বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজের রাজনীতিতে জ্ঞাতি সম্পর্কের ভূমিকা কী?

অথবা, বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজের রাজনীতিতে জ্ঞাতি সম্পর্কের প্রভাব কেমন? আলোচনা কর।
অথবা, বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজের রাজনীতিতে জ্ঞাতি সম্পর্কের অবদান সম্পর্কে বর্ণনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
‘Kinship’ শব্দটি আমেরিকান নৃবিজ্ঞানী Morgan সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন। Kinship শব্দটির শব্দগত অর্থ হলো জ্ঞাতি সম্পর্ক। জ্ঞাতি সম্পর্ক হচ্ছে বংশানুক্রমিকভাবে নির্ণীত মানবসমাজের সামাজিক সম্পর্কের সুনির্দিষ্ট রীতি যা বিবাহ প্রথা তথা যৌনসম্পর্ক এবং রক্ত সম্পর্ক হতে উদ্ভূত।

বাংলাদেশে গ্রামীণ সমাজের রাজনীতিতে জ্ঞাতি সম্পর্কের ভূমিকা : বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজে কোন ব্যক্তি জ্ঞাতিদের সাহায্য ছাড়া রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পারে না। গ্রাম পর্যায়ের বিভিন্ন নির্বাচনের সময় দেখা যায়, যে প্রার্থীর জ্ঞাতি গোষ্ঠীর সংখ্যা বেশি তিনিই সহজে বিজয় ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হন। যেমন- ইউনিয়ন ও জাতীয় সংসদের নির্বাচনের সময় জ্ঞাতি গোষ্ঠীরা আলোচনা করে যে দল বা প্রার্থীকে ভোট দিলে তাদের শক্তি ও কৃতিত্ব বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হবে তার পক্ষেই সমচেতভাবে কাজ করে। গ্রামীণ প্রতিষ্ঠান, যেমন- স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ কমিটিতে সদস্য হতে হলেও জ্ঞাতি গোষ্ঠীর সমর্থন প্রয়োজন। অনেকেই ক্ষমতা পাওয়ার আশায় আরো অধিক সমর্থন লাভের আশায় বড় বড় জ্ঞাতিগোষ্ঠীর মধ্যে ছেলেমেয়েদের বিয়ে দিয়ে জ্ঞাতি সম্পর্ক বৃদ্ধি করে থাকেন।
উপসংহার : আলোচনার পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজের রাজনীতিতে জ্ঞাতি সম্পর্কের ভূমিকা অত্যন্ত প্রকট। জ্ঞাতি সম্পর্কের মাধ্যমেই গ্রামীণ সমাজে ব্যক্তি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পারে। কারণ নির্বাচন, রাজনৈতিক অনুষ্ঠান প্রভৃতি ক্ষেত্রে জ্ঞাতি সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।