মনোসামাজিক অনুধ্যান (Psycho-Social Study) কী?

অথবা, মনোসামাজিক অনুধ্যান কাকে বলে?
অথবা, মনোসামাজিক অনুধ্যান বলতে কী বুঝ?
অথবা, মনোসামাজিক অনুধ্যানের সংজ্ঞা দাও।
অথবা, মনোসামাজিক অনুধ্যানের পরিচয় দাও।
অথবা, মনোসামাজিক অনুধ্যানের ধারণা লেখ।
অথবা, সাইকো সোশ্যাল স্টাডি বলতে কী বুঝ?
উত্তর৷ ভূমিকা : সমস্যা সমাধানের জন্য সমস্যার কারণ খুঁজে বের করতে হয়। আর কারণ খুঁজে বের করার বেশ কিছু উপায় আছে। এগুলোর মধ্যে একটি হলো মনোসামাজিক অনুধ্যান (Psycho-Social Study) ।
মনোসামাজিক অনুধ্যান (Psycho-Social Study) : মনোসামাজিক সমস্যা এমন এক ধরনের সমস্যা যা ব্যক্তিকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে; ব্যক্তিকে তার নিজের অবস্থান থেকে দূরে নিয়ে যায়; বিচার বিবেচনা শক্তিকে কমিয়ে এবং সামাজিক ভূমিকা পালন ক্ষমতাকে খর্ব করে দেয়। ফলে ব্যক্তি সামাজিক ভূমিকা পালন করতে পারে না।
মনোসামাজিক সমস্যার অনেক কারণ থাকতে পারে, যা সমাজকর্মীকে খুঁজে বের করতে হয়। সাধারণত যেসব কারণে-ব্যক্তির মধ্যে মনোসামাজিক সমস্যার সৃষ্টি হয় সেগুলো হলো :
i. চরম আর্থিক বিপর্যয়,
ii. চরম সামাজিক বিপর্যয়;
iii. অভিযোজনগত অসুবিধা;
iv. ব্যক্তিত্বের ভারসাম্যহীনতা;
v. পারিবারিক ও সামাজিক দ্বন্দ্ব;
vi. হতাশা;
vii. তীব্র ক্ষোভ ও মানসিক আঘাত ইত্যাদি।
ড. আব্দুল হাকিম সরকার (২০০০ : ১১৬-১১৭) এর মতে, ব্যক্তির মনোসামাজিক অবস্থা সঠিকভাবে উপলব্ধি করার জন্য ব্যক্তিকে নিম্নোক্ত বিশেষ প্রেক্ষাপট অনুধ্যান করতে হবে :
ক. সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তির প্রত্যক্ষ ক্ষমতা এবং উপলব্ধি করার মতো জ্ঞান;
খ. ভালোমন্দের প্রতি তার বিচারবোধ;
গ. আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদা;
ঘ. আত্ম উপলব্ধি;
ঙ. আবেগ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা;
চ. সংবেদনশীলতা;
ছ. জ্ঞানের প্রয়োগ ক্ষমতা;
জ. বিষয় চিহ্নিতকরণ বা শনাক্তকরণ ক্ষমতা;
ঝ. ব্যক্তির মধ্যে উদ্বিগ্নতা ও অসহিষ্ণুতা;
ঞ. অপরাধ অনুভূতি ইত্যাদি।
উপসংহার : উপর্যুক্ত বিষয়গুলোকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে ব্যক্তি ও তার সমস্যা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্যসংগ্রহ করতে হয়।আর এ ধরনের তথ্যসংগ্রহের জন্য সমাজকর্মীকে ব্যক্তির সাথে যথাযথ সম্পর্ক বা
র‍্যাপোট স্থাপন করতে হয়। কারণ পেশাগত বা আস্থাপূর্ণ সম্পর্ক ছাড়া ব্যক্তি কখনো সমাজকর্মীর কাছে তার গোপন তথ্য ফাঁস করবে না। বস্তুতপক্ষে পেশাগত সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমেই ব্যক্তি ও তার সমস্যা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য বের করা সম্ভব হয়।