প্রশ্নঃ বাংলাদেশে পরোক্ষ কর ব্যবস্থায় গৃহীত উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপসমূহ আলোচনা কর ।

[ad_1]

প্রশ্নঃ বাংলাদেশে পরোক্ষ কর ব্যবস্থায় গৃহীত উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপসমূহ আলোচনা কর ।

উত্তর : পরোক্ষ কর ব্যবস্থা বাংলাদেশের জন্য সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । বেশির ভাগ কর রাজস্ব পরোক্ষ কর থেকেই আসে ।

উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপসমূহ : বাংলাদেশে পরোক্ষ কর ব্যবস্থায় গৃহীত উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপসমূহ নিম্নরূপ :

১. পাঁচ স্তরবিশিষ্ট শুল্ক কর কাঠামো অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে । সর্বোচ্চ শুল্ক কর ২৫ শতাংশ অপরিবর্তিত রেখে মূলধনী যন্ত্রপাতি এবং আইসিটি খাতের শুল্ক ৩ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে ।

২. ৩৫০ % ও ৫০০ % সম্পূরক শুল্ক স্তর বিলাসবহুল ও জনস্বাস্থ্যের হানিকর পণ্যসামগ্রী আমদানি ( যেমন সিগারেট , মদ জাতীয় পণ্য , ২০০০ সিসির বেশি ক্ষমতার গাড়ি ) নিরুৎসাহিত করার জন্য আহ্বান করা হয়েছে ।

৩. আট স্তরবিশিষ্ট সম্পূরক শুল্ক কাঠামো ( ২০ % , ৩০ % , ৪৫ % , ৬০ % , ১০০ % , ২৫০ % , ৩৫০ % , ৫০০ % ) অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে । তন্মধ্যে ২৫০ % ।

৪. সৌরশক্তি ব্যবহারকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে সোলার প্যানেলের উপর সম্পূর্ণরূপে শুল্ক কর মওকুফ করা হয়েছে ।

৫. মূলধনী যন্ত্রপাতিকে রেয়াতি সুবিধা প্রদান সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনকে যুগোপযোগী ও আধুনিক করা হয়েছে ।

৬. ট্রানজিট ও ট্রান্সশিপমেন্ট পণ্যের শুল্ক সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদন বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে । তবে তা পরবর্তীতে স্থগিত করা হয়েছে ।

৭. মিষ্টি , বিস্কুট , ওয়েফার , আকার বিস্কুট , স্কার্চ কার্ড , চশমার ফেমের ক্ষেত্রে অবমূল্যায়ন রোধ করার লক্ষ্যে ট্যারিফ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ।

৮. বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের জন্য প্রযোজ্য ব্যাগেজ বিধিমালা অধিকারের সহজীকরণ করা হয়েছে ।

৯. শুল্ক কর্তৃপক্ষের সক্ষমতাবৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রাক – জাহাজীকরণ পরিদর্শন এর আওতা ক্রমানুসারে হ্রাস করা হচ্ছে ।

১০. যানজট নিরসনের লক্ষ্যে যানবাহনের শুল্ক – কর বৃদ্ধি করা হয়েছে ।

১১. বান্ধে আমদানিকৃত গুঁড়া দুধের শুল্ক হার ১২ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে ।

১২. খেজুরের উপর আরোপিত ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক এবং ৫ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটি প্রত্যাহার করা হয়েছে ।

১৩. মিডিয়ামডেনসিটি ফাইবার ( MDF ) বোর্ডের উপর ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে ।

১৪. CKD এবং CBU অবস্থায় আমদানিকৃত মোটর সাইকেলের সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে ।

১৫. সম্পূর্ণ প্রস্তুতকৃত পণ্য ( Finished goods ) ও বিলাসদ্রব্য ( Luxury goods ) এর উপর ৫ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটি আরো ১ বছরের জন্য অব্যাহত রাখা হয়েছে ।

১৬. বাংলাদেশে চলাচলকারী ভিন্ন দেশের বিমান সংস্থা কর্তৃক আমদানীয় কতিপয় পণ্য যেমন- Promotional items , revenue docoments , বিনামূল্যে বিতরণের জন্য উপহার সামগ্রী Communicational equipment , ইউনিফর্ম প্রভৃতি শুল্ক কর ব্যতীত আমদানির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে ।

১৭. Meltable scrap এবং MS Billet / Ingot- এর Specificduty টন প্রতি ১,৫০০ টাকা এবং ২,৫০০ টাকা ধার্য করা হয়েছে । Silver bullion এবং Gold bullion এর ক্ষেত্রে প্রতি ১১.৬৬৪ গ্রামের Specific rate of duty যথাক্রমে ৬ টাকা এবং ১৫০ টাকা ধার্য করা হয়েছে ।

১৮. তামাক চাষকে নিরুৎসাহিত করতে কাঁচা তামাক ( Unmanufactured tobacco ) রপ্তানির উপর প্রথমবারের মতো ১০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে ।

১৯. বিদ্যুৎ সাশ্রয়কারী এনার্জিসেডিং ল্যাম্প যাতে বাংলাদেশে প্রস্তুত হয় সেজন্য এ জাতীয় বাল্বের সকল প্রকার যন্ত্রাংশ ( Parts ) থেকে আমদানি শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর ( VAT ) প্রত্যাহার করা হয়েছে ।

২০. অপ্রক্রিয়াজাত চিনি ( Raw sugar ) ও প্রক্রিয়াজাত চিনি ( Finished sugar ) এর প্রতি মেট্রিক টনের উপর যথাক্রমে ২,০০০.০০ টাকা এবং ৪,০০০.০০ টাকা হারে Specific rate of duty আরোপ করা হয় । তবে পরবর্তীতে জনসাধারণের নিকট কমমূল্যে চিনি সরবরাহের জন্য অপ্রক্রিয়াজাত চিনির উপর specific duty সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং প্রক্রিয়াজাত চিনির উপর Specific duty প্রতি টনে ৪,০০০ টাকা থেকে হ্রাস করে ২,০০০ টাকা নির্ধারণ করা হয় । ইতোমধ্যে প্রক্রিয়াজাত চিনির উপর থেকেও সম্পূর্ণ শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় , কর ব্যবস্থা উন্নত হলে বাংলাদেশ অতি সহজেই উন্নতির পথে পাড়ি জমাতে পারবে ।

[ad_2]