বাবা সকলের কথাই যদি রুহ পাকের কাছে পহুঁছিত তবে দুনিয়ার সব মানুষই ওলি-আল্লাহ হইয়া যাইত।”— ব্যাখ্যা কর।

উৎস : আলোচ্য অংশটুকু প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক আবুল মনসুর আহমদ রচিত ‘আয়না’ গল্প গ্রন্থের অন্তর্গত ‘হুযুর কেবলা’ গল্প থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : উক্তিটি হুযুর কেবলার। এমদাদ মোরাকেবায় উপবিষ্ট খলিফার দেহে আনীত রাসূলের আত্মাকে প্রশ্ন করার ইচ্ছা ব্যক্ত করলে পীর সাহেব তাকে নিরস্ত করার উদ্দেশ্যে উক্তিটি করেছিলেন।
বিশ্লেষণ : মুরিদানে গিয়ে পীর সাহেবের বিভিন্ন কাণ্ডকারখানা দেখার পর এমদাদের মনে তীব্র সন্দেহ ঘনীভূত হয়। বিশেষত মোরাকেবা অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সে বিষম ধাঁধায় পড়ে যায়। প্রধান খলিফার দেহে হুযুর যখন রাসূলের রুহকে প্রবেশ করালেন তখন এমদাদ কিছুতেই তা বিশ্বাস করতে পারল না। যখন রাসূলের রুহকে সওয়াল করার পালা এল তখন এমদাদ নিজেই প্রশ্ন করার আব্দার করে বসল। এর পূর্বে নিজেই মোরাকেবায় বসার তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় সে রীতিমতো অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছিল। এবার সে মরিয়া হয়ে মোরাকেবায় উপবিষ্ট খলিফাকে সওয়াল করার ইচ্ছা ব্যক্ত করলে হুযুর উল্লিখিত উক্তিটি করলেন। মূলত পীর সাহেব আয়োজিত এ মোরাকেবা অনুষ্ঠানটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত। হুযুরের অসৎ উদ্দেশ্য সাধনের আয়োজন ছিল এটা। সুতরাং এ পাতানো খেলায় এমদাদকে খেলতে দেয়া হলে সব জারি-জুরি ফাঁস হয়ে পড়বে বলে হুযুর তাকে নিবৃত্ত করার ব্যবস্থা স্বরূপ উক্তিটি করেছেন। তাঁর মতে সকলকে দিয়ে সব কাজ হয় না। সকলের কথাই যদি রুহ পাকের কাছে পৌছত তাহলে সকলেই ওলি-আল্লাহ হয়ে যেত। অর্থাৎ রাসূলের আত্মাকে প্রশ্ন করার যোগ্যতা এমাদাদের নেই। একারণে তাকে নিবৃত্ত করা হলো কৌশলে।
মন্তব্য : পীর সাহেবের মতে সকলের দ্বারা সকল কার্য সম্পাদন সম্ভব নয়। যদি হতো, সকলেই তাহলে ওলি-আল্লাহ হয়ে যেত।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%b9%e0%a7%81%e0%a6%af%e0%a7%81%e0%a6%b0-%e0%a6%95%e0%a7%87%e0%a6%ac%e0%a6%b2%e0%a6%be-%e0%a6%97%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%aa-%e0%a6%86%e0%a6%ac%e0%a7%81%e0%a6%b2-%e0%a6%ae%e0%a6%a8%e0%a6%b8/