অথবা, তরিকত বলতে কী বুঝ?
অথবা, সুফিবাদে তরিকত কী?
অথবা, তরিকত সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারণা দাও।
অথবা, সুফিবাদে তরিকত সম্পর্কে যা জান সংক্ষেপে লিখ।
অথবা, সংক্ষেপে সুফিবাদের তরিকত ব্যাখ্যা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা : আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য আল্লাহর প্রেম ও ধ্যানের প্রতিষ্ঠিত যে মতবাদ তা ইসলামে সুফিবাদ নামে পরিচিত। ইসলামের বাতেনী বা অভ্যন্তরীণ দিককে গুরুত্ব সহকারে বিচার করে। মানুষের প্রাণ ছাড়া যেমন দেহ অসার, তেমনি ধর্মের অভ্যন্তরীণ ভক্তির দিক ছাড়া ধর্মীয় আচার এবং অনুষ্ঠান মূলহীন। একজন সুফি সাধককে সুফি শিক্ষার জন্য কয়েকটি স্তর অতিক্রম করতে হয়। এই স্তরগুলোর মধ্যে তরিকত অন্যতম।
তরিকত : তরিকত বলতে বুঝায় নির্দিষ্ট পথ। শরীয়তের বিভিন্ন বিধানাবলি পালনের ফলে সুফির কাছে যে বিষয়টি উন্মোচিত হয় তা হলো তরিকত। তরিকত শরীয়তের পরের ধাপ। যখন সুফি শরীয়তের বিধানসমূহ পালনের মাধ্যমে নিজেকে তৈরি করেন, তখন তিনি এই স্তরে উপনীত হন। এই স্তর প্রথম স্তর অপেক্ষা উন্নত। এই স্তরে সুফি মুর্শিদের সাহায্য গ্রহণ করেন। এই স্তরে মুর্শিদের প্রতি পূর্ণ আনুগত্য প্রদর্শন, বিনা প্রশ্নে ও দ্বিধাহীন চিত্তে মুর্শিদের নির্দেশ অনুসরণ সুফির পক্ষে একান্ত প্রয়োজন। সুফি সাধক যখন এই স্তরের নিয়ম কানুন প্রতিপালন করে সন্তুষ্টি বিধানে সমর্থ হন, তখন তিনি মুরিদ হিসেবে গণ্য হন। এই স্তরে মুরিদ মুর্শিদের ইচ্ছার মধ্যে নিজেকে বিলিয়ে দেয়। এই স্তরকে ‘ফানায়ে শেখ’ বলা হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, শরীয়তের পরের স্তর হলো তরিকত। তরিকত শরীয়তের চেয়ে উন্নত ও উচ্চতর। এই স্তরে সুফি তার সাধনার দিক নির্দেশনার জন্য পীর বা মুরিদের কাছে সাহায্য কামনা করেন। সুফিবাদে তরিকতের গুরুত্বকে অস্বীকার করা যায় না।