অথবা, সংস্কৃতির প্রকারভেদসমূহ সংক্ষেপে লিখ।
অথবা, সংস্কৃতিকে কয় ভাগে ভাগ করা যায়?
অথবা, সংস্কৃতির শ্রেণিবিভাগ সংক্ষেপে তুলে ধর।
উত্তর ভূমিকা : আমরা যা তাই আমাদের সংস্কৃতি। কেবল তাই নয়, প্রাকৃতিক ও সামাজিক পরিবেশের সঙ্গে খাপখাইয়ে চলতে গিয়ে এবং জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে মানুষ যা কিছু উদ্ভাবন বা আবিষ্কার করেছে সেটাও তার সংস্কৃতি।
সংস্কৃতির প্রকারভেদ : সংস্কৃতি দুই প্রকার। যথা :
১. বস্তুগত সংস্কৃতি ও ২. অবস্তুগত সংস্কৃতি।
বস্তুগত সংস্কৃতি : বস্তুগত সংস্কৃতি বলতে বাস্তব বস্তু যেমন- ঘরবাড়ি, কাপড়চোপড়, বাসন বা তৈজসপত্র, হাতিয়ার, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি বুঝায়। কেবল তাই নয়, বিজ্ঞান ধ্যানধারণা প্রকাশের জন্য যেসব বস্তু ব্যবহার করা হয় সেটাও স্তুগত সংস্কৃতির পর্যায়ে পড়ে।
উদাহরণ : একটি গ্রন্থ বা একটি চিত্র বা ছবি বস্তুগত সংস্কৃতি, যদিও গ্রন্থ রচনা ও চিত্রাংকনের মাধ্যমে মানুষ তার চিন্তা-ভাবনা জ্ঞানের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে চায় ।
অবস্তুগত সংস্কৃতি : অবস্তুগত সংস্কৃতি বলতে মানুষের ধ্যান-ধারণা, চিন্তাভাবনা, চলন-বলন-কথন, রীতিনীতি তথা মূল্যবোধ, আবেগ-উচ্ছ্বাস ইত্যাদিকে বুঝায়। অধিকন্তু মানুষের সব বিমূর্ত সৃষ্টি, যেমন- ভাষা ও সাহিত্য, বিজ্ঞান, আইন, নীতি, আদর্শ ইত্যাদিকেও অবস্তুগত সংস্কৃতির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কেবল তাই নয়, অবস্তুগত সংস্কৃতি বলতে বস্তুগত সংস্কৃতির পিছনে ক্রিয়াশীল চিন্তাভাবনা, জ্ঞান এবং কলাকৌশলকেও বুঝানো হয়ে থাকে।
উদাহরণ : একটি বাড়ি বস্তুগত সংস্কৃতি, কিন্তু বাড়িটি তৈরির প্রাক্কালে যে চিন্তাভাবনা এবং পরিকল্পনা করা হয় সেটা অবস্তুগত সংস্কৃতি। অবস্তুগত সংস্কৃতির মধ্যে আরো যেসব বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করা হয় সেটা হলো আবেগ এবং উচ্ছ্বাসমূলক অভিব্যক্তি। যেমন- প্রেম-ভালোবাসা, স্নেহ আদর, শ্রদ্ধা ইত্যাদির অভিব্যক্তি। এমনকি সমাজ কাঠামো তথা সামাজিক অনুষ্ঠান প্রতিষ্ঠানও অবস্তুগত সংস্কৃতির মধ্যে পড়ে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মানবসৃষ্ট সবকিছুই সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত। এদিক থেকে বস্তুগত ও অবস্তুগত নকল সৃষ্টিকেই সংস্কৃতি বলে। তাই বস্তুগত সৃষ্টিকে বস্তুগত সংস্কৃতি আর অবস্তুগত সৃষ্টিকে অবস্তুগত সংস্কৃতি বলে ।