অথবা, খ্রিস্টান সম্প্রদায় সম্পর্কে যা জান লিখ।
অথবা, খ্রিস্টধর্মের সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধর।
অথবা, বাংলাদেশে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সংক্ষিপ্ত বিবরণ উল্লেখ কর।
উত্তর৷ ভূমিকা : সেই সুপ্রাচীনকাল থেকে বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীর লোক বাস করে আসছে। দীর্ঘদিন ধরে তারা পাশাপাশি বসবাস করে আসছে। প্রতিটি ধর্মের রয়েছে নিজস্ব স্বকীয়তা বা বৈশিষ্ট্য। বাংলাদেশে ইসলাম ধর্মাবলম্বীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি । ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হিসেবে এ দেশে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সম্প্রদায় উল্লেখযোগ্য ।
খ্রিস্টান সম্প্রদায় : বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে খ্রিস্টানরা অন্যতম। এ দেশে অপরাপর ধর্মাবলম্বীদের তুলনায় খ্রিস্টানরা নবাগত। ইংরেজদের আগমনের পূর্বে এ দেশে খ্রিস্টধর্মের বিকাশ ঘটেনি। ইংরেজরা এ দেশের আর্থসামাজিক ক্ষমতা গ্রহণ করে। পরবর্তীতে তারা রাজনৈতিক ক্ষমতা লাভ করে। রাজনেতিব প্রতিষ্ঠিত হয়ে তারা খ্রিস্টধর্ম প্রসারে মনোনিবেশ করে। ইংরেজরা ভেবেছিল এ দেশে আধুনিক
ইংরেজি শিক্ষার প্রসার ঘটালে মানুষ নিজেরাই খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করবে এবং এভাবে সারা দেশ ইংরেজদের মুঠোয় চলে আসবে। খ্রিস্টধর্ম প্রসারে ইংরেজরা এ দেশের জনগণের দারিদ্র্যের সুযোগ গ্রহণ করে। নিম্নবর্ণের হিন্দু ও দরিদ্র জনগণ বিভিন্ন লোভের আশায় খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করে।
খ্রিস্টানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বড়দিন। এছাড়াও তারা স্টার সানডে, শান্তাক্লোজ ডে প্রভৃতি উৎসব পালন করে। প্রতি বছর ডিসেম্বরের ২৫ তারিখে যীশু খ্রিস্টের জন্মদিনে বড়দিন পালন করা হয়। বড়দিনে নাচগান, উপহার বিনিময় প্রভৃতি করা হয় । বাংলাদেশের খ্রিস্টানদের অস্তিত্ব বিপন্ন হওয়ার পথে। সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে তারা বিভিন্ন সমস্যায় পতিত হয়। নিরাপত্তার জন্য খ্রিস্টানরা একত্রে বসবাস করে। গ্রামাঞ্চলে তারা খ্রিস্টান পাড়া গড়ে তোলে । খ্রিস্টানরা প্রতি রবিবার গির্জায় উপাসনা করে। খ্রিস্টানরা বেশ জাঁকজমকের সাথে বিবাহ অনুষ্ঠান পালন করে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলাদেশের জনগণ স্বাভাবিকভাবেই ধর্মভীরু। এ দেশে বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের সহাবস্থান লক্ষ্য করা যায়। মুসলিম সম্প্রদায়ের পাশাপাশি ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এ দেশে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছে। সম্প্রদায়ের ভেদাভেদ থাকলেও তাদের সহাবস্থান লক্ষণীয়।