আল-শামস্ বাহিনী সম্পর্কে কী জান?

অথবা, আল-শামস্ বাহিনী কী?
উত্তর৷ ভূমিকা :
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধকে প্রতিহত করা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধ করার জন্য যেসব সশস্ত্র সংগঠন গঠিত হয় তার মধ্যে আল-শামস অন্যতম। মুক্তিযোদ্ধাদের নির্মমভাবে হত্যা, হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পদ লুট, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সহায়তা করা ছিল এ বাহিনীর অন্যতম প্রধান কাজ।
আল-শামস্ বাহিনী : আরবি শব্দ ‘আল-শামস্ যার অর্থ সূর্য। আল-শামস বাহিনী ছিল সশস্ত্র সংগঠন। ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসের শেষ দিকে আল-শামস্ বাহিনী গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় পকিস্তান জমিয়ত ই-তুলাবা বা পাকিস্তান ছাত্রসংঘ আল-বদর ও আল-শামস্ নামে দুটি প্যারামিলিটারি ইউনিট গঠন করে। দুষ্কৃতিকারী দমনের নামে আল-শামস্ দেশপ্রেমিক বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা ও নির্যাতন শুরু করে। জেনারেল নিয়াজি তার বই ‘দি বিট্রেয়াল অব ইস্ট পাকিস্তান’ নামক গ্রন্থের (মিজানুর রহমান কল্লোলের বঙ্গানুবাদকৃত) ৯০ পৃষ্ঠায় আল-শামস্‌স্কে সেতু, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও অন্যান্য এলাকা রক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয় বলে উল্লেখ করেছেন। আল-শামস্বা হিনী বিভিন্ন স্থানে অপারেশনে অংশ নেওয়া, তথ্যসংগ্রহ ও বেছে বেছে হত্যা, বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা, হিন্দুদের হত্যা করা, নারীদের উপর নির্যাতন করা, নারীদের পাকবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া প্রভৃতি বর্বরোচিত ও যুদ্ধপরাধের মতো ঘৃণ্য কাজে লিপ্ত হয়। দেশপ্রেমিক, শিক্ষক, গবেষক, সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, দার্শনিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, স্থপতি, ভাস্কর, সংস্কৃতিকর্মী ছিল তাদের হত্যার টার্গেট। আল-শামস্ বাহিনী অত্যন্ত নির্মমভাবে বাঙালিদের হত্যা করত।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, দুর্ধর্ষ বাহিনী হিসেবে আল-শামস্ত্রে পরিচয় পাওয়া যায়। আল-শামস্ বাহিনীর হীন ও ঘৃণ্য কার্যক্রম ছিল মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধের শামিল। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা ও পাকিস্তান রক্ষার জন্য তাদেরকে জাতি অত্যন্ত ঘৃণা করে থাকে।