উত্তর ঃ ভূমিকা ঃ বিরাজমান আর্থ-সামাজিক জটিলতা পশ্চাৎপদতা, দারিদ্র্য, বেকারত্বসহ বহুবিধ আর্থিক সমস্যার
মধ্যে একটি সমৃদ্ধ অর্থনীতি ও সুষম সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার আশাবাদ নিয়ে বাংলাদেশ বিভিন্ন সময় গৃহীত বেশ কয়েকটি পরিকল্পনার ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ ১৯৯৭-২০০২ মেয়াদে পঞ্চম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়। বর্তমানে এর মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও কার্যকারিতা এখনও বিদ্যমান।
→ লক্ষ্য- উদ্দেশ্যসমূহ ঃ নিম্নে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য আলোচনা করা হলো।
১. অসহায় নারী ও পুরুষের জন্য লাভজনক কর্ম সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন ও মানব সম্পদ উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণ ।
২. দল সৃষ্টি এবং সংশ্লিষ্ট এলাকায় গ্রামীণ নাগরিক উন্নয়নমূলক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে দরিদ্রতম জনগোষ্ঠীর সাংগঠনিক ক্ষমতা, ব্যবস্থাপনাগত এবং কর্মক্ষমতার উন্নয়ন।
৩. এতিম, ছিন্নমূল, শারীরিক, মানসিকভাবে অক্ষম এবং আশ্রয়হীন শিশুদের প্রাতিষ্ঠানিক সেবা প্রদানের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা, শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ এবং ঘূর্ণায়মান তহবিল দানের আওতায় স্বাবলম্বী ও কর্মঠ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা ।
৪. মাদকাসক্ত এবং অক্ষম যুবকদের পুনবার্সন, সেবা ও চিকিৎসা প্রদানের উদ্দেশ্যে এলাকা ভিত্তিক প্রতিরোধমূলক কর্মসূচির মাধ্যমে সুযোগ সৃষ্টি।
৫. শারীরিক ও মানসিকভাবে অক্ষম শিশু এবং অন্যান্য অক্ষম ব্যক্তিদেরকে বিশেষ এবং সমন্বিত শিক্ষা প্রদান ।
৬. স্থানীয় জনগণ আরও বেশি সমন্বিত সামাজিক জীবন-যাপন এবং দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ ও আয় সৃষ্টিকারী কার্যক্রমে অংশগ্রহণের জন্য উৎসাহিত ও উদ্বুদ্ধকরণ।
৭. দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ এবং অন্যান্য সহায়তার মাধ্যমে ভবঘুরেদের সমাজে পুনর্বাসনের বর্তমান পুনর্বাসন কর্মসূচি আরও উন্নতকরণ।
৮. দরিদ্র মহিলাদের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং তাদেরকে সকল উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের উৎসাহিত করণের মাধ্যমে লিঙ্গ সমতা বৃদ্ধি।
৯. ঘূর্ণিঝড়, নদীভাঙন, ভয়াবহ বন্যা এবং অগ্নিকাণ্ডের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত মহিলাদের পুনর্বাসন।
১০. বৃদ্ধ বয়সে অসহায় ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যসেবা ও অন্যান্য সহায়তাসহ আরও আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ।
১১. নারী প্রধান পরিবার এর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ ।
১২. পতিতাবৃত্তি রোধকরণ, দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ এবং আত্মকর্মসংস্থানে ঋণ প্রদানসহ পতিতাদের পুনর্বাসন কর্মসূচি গ্রহণ ।
১৩. পার্বত্য জেলাসমূহে উপজাতি জনগণের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ ।
উপসংহার। পরিশেষে বলা যায় যে, স্বাধীনতা লাভের পর বাংলাদেশে এ যাবতকালে গৃহীত বিভিন্ন পরিকল্পনাসমূহ প্রণয়ন, বাস্তবায়ন, মূল্যায়ন তথা সার্বিক অবস্থা বিশ্লেষণ করলে বলা যায় যে, যদিও এসকল পরিকল্পনা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে তথাপি উন্নয়নের গতিধারাকে এটি অনেকাংশে ত্বরান্বিত করতে সক্ষম হয়েছে।