বিচ্যুতির আচরণের প্রভাব আলোচনা কর।

অথবা, বিচ্যুতি আচরণ সামাজিক জীবনে কীভাবে প্রভাব রাখে? লিখ।
অথবা, বিচ্যুতি আচরণের প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ।
উত্তর৷ ভূমিকা :
বিচ্যুতি বলতে সাধারণত আমরা কোন কিছু থেকে পৃথক হওয়াকেই বুঝে থাকি। সামাজের প্রচলিত আচার-আচরণ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার ফলে সামাজিক বিচ্যুতি ঘটে।
বিচ্যুত আচরণের প্রভাব : বিচ্যুত আচরণ সমাজজীবনে বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি করে। বিচ্যুত আচরণের প্রভাব প্রতিক্রিয়াকে দু’ভাবে ভাগ করা যায়। যথা :
ক. প্রতিকূল প্রভাব,
খ. অনুকূল প্রভাব।
প্রতিকূল প্রভাব : বিচ্যুতির প্রতিকূল প্রভাবগুলো নিম্নে তুলে ধরা হলো :
১. বিচ্যুতি ব্যবহারের ফলে সামাজিক সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়ে।
২.বিচ্যুতি ব্যবহারের কারণে সমাজের বিধিনিষেধ কার্যকর করতে বাধার সৃষ্টি হয়
৩.বিচ্যুতি বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করে।
৪.বিচ্যুতি সমাজের অর্থনীতির বিভিন্ন উদ্যোগকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
৫.পারস্পরিক সম্পর্ক বিনষ্ট করে বিচ্যুতিমূলক আচরণ।
৬.বিচ্যুতি সামাজিক ভূমিকাকে বিঘ্নিত করে।
৭. প্রভাবশালীদের দ্বারা সংগঠিত বিচ্যুতি নিরীহ ব্যক্তিদেরকে বঞ্চিত করে।
৮. বিচ্যুতি ঝগড়া থেকে হত্যাকাণ্ড সংগঠনে প্রভাবিত করে।
অনুকূল প্রভাব : বিচ্যুতি সমাজজীবনে সবসময় বিরূপ প্রভাবই সৃষ্টি করে না কখনো কখনো তা অনুকূল প্রভাবও তৈরি করে। সমাজ পরিবর্তনের সাথে সাথে সামাজিক অনুশাসনগুলোর ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। সময়ের প্রেক্ষাপটে সবসময় প্রচলিত রীতিনীতি একই রকম হয় না। প্রয়োজনের নিমিত্তে নতুন নতুন রীতি বা প্রথার পরিচয় ঘটানো হয়। এভাবে যেসব নতুন রীতির পরিচয় ঘটানো হয় তা বিচ্যুত আচরণ নয়। ফলে ঐ ধরনের আচরণ পরবর্তীতে সমাজে স্বীকৃতি লাভ করে। এক্ষেত্রে নারীদের কর্মে যোগদান অপরাধ না হলেও তাকে বিচ্যুতি হিসেবে বিবেচনা করা হতো। বর্তমানে এ ধরনের আচরণ বিচ্যুতি নয়, বরং নারী স্বাধীনতা একটি বিশ্বজনীন স্বীকৃত বিষয়।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে বলা যায়, মানবসভ্যতার সূচনালগ্ন থেকে যেমন প্রচলিত রীতিনীতি বিদ্যমান আছে তেমনি আছে সে প্রচলিত রীতিনীতি ভঙ্গের সাথে উদ্ভাবিত নতুন নিয়ম বা প্রথা। তবে আমাদের সমাজের সবাইকে সে নতুন প্রথা গ্রহণের মানসিকতা থাকতে হবে যা সুন্দর, দৃষ্টিনন্দনীয় এবং মঙ্গলজনক।