অথবা, প্রবীণ সমস্যা দূরীকরণের উপায়সমূহ আলোচনা কর।
অথবা, প্রবীণদের কল্যাণে সমাজকর্মীর ভূমিকা বর্ণনা কর।
অথবা, কিভাবে প্রবীণদের সমস্যা দূরীকরণ করা যায় ব্যাখ্যা কর।
উত্তর।৷ ভূমিকা : আজকে যারা প্রবীণ ক’দিন আগে তারা নবীন ছিল। আবার আজকে যারা নবীন তারাও আগামীতে প্রবীণ হবে। আর এই আজকের প্রবীণদের মাধ্যমে নবীনরা পৃথিবীতে আলোর মুখ দেখছে। নবীনদের মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা, তাদের শিক্ষা দান, তাদের মৌল মানবিক চাহিদাসহ যাবতীয় চাহিদা পূরণ করেছে প্রবীণরা।তাই তাদের প্রতিও সমাজ ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব রয়েছে। তারা যাতে বৃদ্ধজনিত অক্ষমতার কারণে কোন কষ্টের শিকার না হয় সে
দায়িত্ব আজ আমাদের; আমাদের সমাজের এবং আমাদের রাষ্ট্রের।
প্রবীণ সমস্যা সমাধানের উপায়/প্রবীণদের কল্যাণে সমাজকর্মীর ৪টি ভূমিকা : সকলের সহযোগিতায় প্রবীণ বা বার্ধক্য সমস্যা মোকাবিলা করা যায় । প্রবীণদের কল্যাণে সমাজকর্মীদের ৪টি ভূমিকা নিম্নরূপ :
১. আর্থিক সুবিধা প্রদান : তাদের সমস্যার পিছনে বেশিরভাগ দায়ী আর্থিক অসচ্ছলতা। তাই সন্তানদের আর্থিক অবস্থা ভালো থাকলে বৃদ্ধদেরও সচ্ছলতার মধ্যে রাখতে হবে। তাদের যখন যা প্রয়োজন তা পূরণ করার ব্যবস্থা করতে হবে। অর্থনৈতিক সচ্ছলতা থাকলে তাদের মনও প্রফুল্ল হবে। বিশেষ করে শেষ বয়সে তাদের মনের ইচ্ছানুযায়ী খাবার খেতে পারবে। সমাজকর্মীরা বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে এ ধরনের সুবিধা প্রদান করতে পারে।
২. চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা : প্রবীণদের মানসিক দিক চাঙ্গা রাখার জন্য তাদের জন্য প্রযোজ্য বিনোদনের ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য প্রতিটি গ্রাম ও মহলায় বয়স্ক বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তুলতে হবে। বিনোদনগুলোতে পত্রপত্রিকা পড়া ও খেলাধুলার ব্যবস্থা থাকতে হবে। সমাজকর্মী এ কাজে সরাসরি ভূমিকা রাখতে পারে।
৩. পারিবারিক দায়িত্ব : প্রবীণদের প্রতি পরিবারের সদস্যদের দায়িত্ব অত্যধিক। যে পরিবার প্রবীণের প্রতি যত দায়িত্বশীল সে পরিবারে প্রবীণের সমস্যা তত কম। এজন্য পরিবারের সদস্যদের সজাগ দৃষ্টি থাকতে হবে। পারিবারিক সচেতনতামূলক কাজ সমাজকর্মীর অন্যতম দায়িত্ব।
৪. যৌথ পরিবার ব্যবস্থা বহাল রাখা : আমাদের দেশে যৌথ পরিবার ব্যবস্থা পূর্বের তুলনায় অনেক কমে গেছে।অথচ বৃদ্ধরা যৌথ পরিবারেই লালিতপালিত হয়। এর ফলে তারা একসাথে সবার সাথে থাকতে পারবে এবং সমস্যা সমাধানে সবার সহযোগিতা পাবে। এক্ষেত্রে সমাজকর্মী ভূমিকা পালন করতে পারে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, আজকের নবীনই একদিন প্রবীণ হবে। যেহেতু তারা বয়সজনিত কারণে নানাবিধ সমস্যায় আবর্তিত হয় সে কারণে তাদের সমস্যাগুলো সমাধানে সরকার, এনজিও, প্রবীণ ব্যক্তির পরিবারসহ সকলকেই এগিয়ে আসতে হবে।