পরিসংখ্যানের আওতা বা পরিসংখ্যানের পরিধি তুলে ধর ।

অথবা, পরিসংখ্যানের ক্ষেত্রসমূহ আলোচনা কর।
অথবা, পরিসংখ্যানের পরিধি সংক্ষিপ্তভাবে আলোচনা কর।
অথবা, পরিসংখ্যানের আওতা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
পরিসংখ্যান হলো তথ্যবিশ্বের বা তথ্যবিশ্বের কোন বৈশিষ্ট্য সম্পর্কিত সংখ্যাত্মক তথ্যের সংগ্রহণ, শ্রেণিবদ্ধকরণ, উপস্থাপন, বিশ্লেষণ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রাপ্ত ফলাফলের মাধ্যমে তথ্যবিশ্ব বা তথ্যবিশ্বের উক্ত বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে নির্দিষ্ট মাত্রার ভ্রান্তি (Error) সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার সম্বলিত একটি বিজ্ঞান ।
পরিসংখ্যানের আওতা বা পরিসংখ্যানের পরিধি : পরিসংখ্যানের বৈশিষ্ট্য ও সীমাবদ্ধতা হতে এর আওতা ও কার্যক্ষেত্রের মোটামুটি একটি ধারণা পাওয়া যায়। নিম্নে পরিসংখ্যানের কয়েকটি প্রধান কার্যক্ষেত্রের আলোচনা করা হলো :
প্রথমত, যেহেতু পরিসংখ্যান সংখ্যাত্মক তথ্যাবলি নিয়ে আলোচনা করে সেহেতু জ্ঞানের যেসব ক্ষেত্রে সংখ্যাত্মক পর্যালোচনার স্থান আছে অনুসন্ধান ক্ষেত্রে তাদের প্রায় সবগুলোই পরিসংখ্যানের আওতাভুক্ত। অর্থাৎ যেসব ক্ষেত্রে সংখ্যা বহুলতা (Large number) তাৎপর্যের যাচাই এবং সমষ্টিগত বিচারের প্রশ্ন আছে, মানব জ্ঞানের সেসব ক্ষেত্রে পরিসংখ্যানের কার্যক্ষেত্র বিস্তৃত । সুতরাং বলা যায় যে, অনুসন্ধান ক্ষেত্রে সংখ্যাত্মক তথ্যাবলির সমষ্টিগত দিক আলোচনা পরিসংখ্যান বিজ্ঞানের প্রধান ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত ।
দ্বিতীয়ত, যে সমস্ত ঘটনা বা সমস্যা বহুমুখী কারণ দ্বারা প্রভাবিত সেগুলোও পরিসংখ্যানের আওতায় পড়ে । এ সমস্ত কারণের অধিকাংশগুলোকে আলাদা করা বা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন বিধায় এসব ক্ষেত্রে পরিসংখ্যান পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে কোন সমষ্টিগত ব্যাপারে যুক্তিপূর্ণ সিদ্ধান্তে আসা যায়। সমাজ, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সমস্যার ক্ষেত্রে এটা বিশেষভাবে সত্য । অবশ্য বিশুদ্ধ বিজ্ঞানেও এগুলোর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে । সর্বোপরি পরিসংখ্যানের কার্যক্ষেত্র সর্বব্যাপী। ব্যক্তিগত জীবন হতে রাষ্ট্রীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পরিসংখ্যান স্বীয় ভূমিকায় বিজ্ঞানের একটি আলাদা শাখা হিসেবে স্বীকৃতিলাভ করেছে। তাছাড়া পরিসংখ্যান শুধু বর্তমান আলোচনা করে না। অতীত ও ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত গ্রহণেও এটা নিজেকে প্রসারিত করেছে। কালের অগ্রগতির সাথে সাথে নব নব ক্ষেত্র এর আওতাভুক্ত করে নিচ্ছে।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা হতে বুঝা যায় যে, সমস্যাবহুল মানবজীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে পরিসংখ্যানের কার্যক্ষেত্র বিস্তার লাভ করেছে। তাই মানব উন্নয়নের বিভিন্ন নীতি ও পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য পরিসংখ্যানের বিভিন্ন তত্ত্ব ও পদ্ধতিসমূহ সুচারুরূপে প্রয়োগ ও প্রতিষ্ঠিত করে এদের উপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করাই পরিসংখ্যান অধ্যয়নের প্রধান লক্ষ্য ।