কেস স্টাডিতে তথ্য সংগ্রহের কৌশলগুলো ব্যাখ্যা কর।

অথবা, কেস স্টাডিতে তথ্য সংগ্রহের কৌশলগুলো বর্ণনা কর।
অথবা, কেস স্টাডিতে তথ্য সংগ্রহের কৌশল সমূহ বিশ্লেষণ কর।
অথবা, কেস স্টাডিতে তথ্য সংগ্রহের কৌশল সমূহ আলোচনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা : মাঠকর্ম অনুশীলনে সমাজকর্মীকে কেস স্টাডি করার ক্ষেত্রে তথ্য সংগ্রহের উপর নির্ভরশীল
হতে হয়। এজন্য মাঠকর্মী বিভিন্ন কৌশলের আশ্রয় নিয়ে থাকে। তথ্য সংগ্রহের এসব কৌশলই মূলত কেস স্টাডির কৌশল হিসাবে বিবেচিত।
কেস স্টাডিতে তথ্য সংগ্রহের কৌশলসমূহ: মাঠকর্মী অনুশীলনে মাঠকর্মী বা সমাজকর্মী কেস স্টাডির
সময় তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে যেসব কৌশলের আশ্রয় নিয়ে থাকে তা নিম্নরূপ :
১. সাক্ষাৎকার (Interview)
২. পর্যবেক্ষণ (Observation)
৩. গৃহ পরিদর্শন (Home visit)
৪. যোগাযোগ (Communication)
৫. পরামর্শ (Consultation)
৬. ঘটনা লিপিবদ্ধকরণ (Case records)
৭. প্রশ্নপত্র (Questionnaire)
৮. ডকুমেন্টারি উৎসের ব্যবহার (Use of documentary sources)
৯. প্রক্ষেপন (Projective)
১০. ঘটনা অনুধ্যান (Case study)
১১. চিঠিপত্র ও প্রতিবেদন (Letters and report)
১. সাক্ষাৎকার (Interview) :
সমাজকর্মী সাহায্যকারী বা উত্তরদাতার নিকট থেকে সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে সরাসরি তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন। এর
মাধ্যমে ব্যক্তির সাথে কথোপকথনের মধ্য দিয়ে ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব, চিন্তাধারা, দৃষ্টিভঙ্গি, আশা আকাঙ্ক্ষা প্রভৃতি সম্পর্কে সম্যক ধারণা অর্জন করা যায়।সাক্ষাৎকার মানে দুই বা ততোধিক ব্যক্তির মধ্যে এক বিশেষ ধরনের কথোপকথন যার ভিত্তিতে মানুষের অভিজ্ঞতা,দৃষ্টিভঙ্গি ও ধ্যানধারণার বিনিময় ঘটে।
সাক্ষাৎকারের ধরন : সাক্ষাৎকারের ভূমিকাগত দিক, সাক্ষাৎকারের উপস্থিত ব্যক্তিবর্গের সংখ্যা, সাক্ষাৎকারের
কার্যকাল এবং প্রক্রিয়াগত প্রকারভেদ বিবেচনা করে সাক্ষাৎকারকে বেশ কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। বস্তুত সাক্ষাৎকার সম্পূর্ণ মানসম্মত হতে শুরু করে সম্পূর্ণ অবকাঠামোবদ্ধকরণ পর্যন্ত হতে পারে।মাঠকর্ম অনুশীলন সমস্যা সমাধান প্রক্রিয়ায় সাক্ষাৎকারের মূল উদ্দেশ্যে হলো বৈজ্ঞানিকভাবে তথ্যানুসন্ধান করা।সাক্ষাৎকার মাত্রই এর পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ করা অত্যাবশ্যক। এটি গ্রহণের প্রস্তুতি সঠিক ও যথাযথ হলে অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হয়।
সাক্ষাৎকারের কতকগুলো কর্মকৌশল রয়েছে। যেমন- ১. পর্যবেক্ষণ; ২. শ্রবণ;
কথা বলা; প্রশ্নকরণ; ৪. মন্তব্য করা বা ৫. ব্যক্তিগত প্রশ্নের উত্তর দান; ৬. নেতৃত্বদান বা পরিচালনা; ৭. ব্যাখ্যাকরণ; ৮. মর্যাদা দান ৯. অনুরোধ গ্রহণ ও ১০. সমাপনী ইত্যাদি।
উত্তম সাক্ষাৎকারের শর্তাবলি রয়েছে। মনীষী Annette Garrett -এর মতে সাক্ষাৎকারের শর্ত ৪টি।

সাক্ষাৎকারের সুপারিশ * লিপিবদ্ধকরণ * গোপনীয়তা * সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীর পূর্ব অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান বলা যায়, কিছু সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও সাক্ষাৎকারই তথ্যসংগ্রহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে সমাজকর্মীর পেশাগত সম্পর্ক স্থাপন হয়।
২. পর্যবেক্ষণ : সাধারণভাবে পর্যবেক্ষণ হচ্ছে কোনো বিষয়বস্তু বা ঘটনাকে অবলোকন করা বা দেখা।কিন্তু বৈজ্ঞানিক অর্থে পর্যবেক্ষণ হচ্ছে বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে নির্দিষ্ট কোনো বিষয়বস্তু বা ঘটনাকে সুশৃঙ্খলভাবে অবলোকন করা বা
লিপিবদ্ধ করা।
পর্যবেক্ষণের কতগুলো ধাপ রয়েছে। যথা : ১. অনুসন্ধান কাজের জন্য লক্ষ্য উদ্দেশ্য নির্ধারণ ২. পর্যবেক্ষণীয় দল বিষয় বা ঘটনা নির্ধারণ ৩. পর্যবেক্ষণীয় ঘটনার সাথে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠা ৪. পর্যবেক্ষণীয় দলে প্রবেশ করা ৫. প্রয়োজনে দীর্ঘ সময়ব্যাপী পর্যবেক্ষণ ও তথ্যাবলি ধারণের মাধ্যমে অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করা ৬. পর্যবেক্ষণীয় এলাকা থেকে বের হওয়া ৭. তথ্য বিশ্লেষণ ৮. তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে প্রতিবেদন তৈরি করা।
পর্যবেক্ষণের কতকগুলো প্রকার রয়েছে। যেমন : (ক) সংগঠিত পর্যবেক্ষণ (খ) অসংগঠিত পর্যবেক্ষণ (গ) নিয়ন্ত্রিত ও অনিয়ন্ত্রিত পর্যবেক্ষণ (ঘ) অংশগ্রহণমূলক ও অ-অংশগ্রহণমূলক পর্যবেক্ষণ ইত্যাদি।
পর্যবেক্ষণের কিছু সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে :
৩. গৃহ পরিদর্শন : গৃহ পরিদর্শন বলতে ব্যক্তি সমাজকর্মী কর্তৃক সাহায্যার্থীর বাসস্থান অর্থাৎ যেখানে তার পরিবারের লোকজন বাস করে সেখানে তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে উপস্থিত হওয়াকে বুঝায়। গৃহ পরিদর্শনের কতকগুলো বিবেচ্য বিষয় রয়েছে। যেমন- ১. সাহায্যার্থী সম্পর্কে উপাত্ত সংগ্রহ ২. পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা ৩.
সাহায্যার্থীর পরিবেশ সম্পর্কে অবগত হওয়া ৪. সমস্যা সমাধানে পরিবারের সহযোগিতা আদায় ৫. সাহায্যার্থীর মনোবল চাঙ্গা করা ৬. পেশাগত সম্পর্ক স্থাপন ৭. সাহায্যার্থীর অবস্থান তুলে ধরা ৮. জীবনের ইতিবৃত্ত জানা ৯. অপ্রকাশিত ঘটনা জানা।
৪. যোগাযোগ (Communication) ভাবের আদান প্রদান সংক্রান্ত যে কোনো ধরনের আচরণকেই যোগাযোগ বলে। অন্যভাবে বলা যায়, যোগাযোগ হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে জনগণের মধ্যে কোনো চিন্তাধারা ভাবের অনুভূতির সৃষ্টি করা যায়। যোগাযোগের কতকগুলো শর্ত রয়েছে। যেমন-
১. বার্তা গ্রাহক সম্পর্কে জানা ২. যোগাযোগ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা অর্জন ৩. নির্ভুল ও ত্রুটিমুক্ত হওয়া ৪. অনুকূল পরিবেশ ৫. প্রেরক ও গ্রাহকের স্বার্থ সংরক্ষণ ৬. সঠিক মাধ্যমে নির্বাচন ৭. কণ্ঠস্বর নিয়ন্ত্রণ ৮. দুর্বোধ্য ভাষা পরিহার ৯. বার্তা সংক্ষিপ্ত হওয়া ১০. সুনাম রক্ষা ১১. সহজ সরলতা ১২. গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি ১৩. সম্পূর্ণভাবে তুলে ধরা ১৪. একে অপরকে বুঝা।
যোগাযোগের কতকগুলো নীতি রয়েছে। যেমন-
১. সম্পূর্ণতা ২. স্পষ্টতা ৩. মনোযোগ ৪. সংহতি ৫. ঐক্য ৬. সহজতা ৭. গতিশীলতা ৮. পারস্পারিক বিশ্বাস ৯. সঙ্গতি ১০. বণ্টন বা প্রেরণ ১১. অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ ১২. পর্যালোচনা ১৩. পরস্পর নির্ভরতা ১৪. আগ্রহ ও গ্রহণ ১৫. পদ্ধতি ও সময়োপযোগিতা।
যোগাযোগের উপাদানগুলো হলো : ১. সংবাদ বা বার্তা ২. যোগাযোগকারী ৩. যোগাযোগ গ্রহীতা ৪. মাধ্যম ৫. প্রত্যুত্তর তথ্য সংগ্রহে যোগাযোগের স্থান হলো :*পরিবার * ব্যক্তিগত সহপাঠী * আত্মীয়স্বজন * শিক্ষক শিক্ষিকা * প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা * ঘনিষ্ঠ বন্ধু * চাকরিস্থলের সহকর্মী
৫. পরামর্শ (Consultation) একজন সাহায্যার্থী নানাভাবে বিপর্যস্ত ও অক্ষম হয়ে সমাজকর্মীর নিকট আসে। এ অবস্থায় সমাজকর্মী ব্যক্তির সমস্যার কথা শুনে তাকে সমস্যা সমাধানে উপদেশ প্রদান করেন।অন্যভাবে বলা যায় পরামর্শ হলো একটি মিথস্ক্রিয়ামূলক প্রক্রিয়া যেখানে একজন সাহায্যার্থী যার সাহায্যের প্রয়োজন ও আর একজন পরামর্শক যিনি সেই সাহায্য প্রদান করার জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষিত।
তথ্য সংগ্রহের সময় পরামর্শের ক্ষেত্রে ৩টি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়। এগুলো হলো :
ক. পরামর্শের প্রাথমিক সাক্ষাৎকার
খ. পরামর্শের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় সাক্ষাৎকার
গ. পরামর্শের প্রারম্ভিক সাক্ষাৎকার
পরামর্শের কতকগুলো গুণ রয়েছে। যেমন-
১. অনুভব করার যোগ্যতা ২. সহানুভূতিশীল আচরণ ৩. কথা বলার দক্ষতা ৪. আন্তরিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ৫. সততা ও পক্ষপাতহীনতা ৬. কলাকৌশল প্রয়োগের ক্ষমতা ৭. সাবধানতা অবলম্বন করা ৮. সাক্ষাৎকার গ্রহণ ও পরিচালনা
৬. ঘটনা লিপিবদ্ধকরণ বা কেস সংরক্ষণ : মানুষের আচরণ, সামাজিক অবস্থা এবং সামাজিক প্রক্রিয়া সংক্রান্ত যে কোন বোর্ড বা ডকুমেন্ট, কেস রেকর্ড সংরক্ষণের ব্যাপক পরিসরে অন্তর্ভুক্ত করা যায়। প্রকাশিত এবং অপ্রকাশিত ডকুমেন্ট রিপোর্ট, পরিসংখ্যান, পাণ্ডুলিপি, চিঠিপত্র, ডায়েরি এবং অনুরূপ উৎস থেকে ধারণ করা তথ্যই হচ্ছে ডকুমেন্টারি বা কেস সংরক্ষণের উৎস।
ঘটনা লিপিবদ্ধকরণের উৎসগুলো হলো : ১. পাণ্ডুলিপি ২. চিঠিপত্র ৩. ডাইরি ৪. ডকুমেন্ট রিপোর্ট ৫. পরিসংখ্যান ৬. আদমশুমারি ৭. আত্মজীবনী ৮. বই ও সাময়িকী ৯. আইন ও বিধিবিধান ১০. আদালতের নথিপত্র ১১. বিদ্যালয়ের রেকর্ড ১২. অর্থনৈতিক নথিপত্র ১৩. সভা-সমিতির নথিপত্র ১৪. কবরস্থান সম্পর্কে রেকর্ড ১৫. ভাষণ প্রভৃতি।
ঘটনা লিপিবদ্ধকরণকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন : ১. পরিসংখ্যান রেকর্ড ২. সংরক্ষিত রেকর্ড ৩. লিখিত রেকর্ড ৪. প্রাথমিক সৃষ্ট ডকুমেন্ট ৫. সংগৃহীত উৎস থেকে ডকুমেন্ট ৬. সরকারি ৭. বেসরকারি ইত্যাদি ঘটনা লিপিবদ্ধকরণের কতকগুলো সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে। তারপরও বলা যায় ব্যক্তি সমাজকর্মে এসব তথ্যকে কাজে লাগিয়ে এর প্রয়োগযোগ্যতাকে আরো জনপ্রিয় করে তুলতে হয়।
৭. প্রশ্নমালা (Questionnair) : প্রশ্নমালা হলো কতিপয় প্রশ্নের তালিকা যেগুলো কতিপয় ব্যক্তির নিকট প্রেরণ করা হয়। এটি মানসম্মত ফলাফল নিশ্চিত করে, সেগুলো সারিবদ্ধ করা যায় এবং পরিসংখ্যানিকভাবে ব্যবহার করা যায়।আবার বলা যায় প্রশ্নমালা হচ্ছে তথ্য সংগ্রহের লক্ষ্যে ফরমের উপর বিষয় সংশ্লিষ্ট ক্রমানুসারে মুদ্রিত কতিপয় প্রশ্নের সমাহার।
প্রশ্নপত্র কৌশলের গঠন প্রণালি হলো :
১. সমগ্রক সম্পর্কে জ্ঞান লাভ ও প্রশ্নের সংখ্যা নির্ধারণ,
২. জটিল প্রশ্ন পরিহার করে সহজবোধ্য প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা,
৩. প্রশ্নমালার ভাষা ও শব্দ সংক্ষিপ্ত, সহজ ও সাবলীল হওয়া বাঞ্ছনীয়,
৪. প্রশ্নমালায় ব্যবহৃত প্রশ্নগুলো নিরপেক্ষ থাকা উত্তম,
৫. গবেষণার উদ্দেশ্যের সাথে প্রশ্নমালার প্রশ্নের সামঞ্জস্য থাকা,
৬. প্রশ্নের ধারাবাহিকতা ও যথার্থতা রক্ষা,
৭. লাজুক প্রশ্ন এড়িয়ে প্রশ্নমালা প্রণয়ন করা,
৮. প্রয়োজনীয় নির্দেশাবলি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা,
৯. প্রশ্নমালার ছকটি সুন্দর ও আকর্ষণীয় হওয়া আবশ্যক।
প্রশ্নমালা বিভিন্ন প্রকার হতে পারে। যেমন-
১. কাঠামোগত প্রশ্নমালা ২. অবকাঠামোগত প্রশ্নমালা ৩. উন্মুক্ত বা খোলা প্রশ্নমালা ৪. আবদ্ধ প্রশ্নমালা ৫. আনুসঙ্গিক প্রশ্ন ৬. ম্যাট্রিক্স প্রশ্নমালা ৭. সচিত্র প্রশ্নমালা
৮. ডকুমেন্টারি স্টাডি : দলিল বা নথিপত্র ব্যক্তি বা সমাজের বড় সম্পদ হিসাবে বিবেচিত। এর মাধ্যমে গবেষণার বিভিন্ন তথ্য সংগৃহীত হয়ে থাকে। ডকুমেন্ট বলতে আমরা বুঝি গবেষণা করতে ইচ্ছুক প্রপঞ্চ সম্পর্কে যে কোনো লিখিত উপাদান।
দলিল দস্তাবেজের উৎস হলো ২টি। যথা : ১. প্রাইমারি উৎস ২. মাধ্যমিক উৎস।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় যে, তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে বিভিন্ন কৌশল রয়েছে। এ কৌশলগুলোর সঠিক বাস্তবায়ন করতে পারলে তথ্যকে নির্ভুলভাবে সংরক্ষণ করা যায়। তথ্য সংগ্রহের জন্য এ কৌশলগুলো মুখ্য ভূমিকা পালন করে। তাই এগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম।