মাঠকর্মে তত্ত্বাবধানের ধরন/শ্রেণিবিভাগ আলোচনা কর।

অথবা, মাঠকর্মে তত্ত্বাবধানের শ্রেণিবিভাগ ব্যাখ্যা কর।
অথবা, মাঠকর্ম তত্ত্বাবধান কত প্রকার ও কি কি?
অথবা, মাঠকর্ম তত্ত্বাবধানের ধরনসমূহ লিখ।
উত্তর।৷ ভূমিকা :
তত্ত্বাবধান হচ্ছে কোনো প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অধীনস্থ এবং নিম্নপদস্থ কর্মচারীদের নির্ধারিত কার্যক্রম তদারকি করা যা এজেন্সির উদ্দেশ্য অর্জনে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।তত্ত্বাবধান বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে।কখনো কর্মীদের কার্যক্রম নিয়ে হয়, কখনো প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে হয় আবার কখনো আর্থিক সংক্রান্ত তত্ত্বাবধান হতে পারে।
মাঠকর্মে তত্ত্বাবধানের শ্রেণিবিভাগ : সমাজবিজ্ঞানী ডি. পল চৌধুরী (D.Paul Chowdhury) তার Supervision গ্রন্থে তত্ত্বাবধানকে ৪টি শ্রেণিতে ভাগ করেছেন। এগুলো হলো :
১. প্রশাসনিক বা স্বেচ্ছাসেবী তত্ত্বাবধান কর্তৃক কারিগরি ব্যক্তির তত্ত্বাবধান ।
২. স্বেচ্ছাসেবী বা কারিগরি ব্যক্তির মাধ্যমে প্রশাসনিক ব্যক্তির তত্ত্বাবধান ।
৩. সাংগঠনিক তত্ত্বাবধান জাতীয় থেকে রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্র থেকে জেলায় ।
৪. আর্থিক তত্ত্বাবধান আর্থিক নিয়মকানুন জ্ঞানসমৃদ্ধ ব্যক্তি কর্তৃক তত্ত্বাবধান।তত্ত্বাবধানের পরিধির ভিত্তিতে একে ৩ স্তরে ভাগ করা যায়। যথা:
ক. একস্তর বিশিষ্ট তত্ত্বাবধান : এ স্তরে তত্ত্বাবধানে একজন তত্ত্বাবধানকারীর অধীনে পঞ্চাশজন কর্মী থাকতে পারে ।
খ. দ্বি-স্তর বিশিষ্ট তত্ত্বাবধান : এটি ২টি স্তরে বিভক্ত। এক্ষেত্রে প্রতিটি স্তরে তত্ত্বাবধানকারীর অধীনে এগার জন করে
কর্মী থাকতে পারে ।
গ. ত্রী-স্তর বিশিষ্ট তত্ত্বাবধান : এ স্তরকে তিনভাগে ভাগ করা যেতে পারে। প্রতিটি স্তরে একজন তত্ত্বাবধানকারীর অধীনে সাতজন করে কর্মী থাকতে পারে।
মাঠকর্মে বিভিন্ন ধরনের তত্ত্বাবধানের প্রচলন রয়েছে। এগুলো নিম্নরূপ :
১. ব্যক্তি তত্ত্বাবধান : ব্যক্তি তত্ত্বাবধান বলতে ব্যক্তি (শিক্ষার্থী) ও মাঠনির্দেশকের তত্ত্বাবধায়কের মধ্যে সপ্তাহে একদিন নির্দিষ্ট সময়ে মিটিং সম্পাদিত হওয়াকে বুঝায়।
২. দল তত্ত্বাবধান : দল তত্ত্বাবধানে একদল শিক্ষার্থী ও একজন তত্ত্বাবধায়কের মধ্যে কোনো সভা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
৩. সহপাঠী তত্ত্বাবধান : সহপাঠী তত্ত্বাবধান বলতে একদল সমাজকর্মী ও একদল শিক্ষার্থীর মধ্যে কোনো সভা অনুষ্ঠিত হওয়াকে বুঝায়।
৪. আনুষ্ঠানিক তত্ত্বাবধান : আনুষ্ঠানিকভাবে যখন শিক্ষার্থী ও তত্ত্বাবধায়কের মধ্যে সভা অনুষ্ঠিত হয় তখন তাকে আনুষ্ঠানিক তত্ত্বাবধান বলে।
৫. অনানুষ্ঠানিক তত্ত্বাবধান : অনানুষ্ঠানিক তত্ত্বাবধানে তত্ত্বাবধায়ক যখন ইচ্ছা শিক্ষার্থীদের ডেকে তত্ত্বাবধান কার্য সম্পাদন করে থাকে। এজন্য কোনো আনুষ্ঠানিকতার দরকার হয় না।
৬. ভার্চুয়াল তত্ত্বাবধান’: ভার্চুয়াল তত্ত্বাবধান বলতে তত্ত্বাবধানমূলক কার্যক্রম ই-মেইল, ওয়েব ও কম্পিউটারের মাধ্যমে সম্পাদিত হওয়াকে বুঝায়।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার আলোকে বলা যায়, তত্ত্বাবধান বিভিন্ন ধরনের হতে পারে । তত্ত্বাবধান যেভাবেই করা হউক না কেন এর মূল উদ্দেশ্য হলো কর্মীকে তার দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে অধিকতর সক্ষম ও যত্নবান করে তোলা।তাই মাঠকর্ম অনুশীলনে তত্ত্বাবধান একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a7%80%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%b8%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a7%8d/