অথবা, খোদার সিফাত সম্পর্কে আশারিয়াদের মতবাদ লেখ।
অথবা, আল্লাহ গুণাবলি সম্পর্কে আশারিয়াদের মতবাদ কী?
অথবা, খোদার সিফাত সম্পর্কে আশারিয়ারা কী মতবাদ দেন?
অথবা, আল্লাহর গুণাবলি সম্পর্কে আশারিয়াদের বক্তব্য সংক্ষেপে তুলে ধর।
উত্তর৷ ভূমিকা : মুতাজিলা সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া স্বরূপ আশারিয়া সম্প্রদায়ের আবির্ভাব। প্রচলিত মতবাদ ও মুতাজিলা মতবাদের পরস্পর বিরোধী ধারণা ও প্রতিদ্বন্দ্বী দৃষ্টিভঙ্গি মুসলিম চিন্তাধারায় বিশৃঙ্খলা ও বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে। প্রাচীন ধারণা ও প্রচলিত বিশ্বাসের মূলভিত্তিকে যখন গভীরভাবে নাড়া দেয়, তখন মধ্যপন্থি ও সহনশীল দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের মাধ্যমে সেগুলোর সমন্বয় সাধন ও সমস্যা সমাধানের জন্য এগিয়ে আসেন আশারিয়া সম্প্রদায়। তাই এ সম্প্রদায়ের গুরুত্ব অনস্বীকার্য।
আল্লাহর গুণাবলি সম্পর্কে আশারিয়াদের মত : আল্লাহর গুণাবলি সম্পর্কে আল আশারিয়া মত মুতাজিলা বিরোধী। কুরআনের বিধৃত পরম স্রষ্টা আল্লাহর বিশুদ্ধ ধারণার সমর্থনের প্রেরণায় তিনি হয়েছিলেন উদ্বুদ্ধ।
মুতাজিলাদের মতবাদকে তিনি বর্জন করেন। আল্লাহকে সকল প্রকার গুণ বর্জিত বলে অভিহিত করায় তিনি বলেছেন, জ্ঞান, শক্তি, প্রাণ প্রভৃতি আবশ্যিক স্বর্গীয় গুণ চিরন্তন এবং এগুলো আল্লাহর স্বরূপ বা অন্তঃসারের মধ্যে নিহিত। তবে এগুলোকে আল্লাহর অন্তঃসারের সমর্থক বলা চলে না। তাহলে এর অর্থ এ হবে যে, জ্ঞান, শক্তি, প্রাণ প্রভৃতি ঐশী গুণ
এবং আল্লাহ্ অভিন্ন । আশারিয়াদের মতে, আল্লাহ্ অবশ্যই গুণাবলির অধিকারী। তবে এর ভিন্ন অর্থ রয়েছে। আল্লাহর সত্তায় আরোপিত গুণাবলিকে মানসিক সত্তায় আরোপযোগ্য নয় বলে ধরে নিতে হবে। তবে এ সম্পর্কে প্রশ্ন উত্থাপন করা যুক্তিযুক্ত হবে না। কেননা মানুষের বেলায় আরোপিত গুণাবলি আল্লাহর বেলায় আরোপিত হলে ভিন্ন অর্থ বহন করবে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, আশারিয়ারা আল্লাহর গুণাবলিকে অস্বীকার করেন। তাদের মতে, মানবিক গুণাবলির মাধ্যমে আল্লাহর গুণাবলিকে বিচার করা যায় না, বরং এ সম্পর্কে কোন প্রশ্ন না তোলাই যুক্তিযুক্ত। আশারিয়ারা বলেছেন, বুদ্ধি দিয়ে যাকে জানা যায় না, তাকে বিশ্বাসের দ্বারাই জানতে হয়। সুতরাং আল্লাহর গুণাবলিকে অস্বীকার করা যায় না।