বাংলাদেশে প্রবীণ হিতৈষী সংঘের সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠার সুপারিশ নির্দেশ কর।

উত্তর ঃ ভূমিকা ঃ মানুষ জন্মলগ্ন থেকে একটু একটু বড় হতে থাকে। বয়স বাড়তে বাড়তে ৬০ বছর বা তার ঊর্ধ্বেও চলে যায়। সাধারণত ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে সকল নর-নারীকে প্রবীণ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। প্রতিটি মানুষই প্রবীণ অবস্থায় উপনীত হতে বাধ্য। বাংলাদেশ একটি দরিদ্র দেশ। এখানে লাখ লাখ প্রবীণ বাড়ছে। তাদের কল্যাণার্থে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘ। এই সংঘের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে তবুও এটি এ দেশের অগণিত প্রবীণদের জীবন সুখময় ও সার্থকপূর্ণ করতে দৃঢ়চেতা।
→ বাংলাদেশে প্রবীণ হিতৈষী সংঘের সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠার সুপারিশ : বাংলাদেশে প্রবীণ হিতৈষী সংঘের
সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠার সুপারিশ নিম্নে বর্ণিত হলো :
১. কার্যক্রমকে প্রসারিতকরণ : বাংলাদেশে প্রবীণ হিতৈষী সংঘের কার্যক্রম শহরকেন্দ্রিক । গ্রামে এর কার্যক্রম আজও প্রচলিত হয়নি। যার দরুন গ্রাম্য প্রবীণরা এই সংঘের সুযোগ-সুবিধা হতে বঞ্চিত হয়। তাই গ্রাম পর্যায়ে বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘের কার্যক্রম প্রসারিত করতে হবে।
২. সরকারি অনুদানের বরাদ্দ : বাংলাদেশ প্রবীণ সংঘের সীমাবদ্ধতা দূরীকরণকল্পে সরকারি অনুদানের বরাদ্দের ব্যবস্থা করতে হবে। ফলশ্রুতিতে এর অর্থনৈতিক সংকট কিছুটা হলেও লাঘব হবে।
৩. জনচেতনতা বৃদ্ধিকরণ : বাংলাদেশে প্রবীণ হিতৈষী সংঘের কার্যক্রম সম্পর্কে অনেকেই জানে না। তাই সারাদেশে এর কার্যক্রমকে ছড়িয়ে দিতে গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার ও প্রচারণা চালাতে হবে। তবেই এই সংঘের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণ হবে।
৪. নিজস্ব আয় বৃদ্ধি ঃ বাংলাদেশে প্রবীণ হিতৈষী সংঘের নিজস্ব আয়ের উৎস খুবই কম। ফলশ্রুতিতে অনেক পদক্ষেপ সংঘটি বাস্তবায়ন করতে পারে না। তাই আয়বৃদ্ধিমূলক প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে এই সংঘের কার্যক্রমকে আরো বেগবান করা সম্ভব।
৫. সহজলভ্য সেবা ঃ বাংলাদেশে প্রবীণ হিতৈষী সংঘ শুধুমাত্র সংঘেরই প্রবীণদের সেবা প্রদান করে থাকে। এই সংঘে কিছু চাঁদা দিতে হয়। ফলশ্রুতিতে অনেক প্রবীণই সামান্য অর্থটুকুই জমা দিতে না পেরে সুবিধা গ্রহণে সক্ষম হচ্ছে না।
৬. প্রবীণ হাসপাতাল ও ওল্ডহোমের সংখ্যা বৃদ্ধি ঃ বাংলাদেশে প্রায় ১০ লাখ প্রবীণ রয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য এ দেশে প্রবীণ চিকিৎসাদানের জন্য কয়েকটি হাসপাতাল রয়েছে। আর কয়েকটি ওল্ডহোম দেখা যায়। তাই প্রবীণ সুস্থ-সুন্দর জীবনযাপনে সহায়তার লক্ষ্যে এগুলোর সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।
৭. আন্তর্জাতিক পরিচিতি অর্জন : বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘকে এর কার্যক্রম সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে জানাতে হবে। ফলশ্রুতি বিশিষ্ট সমাজহিতৈষী ব্যক্তিত্ব, বিভিন্ন সংঘ ও রাষ্ট্রঅঙ্গসমূহ আর্থিক সাহায্য দান করবে।
৮. কর্মকাণ্ডকে আরো জোরদারকরণ : বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘকে তার কর্মকাণ্ডকে আরো জোরদার করতে হবে। সুন্দর ব্যবস্থাপনা ও সঠিক লক্ষ্য উদ্দেশ্য বাস্তবায়নেই প্রবীণ হিতৈষী সংঘের সমস্ত সমস্যার সুষ্ঠু সুরাহা নিশ্চিত করতে বাধ্য।
উপসংহার ঃ পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘ বাংলাদেশের শহর-গ্রামের প্রবীণদের স্বাভাবিক জীবন-যাপনে সহায়তা প্রদানের নিমিত্তে পরিচালিত হয়। তাই উক্ত সংঘের সীমাবদ্ধতাগুলো সুন্দরভাবে কাটিয়ে উঠার
মাধ্যমে নিশ্চিতরূপে বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘকে সক্রিয় করা সম্ভবপর হয়।