাদের জীবনে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উপাদানগুলোর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা প্রদান করে তাদের ক্ষমতায়নে কাজ করে সেসব এনজিওকে ক্ষমতায়ন সংশ্লিষ্ট এনজিও বলে।
খ. অর্থায়নের পরিধি বিশেষের ভিত্তিতে শ্রেণিবিভাজন : এনজিওগুলোকে অর্থায়ন ও কতটুকু পর্যায়ে তাদের কর্মপরিধি বিস্তৃত সে ভিত্তিতে চার ভাগে ভাগ করা যায়। যথা :
১. স্থানীয় এনজিও : এ ধরনের এনজিওগুলো একটি উপজেলা বা থানার কয়েকটি গ্রামে বা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে কাজ করে। এরা স্থানীয়, জাতীয় বা আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে তহবিল সংগ্রহ করে কাজ করে।
২. জাতীয় এনজিও : যেসব এনজিও কমপক্ষে দেশের চার বা তার অধিক ভৌগোলিক এলাকা নিয়ে কাজ করে সেসব এনজিওকে জাতীয় এনজিও বলা হয়। এ ধরনের এনজিওগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বৈদেশিক দাতাগোষ্ঠীর নিকট থেকে তহবিল নিয়ে কাজ করে।
৪. মিশ্র এনজিও : যেসব স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা স্থানীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত কিন্তু তারা বৈদেশিক সরকার বা বৈদেশিক সংস্থার কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহ করে কার্যাবলি পরিচালনা করে সেসব এনজিওকে মিশ্র এনজিও (Mwied NGO) বলা হয় ।
গ. ভূমিকার ভিত্তিতে শ্রেণিবিভাজন : এনজিওগুলোকে তাদের ভূমিকার ভিত্তিতে ৬টি শ্রেণিতে বিভক্ত করা যায় । যথা :
১. ত্রাণ ও কল্যাণ এনজিও (Relief and welfare NGO) : এ ধরনের এনজিওগুলোর কাজ শুধু অসহায় মানুষদের ত্রাণ ও অন্যান্য উপকরণ দিয়ে সহায়তা করা।
২. সেবা এনজিও (Service NGO) : যেসব এনজিও লক্ষ্যদলভুক্ত জনগোষ্ঠীকে সেবা প্রদান করে সেসব এনজিওকে সেবা এনজিও বলা হয়।
৩. তহবিল প্রদানকারী এনজিও (Funding NGO) : যেসব এনজিও স্থানীয় এনজিওগুলোকে তহবিল প্রদান করে সেসব এনজিওকে তহবিল প্রদানকারী এনজিও বলা হয়।
৪. নেটওয়ার্কিং এনজিও (Networking NGO) : যেসব এনজিও পারস্পরিক শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং মিউচুয়াল সাপোর্ট ও এনজিও সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধিকল্পে কাজ করে সেসব এনজিওকে নেটওয়ার্কিং এনজিও বলা হয়।
৫. উন্নয়ন এনজিও (Development NGO) : যেসব এনজিও শিক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এবং বহুমুখী কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে মানব উন্নয়নে ভূমিকা রাখে সেসব এনজি কে উন্নয়ন এনজিও বলে।
৬. পরামর্শক এনজিও (Consulting NGO) : যেসব এনজিও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যাবলি বাস্তবায়ন, নীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে সরকার, তহবিলদাতা সংস্থা এবং উন্নয়নের সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোকে পরামর্শ সেবা দিয়ে থাকে যেসব এনজিওকে তহবিল প্রদানকারী এনজিও বলা হয়।তবে বাংলাদেশে কর্মরত এনজিওগুলোকে তাদের কর্ম পরিধি ও সেবা প্রদানের প্রকৃতি অনুযায়ী নিম্নোক্ত চারটি ভাগে শ্রেণিবিভাগ করে বর্ণনা করা যেতে পারে। এগুলো হলো :
১. স্থানীয় এনজিও (Local NGO) : বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয়ভাবে জনসেবা প্রদানের উদ্দেশ্যে যেসব এনজিও গড়ে উঠেছে তাকে স্থানীয় এনজিও (Local NGO) বলে। এসব এনজিও বিভিন্ন জেলা বা উপজেলা পর্যায়ে।কার্যক্রম পরিচালনা করে। যেমন— টাঙ্গাইলে রয়েছে ‘এস এস এস’, পাবনায় গড়ে উঠেছে ‘সমতা’, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় গড়ে উঠেছে ‘পরিবর্তন’, ‘জি. কে. এস’, পল্লি দারিদ্র্য বিমোচন সংস্থা (PDBS) ইত্যাদি। স্থানীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হলেও এসব এনজিও সরকারি অনুদান, ঋণ, সদস্যদের চাঁদা, বিদেশি সাহায্য ও অনুদানের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়।
২. জাতীয় এনজিও (National NGO) : যেসব এনজিও সারা দেশে তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করে কর্মসূচি পরিচালনা করে যাচ্ছে, সেসব এনজিওকে জাতীয় এনজিও বলে। এসব এনজিওর প্রধান কার্যালয় ১টি হলেও সারা দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা এমনকি গ্রামগঞ্জেও তাদের শাখা স্থাপন করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্যানিটেশন, পরিবেশ, ক্ষুদ্রঋণ,শিশুকল্যাণ, নারী কল্যাণ ইত্যাদি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশে এ ধরনের জাতীয় এনজিওগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্র্যাক, প্রশিকা, আশা, আরডি আর এস, টিএমএসএস, নিজেরা করি, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্ৰ ইত্যাদি।
৩. আন্তর্জাতিক এনজিও (International NGO) : যেসব এনজিও নিজ দেশ ছাড়াও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তাদের কর্মকাণ্ড প্রসারিত করেছে, সেসব এনজিওকে আন্তর্জাতিক এনজিও বলে। এ ধরনের এনজিওগুলো দেশের সীমানা পেরিয়ে সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। বাংলাদেশে যেসব আন্তর্জাতিক এনজিও কাজ করছে, সেগুলোর Country office বেশিরভাগই ঢাকায় রয়েছে এবং ঢাকা থেকে তারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে Area office কিংবা Local office স্থাপন করেছে। এসব এনজিও সম্পূর্ণরূপে বিদেশি অর্থায়নে ও বিদেশি বিশেষজ্ঞদের দ্বারা পরিচালিত হয়। তবে মাঠ পর্যায়ে কাজ করার ক্ষেত্রে তারা দেশীয় লোকজন নিয়োগ করে থাকে।ঠান বাংলাদেশে কর্মরত আন্তর্জাতিক এনজিওগুলোর মধ্যে রয়েছে CARE Bangladesh, Save the Children-UK,Save the Children-USA, CARITAS, World Vision ইত্যাদি।
৪. দাতা এনজিও (Donor NGO) : দেশে কিছু কিছু এনজিও রয়েছে যেগুলো আন্তর্জাতিক ও জাতীয় ভিত্তিতে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত এনজিওগুলোকে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করে থাকে, সেসব এনজিগুলোকে দাতা এনজিও বলা হয়। বাংলাদেশে এসব এনজিওর Country office রয়েছে।এসব এনজিওর কাজই হলো বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত এনজিওগুলোর মধ্যে অর্থ বরাদ্দ দেয়া ও কারিগরি সহায়তা প্রদান। এসব এনজিওগুলোর মধ্যে রয়েছে, FORD Foundation, CANADIAN INTERNATION DEVELOPMENT AGENCY (CIDA), DANIDA, NORAD, SIDA, THE ASIA FOUNDATION, USAID ইত্যাদি।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, বাংলাদেশে এনজিওদের কর্মতৎপরতার ইতিহাস খুব বেশি দিনের নয়।উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে দু একটা এনজিও তাদের কর্মতৎপরতা শুরু করে। এগুলোর মধ্যে ব্রাহ্মসমাজ (১৮২৮) ও রামকৃষ্ণ মিশন (১৮৯৬) উল্লেখ করার মতো। তবে ভারত বিভক্তির পর এদেশে প্রতিষ্ঠিত প্রথম এনজিওটি হচ্ছে বাংলাদেশের পরিবার পরিকল্পনা সমিতি, যা ১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।