বাংলাদেশে মাঠকর্ম অনুশীলনে যে কোনো ৫ টি নৈতিক সংশ্লিষ্টতা বিষয় নিয়ে আলোচনা কর।

অথবা, বাংলাদেশে মাঠকর্ম অনুশীলনে কয়েকটি নৈতিক সংশ্লিষ্টতা বিষয় নিয়ে বর্ণনা কর।
উত্তর।। ভূমিকা :
আমাদের দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় মাঠকর্ম অনুশীলনের জন্য আজও কোনো নৈতিক নির্দেশিকা তৈরি করেনি। তবে আমেরিকার জাতীয় সমাজকর্মী সমিতি কর্তৃক প্রণীত নৈতিক বিষয়গুলো আমাদের দেশসহ অনেক দেশ পালন করে। অন্যদিকে, পৃথিবীর অনেক দেশ তাদের নিজস্ব আইন, নীতি, সমাজ ও সংস্কৃতি আলোকে নৈতিক বিষয় তৈরি করে ও মেনে চলে।
বাংলাদেশে মাঠকর্ম অনুশীলনে ৫টি নৈতিক সংশ্লিষ্টতা
নিম্নে সমাজকর্মের সাথে সংশিষ্ট ৫টি নৈতিক বিষয় আলোচনা করা হলো :
১. শিক্ষার্থীদের সংস্থাপন : মাঠকর্ম অনুশীলনের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সংস্থাপন করা হয়ে থাকে।শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা বাসস্থান থেকে কোনো প্রতিষ্ঠান কাছে এবং কোনটি দূরে। আবার অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যেসব প্রতিষ্ঠানে কাজ করা শিক্ষার্থীদের জন্য স্বস্তিকর। কোনো শিক্ষার্থীকে অনুরাগ বা বিরাগের বশীভূত হয়ে এমন কোনো প্রতিষ্ঠানে প্রেরণ করা যাবে না যেখানে অনুশীলন করা তাদের জন্য কষ্টকর।
২. প্রশিক্ষণার্থীদের নিকট থেকে আর্থিক সুবিধা না নেয়া : সমাজকর্মীরা শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে মাঠকর্ম অনুশীলনের জন্য কোনো প্রকার আর্থিক সুবিধা নিতে পারবেন না। তারা সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের মাঠকর্ম অনুশীলন তত্ত্বাবধানের কাজ করবেন।সংস্থাপিক প্রতিষ্ঠানও শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে কোনো প্রকার আর্থিক সুবিধা নিতে পারবে না।
৩. প্রশিক্ষণার্থীদের আর্থিক সুবিধা প্রদান : মাঠকর্ম প্রশিক্ষণার্থীরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে নিজেরা জ্ঞানার্জনের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে শ্রম দিয়ে থাকে এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে অনেক সময় কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের মতো সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া তারা সমাজকর্ম অনুশীলনের জন্য নতুন নতুন তথ্যও সরবরাহ করে থাকে। অনেক সময় তারা মাঠকর্ম অনুশীলনে গিয়ে ক্ষুদে গবেষণা কাজও সম্পাদন করে।তাদের এসব কাজের জন্য তাদেরকে আর্থিক সুবিধা প্রদান করতে হবে।
৪. বক্তিগত কাজ করিয়ে নেয়া : মাঠকর্ম প্রশিক্ষণার্থীরা বিভিন্ন তত্ত্বাবধায়কের অধীনে কাজ করে থাকে । তত্ত্বাবধায়ক শিক্ষার্থীর মাঠকর্ম প্রতিবেদন মূল্যায়ন ও মাঠকর্ম তত্ত্বাবধান করে থাকেন এবং একাডেমিক নম্বরও প্রদান করে থাকেন।এ কারণে শিক্ষার্থীরা তত্ত্বাবধায়কের নিকট অনেকটা দায়বদ্ধ থাকবে। এই সুযোগের অপব্যবহার করে কোনো তত্ত্বাবধায়ক যাতে শিক্ষার্থীকে ব্যক্তিগত কাজে নিয়োগ না করেন সে বিষয়টি দেখতে হবে।
৫. যৌন সম্পর্ক স্থাপন : মাঠকর্ম প্রশিক্ষণার্থীদের সাথে সমাজকর্মীরা কোনো যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবেন না।সমাজকর্মী প্রশিক্ষণার্থীর কোনো নিকট আত্মীয় বা কাছের কারো সাথেও যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবেন না।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় সমাজকর্মীদের মাঠকর্ম অনুশীলনে অবশ্যই উপরিউক্ত নৈতিক মানদণ্ড বজায় রাখতে হবে।সমাজকর্মীরা পেশাদার সমাজকর্মী হিসেবে শিক্ষার্থীদেরকে এমনভাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করবেন যাতে করে প্রশিক্ষণার্থীরা ভালোভাবে জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করতে পারে।