অথবা, কেয়ার বাংলাদেশের কার্যাবলিসমূহ বর্ণনা কর।
অথবা, কেয়ার বাংলাদেশের অবদানসমূহ ব্যাখ্যা কর।
অথবা, কেয়ার বাংলাদেশের ভূমিকাগুলো উল্লেখ কর।
উত্তর।৷ ভূমিকা : কেয়ার (CARE) এর পূর্ণ অর্থ Co-operation of American Relief Everywhere (কো-অপারেশন অব আমেরিকান রিলিফ এভরিহোয়ার)। এটি একটি অন্যতম আন্তর্জাতিক সমাজকল্যাণ সংস্থা। গোটা বিশ্বে এর কর্মকাণ্ড বিস্তৃত। বর্তমানে ৭০টি দেশে বিশ্ব দারিদ্র্য মোকাবিলায় সংস্থাটি কাজ করছে। ১৯৪৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি বেসরকারি আন্তর্জাতিক সংস্থা হিসেবে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
কেয়ার বাংলাদেশের কার্যাবলি : নিম্নে কেয়ার বাংলাদেশের প্রধান প্রধান কার্যাবলি সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো :
১. গ্রামীণ অবকাঠামো কর্মসূচি (Rural infrastructure program) : কেয়ার বাংলাদেশের রয়েছে গ্রামীণ অবকাঠামো সেক্টর। এ সেক্টরের উদ্দেশ্য হলো খাদ্যের নিশ্চয়তা প্রদান করে গরিব মানুষের জীবনমান স্থিতিশীল রাখার সুযোগ সৃষ্টি করা। কেয়ারের গ্রামীণ অবকাঠামো সেক্টর গ্রামীণ এলাকায় রাস্তাঘাট নির্মাণ, সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করে থাকে। এর মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয় এবং তাদের আয় উপার্জনের ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়।
২. সমন্বিত উন্নয়নের জন্য খাদ্য কর্মসূচি (Intergrate food for development program) : সমন্বিত উন্নয়নের জন্য খাদ্য কর্মসূচির প্রধান উদ্দেশ্য হলো গ্রামীণ জনসাধারণের আর্থসামাজিক উন্নয়নের গতিকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে বাজার ব্যবস্থার পরিধি বৃদ্ধি করে দ্রব্যসামগ্রী চলমান করা। তাছাড়া জনসাধারণের জন্য সেবার মান উন্নয়ন ও সুযোগসুবিধা বৃদ্ধি করাও এ কর্মসূচির উদ্দেশ্য। এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে কেয়ার বাংলাদেশ বছরে প্রায় ৩,০০০ মাইল মাটির রাস্তা পুনর্নির্মাণ ও তার রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করে। এ রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করে Rural Maintenance Programme বা RMP প্রকল্পের সদস্যরা। রাস্তাঘাট নির্মাণের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণ করাও কেয়ার বাংলাদেশের সমন্বিত উন্নয়নের জন্য খাদ্য কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত।
৩. বন্যা নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষামূলক প্রকল্প (Flood Controlling Pilot Project-FCPP) : কেয়ার বাংলাদেশ এর বন্যা নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষামূলক প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য দুটি। যথা : ১. বন্যার কবল থেকে স্থানীয় সম্পদ রক্ষায় সচেষ্ট হওয়া এবং ২. স্বল্প ব্যয়ে কারিগরি সহযোগিতায় গৃহনির্মাণ করে জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে বন্যার ক্ষতিকর অর্থনৈতিক প্রভাব কমিয়ে আনা।
৪. দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইউনিট (Disaster management) : কেয়ার বাংলাদেশ দুর্যোগ মোকাবিলার উদ্দেশ্যে ১৯৯৩ সালে USAID এর আর্থিক সহযোগিতায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইউনিট গড়ে তোলে। এ ইউনিটের প্রধান উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশ সরকার, এনজিওসমূহ এবং অন্যান্য সংস্থার কার্যক্রমে সহযোগিতার মাধ্যমে সমগ্র দেশের দুর্যোগ মোকাবিলায় গৃহীত কর্মকাণ্ডকে অধিকতর শক্তিশালী ও সময়োপযোগী করে তোলা।
উপসংহার : উপর্যুক্ত কর্মসূচিগুলো ছাড়াও কেয়ার বাংলাদেশ পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় ইউএনডিপির আর্থিক সহায়তায় সমষ্টি ক্ষমতায়ন বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে। তাছাড়া কানাডিয়ান আন্তর্জাতিক সংস্থা (CIDA) ও কেয়ার যৌথ অর্থায়নে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ভবিষ্যৎ ঝুঁকি মোকাবিলায় মানুষকে বিভিন্নভাবে সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করছে।রংপুর ও গাইবান্ধা অঞ্চলে কেয়ার ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে ফলপ্রসূ বিদ্যালয় শিক্ষা প্রকল্প চালু করেছে।