বাংলাদেশে প্রবীণ হিতৈষী সংঘের সীমাবদ্ধতাগুলো কি কি?

উত্তর ঃ ভূমিকা ঃ মানুষ জন্মের পর থেকে একটু একটু করে বড় হয়। এক সময় বৃদ্ধ বয়সে উপনীত হয়। এ বয়সের নর-নারীদেরকে প্রবীণ বলেও সম্বোধন করা হয়ে থাকে। শারীরিক-মানসিক দুর্বলতার কারণে কাজকর্মে যোগদানে তারা সক্ষম হয় না। ফলে তারা নিত্য প্রয়োজন পূরণে হিমশিম খায়। বাংলাদেশের প্রায় ৯০ লাখ প্রবীণদের সার্বিক কল্যাণের স্বার্থে বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘের যাত্রা ঘটে। কিন্তু এ সংঘের নানা রকম সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সুতরাং, প্রবীণদের অধিকতর কল্যাণের জন্য এ সীমাবদ্ধতাগুলো কাটিয়ে তোলা দরকার।
→ বাংলাদেশে প্রবীণ হিতৈষী সংঘের সীমাবদ্ধতাগুলো :
১. নিজস্ব আয় কম ঃ বাংলাদেশে প্রবীণ হিতৈষী সংঘের সুষ্ঠু পরিচালনায় বেশ অর্থের প্রয়োজন। কিন্তু এর নিজস্ব আয় খুবই কম।
২. পর্যাপ্ত অর্থের তহবিলের অভাব ঃ প্রবীণ হিতৈষী সংঘের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও তা সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে পর্যাপ্ত অর্থ তহবিলের দরকার পড়ে। কিন্তু পর্যাপ্ত অর্থ তহবিলের অভাবে এই সংঘকে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
৩. শহর ভিত্তিক; গ্রামভিত্তিক নয় ঃ প্রবীণ হিতৈষী সংঘ মূলত শহরভিত্তিক গ্রামের প্রবীণদের জন্য তেমন একটা প্রসারিত হয়নি।
৪. যথার্থ প্রচারণার অভাব ঃ বাংলাদেশে প্রবীণ হিতৈষী সংঘের কার্যক্রমের যথার্থ প্রচারণার অভাব রয়েছে। ফলশ্রুতি গ্রামীণ মানুষ এই সংঘকে সম্যক ধারণাও রাখে না যা এর সম্প্রসারণে প্রতিকূলতার সৃষ্টি করে।
৫. সংঘ সেবা গ্রহণে অর্থব্যয় : প্রবীণ হিতৈষী সংঘের সেবা গ্রহণে সেবা গ্রহীতা প্রবীণকে কিছু অর্থ খরচ করতে হয়। কিন্তু বাংলাদেশের গ্রামীণ প্রবীণদের হাতে সেই অর্থটুকুও নেই। ফলশ্রুতিতে তারা প্রবীণ সংঘের সেবা হতে
ক্রমাগত বঞ্চিত হয়ে চলেছে।
৬. অপর্যাপ্ত হাসপাতাল : প্রবীণদের চিকিৎসাদানে প্রবীণ হাসপাতাল ও ওল্ডহোমের আসন সংখ্যা প্রয়োজনের
তুলনায় খুবই অপ্রতুল হিসেবে বিবেচিত হয়।
৭. জনঅংশগ্রহণ নিশ্চিতে ব্যর্থ ঃ বাংলাদেশের প্রবীণ হিতৈষী সংঘের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা হচ্ছে, এটি সর্বস্তরের জনগণকে এই সংঘের কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত করতে পারেনি।
উপসংহার ঃ পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘ এ দেশের দরিদ্র- দুর্বল অসহায় প্রবীণদের সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক জীবন-যাপনে সহায়তাদানে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখে। সময়ের আবর্তে কিছু সীমাবদ্ধতায় এটি জড়িত হলেও তা নিরসন করা কঠিন নয়।