অথবা, নির্বাসন কী?
অথবা, নির্বাসন কাকে বলে?
অথবা, নির্বাসনের সংজ্ঞা দাও।
অথবা, নির্বাসনের কয়েকটি ধারা সংক্ষেপে উল্লেখ কর।
উত্তর৷ ভূমিকা : সমাজ বা রাষ্ট্রের মধ্যে যেমন অপরাধ সংঘটিত হয় তেমনি সমাজ বা রাষ্ট্রই অপরাধীর আচরণ সংশোধনের বিধানকল্পে শাস্তির ব্যবস্থা করে থাকে। আর এর জন্য দেশে বিদ্যমান বিচারব্যবস্থাও সক্রিয়। গ্রাম পঞ্চায়েত, সালিস কেন্দ্র, আদালত প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান অপরাধীর শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা ও শাস্তি কার্যকর করে থাকে। এ সকল প্রতিষ্ঠান
বিভিন্ন পদ্ধতিতে শাস্তি প্রদান করে থাকে।
নির্বাসন : পাশ্চাত্য দেশগুলোতে সর্বপ্রথম নির্বাসন প্রথার প্রচলন শুরু হয়। ১৫৯৭ সালে সর্বপ্রথম ইংল্যান্ডে নির্বাসন আইন পাশ হয়। বাংলাদেশের দণ্ডবিধিতে ৫০টি ধারায় নির্বাসন দেওয়ার বিধান রয়েছে। নিম্নে নির্বাসনের কয়েকটি ধারা উল্লেখ করা হলো :
দণ্ডবিধি ১২১ ধারা অনুসারে কোনো সামরিক বা বেসামরিক লোক দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা (বাংলাদেশের), যুদ্ধ আরম্ভ অথবা যুদ্ধারম্ভের চেষ্টা করলে বা এ সকল কর্মে সহায়তা করলে নির্বাসনের বিধান রয়েছে।
১২২ ধারা মোতাবেক দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য অন্য কোনো দেশ থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সংগ্রহ করলে এমন ব্যক্তিদের নির্বাসন দেবার বিধান আছে।
১২৪ক ধারা অনুসারে রাষ্ট্রদ্রোহিতার শাস্তি নির্বাসন।
১৩২ ধারা মোতাবেক সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সম্পর্কিত অপরাধের শাস্তি নির্বাসন।
২৩২ ধারানুসারে মুদ্রা জালকারী অপরাধীর শাস্তি নির্বাসন।
উপর্যুক্ত ৫টি অপরাধ ছাড়াও বাংলাদেশে আরো ৪৫ ধরনের অপরাধের জন্য ভিন্ন ভিন্ন ধারা মোতাবেক অপরাধীকে নির্বাসনের বিধান রয়েছে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, শাস্তি প্রদানের পদ্ধতিগুলোর মধ্যে নির্বাসন অন্যতম। কোনো দেশের অভ্যন্তরে সংঘটিত উচ্চতর পর্যায়ের অপরাধীকে নির্বাসনে প্রেরণের মাধ্যমে শাস্তি প্রদান করা হয়। এক্ষেত্রে দেশ পরিচালনাকারী প্রধানমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্টের বা সেনাপতির উদাহরণ ইতিহাসে অজস্র।