অথবা, ১৯৫৯ সালের মৌলিক গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্যগুলো উল্লেখ কর।
অথবা, মৌলিক গণতন্ত্র ব্যবস্থার প্রকৃতি লিখ।
অথবা, মৌলিক গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য লিখ।
অথবা, ১৯৫৯ সালের মৌলিক গণতন্ত্রের প্রকৃতি কি ছিল?
অথবা, ১৯৫৯ সালের মৌলিক গণতন্ত্র ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য বর্ণনা কর।
ভূমিকা :
১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পর স্বায়ত্তশাসনের ইতিহাস এক বিরাট পরিবর্তন সূচিত হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ এবং শাসকগোষ্ঠীর মানসিকতার পরিবর্তন হয় নি বলে এ ব্যবস্থা সন্তোষজনক হতে পারে নি।
মৌলিক গণতন্ত্র ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য : পাকিস্তান আমলে স্থানীয় শাসনব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনয়ন করেন পাকিস্তানের সামরিক শাসক ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান। ১৯৫৯ সালের ৭ অক্টোবর আইয়ুব খান (রাষ্ট্রপতি আদেশ নং ১৮) ‘Basic Democracies’ Order’ ঘোষণা করেন। তিনি এই আদেশে চার স্তর বিশিষ্ট স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত সরকার প্রবর্তন করেন। এই চারটি স্তর হলো :
ক. ইউনিয়ন কাউন্সিল খ, থানা কাউন্সিল গ. জেলা কাউন্সিল ঘ. বিভাগীয় কাউন্সিল
এই ব্যবস্থায় ইউনিয়ন কাউন্সিলের উপরই বেশি জোর দেয়া হয়েছিল। ইউনিয়ন কাউন্সিলে ১০-১৫ জন সদস্য ছিল যারা সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতো। এ আদেশ অনুযায়ী ইউনিয়ন কাউন্সিলের সদস্যগণ নির্বাচকমণ্ডলীতে পরিণত হয়। এ নির্বাচকমণ্ডলী প্রেসিডেন্ট, কেন্দ্রীয় পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যদের নির্বাচন করতেন। মৌলিক গণতন্ত্রে এক অভিনব ব্যবস্থা ছিল। এই ব্যবস্থায় পাকিস্তানের দুটি প্রদেশে ৪০,০০০ হাজার করে মোট ৮০,০০০ নির্বাচনি একক (Electoral Unit) সৃষ্টি করা হয়। প্রতিটি নির্বাচনি এলাকার ভোটারগণ তাদের মধ্যে থেকে একজনকে ভোট দিয়ে নির্বাচন করতেন। নির্বাচিত সদস্যই ঐ এককের নির্বাচক হতেন। সমগ্র দেশের নির্বাচকগণ মিলিতভাবে নির্বাচকমণ্ডলীতে পরিণত হতেন। ভৌগলিক সংলগ্নতা, জনসংখ্যা, যাতায়াতের সুবিধা ইত্যাদি বিবেচনা করে নির্বাচনি একক গঠন করা হতো। একক গঠনের পর ভোটার তালিকা তৈরি করা হতো। এলাকায় বসবাসকারী ২১ বছর বয়স্ক ব্যক্তির ভোটাধিকার ছিল। মৌলিক গণতন্ত্র ব্যবস্থায় শহরগুলো দুটি শ্রেণিতে বিভক্ত ছিল। শহরের জনসংখ্যা ১৫ হাজার বা তার কম হলে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাটির নাম হতো টাউন কমিটি। আর যে সকল শহরে জনসংখ্যা ১৫ হাজার বা তার বেশি হতো সেসব শহরে প্রতিষ্ঠিত হতো পৌর কমিটি বা মিউনিসিপ্যাল কমিটি
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মৌলিক গণতন্ত্রের কতগুলো প্রশংসনীয় দিক থাকলেও তা অচিরে স্বার্থান্বেষী মহলের প্রকৃত রাজনৈতিক অস্ত্রে রূপান্তরিত হয় এবং কায়েমি স্বার্থের ধারক ও বাহকের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।

admin

By admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!