অথবা, গ্রামীণ দারিদ্র্য কী?
অথবা, গ্রামীণ দারিদ্র্যের সংজ্ঞা দাও।
অথবা, গ্রামীণ দারিদ্র্য কাকে বলে?
উত্তর৷ ভূমিকা : তৃতীয় বিশ্বের একটি অন্যতম দরিদ্র দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশে দরিদ্রতমদের সংখ্যা অগ্রহণীয়ভাবে বেশি। দরিদ্রতমের সংকটটি তুলনামূলকভাবে গ্রামাঞ্চলে ঘনীভূত (৩৯.৮ শতাংশ), শহরে নগরে ১৪.৩ শতাংশ। (১ জানুয়ারি ২০০০, জনকণ্ঠ, পৃ-২১)। কিন্তু দারিদ্র্য নিয়ে হা-হুতাশা করলে কিংবা দারিদ্র্যের গুণগান করলে দারিদ্র্যমুক্তি ঘটবে না। কিভাবে দেশ থেকে দারিদ্র্য নিরসন করা যায়, সেজন্য সরকারি বেসরকারি উভয় পর্যায়েই নিরন্তরের চেষ্টা চলছে।
গ্রামীণ দারিদ্র্য (Rural Poverty) : বাংলাদেশের গ্রামীণ জনপদের মুখ্য বাস্তবতাটি হচ্ছে এ যে, সংখ্যাগরিষ্ঠ গ্রামীণ মানুষ এখনও দারিদ্র্যের শেকলে বন্দি। গ্রাম বাংলার দারিদ্র্যপীড়িত পরিবারগুলো মূলত সম্পদবঞ্চিত। এদের কৃষিজমি নেই, অকৃষিজাত স্থায়ী সম্পদ। বিভিন্ন মাঠ সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, দরিদ্রদের প্রধান পেশা কৃষি, শ্রম, কিংবা পরিবহণের কাজ । যাদের আওতাধীন চাষযোগ্য কোনো জমি নেই, তাদের মধ্যে ৮০ ভাগই দরিদ্র। মোটামুটিভাবে ১ হেক্টর পরিমাণ জমির মালিক পরিবারগুলোতে দারিদ্র্যের ছাপ নেই বললেই চলে। দারিদ্র্য ধারণাটির উৎপত্তি হয়েছে বঞ্চনা থেকে, অর্থাৎ, দারিদ্র্যকে বলা যেতে পারে ‘একটি বঞ্চনার কাহিনি’। উন্নয়নশীল দেশসমূহে দারিদ্র্যকে চরম বঞ্চনার সমার্থক হিসেবে গণ্য করা হয় যা জীবনধারণের ন্যূনতম চাহিদার সাথে
সংশ্লিষ্ট। গ্রাম সমাজে বিদ্যমান দারিদ্র্য সম্পর্কে তাই বলা যায়, “The term rural proverty is the opposite of the term rural development. It implies lack of development, or underdevelopment & therefore the [Katar Singh, Rural Development] knowledge of its measures (or rural development).”
উপসংহার : উপসংহারে বলা যায়, বাংলাদেশের দারিদ্র্য প্রধানত গ্রামকেন্দ্রিক। মূলত গ্রামীণ দারিদ্র্য গ্রাম উন্নয়নের ঠিক বিপরীত শব্দ। গ্রামীণ দারিদ্র্য শব্দটি উন্নয়নের অভাব বা অনুন্নয়নকে নির্দেশ করে এবং তাই গ্রাম উন্নয়ন পরিমাপের জ্ঞানকে বুঝায়।