অথবা, লিঙ্গ অসমতা কাকে বলে?
অথবা, লিঙ্গ অসমতা বলতে কী বুঝ?
অথবা, লিঙ্গ অসমতা সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা : পৃথিবীর সব সমাজেই নারী-পুরুষের মাঝে পার্থক্য বিদ্যমান। এ পার্থক্য বা বৈষম্যমূলক আচরণের কারণ কি এবং যৌক্তিকতা কতটুকু? সেটা বিশ্লেষণের অপেক্ষা রাখে। নারী-পুরুষের প্রতি সমাজের বৈষম্যমূলক আচরণ কি উদ্দেশ্য প্রণোদিত? এখানে কারই বা ভূমিকা অগ্রণী সেটা বুঝার জন্য লিঙ্গ অসমতা কি? তা বুঝতে হবে।
লিঙ্গ অসমতা : লিঙ্গ অসমতা বলতে নারী-পুরুষের মাঝে বিদ্যমান বৈষম্যকে বুঝায়। অর্থাৎ বিদ্যমান সমাজব্যবস্থায় নারী-পুরুষের মাঝে যে বৈষম্যমূলক আচরণ প্রকাশ পায় তাকে লিঙ্গ অসমতা বলা হয়। আর লিঙ্গ অসমতায় নারী-পুরুষের মাঝে এ বৈষম্যমূলক আচরণের ব্যাপারে জীববিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান এবং নৃবিজ্ঞানে আমরা সুদৃঢ় প্রমাণ পেয়ে থাকি। অর্থাৎ সহজ কথায় অতীত ইতিহাস এবং বর্তমান প্রচলিত সমাজব্যবস্থা আমাদের চোখে সহজেই এ বিষয়টি অনুমিত হয়। নারী পুরুষের মাঝে বিদ্যমান এ বৈষম্যকেই লিঙ্গ অসমতা বলে। সমাজবিজ্ঞানী কলিন্স বলেছেন, “লিঙ্গভিত্তিক অসমতা দুটি বিষয়ের উপর প্রতিষ্ঠিত।” যথা :
১. মানুষের মধ্যে যৌন তৃপ্তির তাড়না বেশ প্রবল। যদিও অন্যান্য প্রাণীর মধ্যে যৌন তাড়না রয়েছে, তথাপি তা সীমিত সময়ের জন্য। সব জীবের মধ্যে মানুষ যৌন আচরণের দিক থেকে অনন্য ও অনুপম।
২. গড়পরতা হিসেবে নারীর তুলনায় পুরুষের দৈহিক আকার আকৃতিতে বড় এবং তারাই অধিক শক্তিশালী । নারী গর্ভধারণ করে এবং সন্তানের যত্ন নেয় বিধায় তারা দৈহিক দিক থেকে বেশ অরক্ষিত (Vulnerable) অবস্থায় থাকে।
উপসংহার : উপরের আলোচনা হতে দেখা যায়, সকল সমাজে পুরুষেরা নারীর এ অরক্ষিত অবস্থার সুযোগ গ্রহণ করে। অর্থাৎ পুরুষেরা নারীর উপর্যুক্ত দুর্বলতার সুযোগ নেয়, নারীর উপর প্রভুত্ব করে এবং প্রভুত্ব বা খবরদারি করার মতো আদর্শ ও মূল্যবোধ তৈরি করে। বস্তুত মানবসমাজের এ ধারণা থেকেই লিঙ্গভিত্তিক অসমতার সৃষ্টি হয়েছে।