✍️বাংলাদেশের বহুমুখী খামারের অসুবিধাসমূহ কী কী ?

[ad_1]

✍️বাংলাদেশের বহুমুখী খামারের অসুবিধাসমূহ কী কী ?

উত্তর : বাংলাদেশের বহুমুখী খামারের অসুবিধাসমূহ নিম্নরূপ :

১. কৃষকের দক্ষতা হ্রাস : বহু ফসল উৎপাদন করা হয় বলে কৃষকের ফসল উৎপাদন দক্ষতা হ্রাস পায় । এর ফলে গড় উৎপাদন হ্রাস পায় । ঘটে না ।

২. উন্নত ধ্যানধারণার অভাব : বহুমুখী খামার সাধারণত জীবন নির্বাহী হয়ে থাকে । পরিবারের ভরণ পোষণের জন্যই এ ধরনের খামার পরিচালিত হয় । কৃষকদের মনে বাণিজ্যিক ধ্যানধারণা ও উন্নত জীবনযাপনের চিন্তাভাবনার বিকাশ .

৩. সফল পরিবেশের উপযোগী নয় : দেশের সফল অঞ্চলে ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশে বহুমুখী খামার পরিচালনা করা সম্ভব নয় ।

৪. উপকরণ সংগ্রহের অসুবিধা : বহু ফসলি খামারে বহুমুখী উপকরণ সংগ্রহ করতে হয় । এর ফলে উপকরণ সংগ্রহে সময় বেশি । এবং শ্রমিক বেশি লাগে ।

৫. উন্নত প্রযুক্তি প্রয়োগে অসুবিধা : বহুমুখী খামারের উন্নত প্রযুক্তি প্রয়োগে অসুবিধা হয় । কারণ এ ধরনের জমিতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে বিভক্ত করে বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করা যায় ।

৬. বাজারজাতকরণে অসুবিধা : বহুমুখী খামারে উৎপাদিত ফসল বাজারজাতকরণে ব্যয় বেশি হয় । কারণ একাধিক ফসল একাধিক বাজারে পাঠাতে হয় । ক্রয় ফলে পরিবহন ও যাতায়াত ব্যয় বাড়ে । আবার সময়ও বেশি লাগে ।

✍️উন্নত দেশ এবং বাংলাদেশের মতো অনুন্নত দেশের কৃষি কাঠামোর পার্থক্য আলোচনা কর ।

উত্তর : উন্নত দেশসমূহের কৃষি কাঠামোর ও অনুন্নত দেশসমূহের কৃষি কাঠামোর মধ্যে সুস্পষ্ট রয়েছে । নিম্নে প্রধান প্রধান পার্থক্য আলোচনা করা হচ্ছে ।

১. অনুন্নত বা স্বল্পোন্নত দেশের কৃষিকে সনাতন কৃষি বলা হয় । পক্ষান্তরে , উন্নত দেশের কৃষিকে আধুনিক কৃষি বলা হয় ।

২. অনুন্নত দেশ কৃষিখাতে সর্বাধিক কর্মসংস্থান যোগায় । কিন্তু উন্নত উন্নত দেশ বিভিন্ন উৎপাদন খাতের মধ্যে কৃষি একটি উৎপাদন খাত মাত্র ।

৩. উন্নত দেশে কৃষি একটি ব্যবসা । চাষি মুনাফার উদ্দেশ্য কৃষিকাজ সম্পাদন করে । কিন্তু স্বল্পোন্নত দেশে চাষি নিজে পরিবারের খাদ্যের নিরাপত্তার জন্য কৃষিকাজ করে থাকে ।

৪. উন্নত দেশে কৃষক সাধারণত শিল্পখাতে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ থেকে উচ্চতর আয়ের অধিকারী হয় । কিন্তু অনুন্নত দেশে কৃষক সাধারণত অতি অল্প আয়ের অধিকারী হয় এবং অন্যান্য খাতের নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গের আর্থিক অবস্থা উন্নততর হয় ।

৫. কোন কোন অনুন্নত দেশে কৃষির মধ্যে ছোট আধুনিক বাণিজ্যিকভিত্তিক কৃষির উপখাত সৃষ্টি করে । দ্বৈততা বিরাজ করে । কিন্তু উন্নত দেশে সমগ্র কৃষিখাত বাণিজ্যভিত্তিক ।

৬. উন্নত দেশে কৃষক অন্যান্য ব্যবসায়ীর মতো ঝুঁকি নতুন উৎপাদন পদ্ধতি গ্রহণ করে । কিন্তু অনুন্নত দেশে কৃষক ঝুঁকিবিহীন যুগ যুগ ধরে পরীক্ষিত ও ব্যবহৃত উৎপাদন পদ্ধতি ব্যবহার করে ।

৭. উন্নত দেশের কৃষি সমগ্র অর্থনীতির মধ্যে আত্মীকৃত হয়েছে । কিন্তু অনুন্নত দেশে কৃষিখাতে দেশের অর্থনীতির মধ্যে আত্মীকৃত হয় নি । মূল্য ব্যবস্থার মাধ্যমে সমগ্র অর্থনীতির মধ্যে বিভিন্ন খাতে যেভাবে উপকরণের বিলিবণ্টন হয় সে বিলিবণ্টন ব্যবস্থার মধ্যে কৃষিখাত অন্তর্ভুক্ত নয় ।

✍️অর্থনৈতিক জোত কাকে বলে ?

উত্তর : কৃষির ফলন বৃদ্ধি করতে হলে কৃষি – খামারের আয়তন পরিমিত হওয়া বাঞ্ছনীয় । অর্থনৈতিক জোতের পরিমানের ব্যাপারে অর্থনীতিবিদগণের মধ্যে মতবিরোধ আছে । তবে সাধারণত কৃষিজোতের পরিমাণ এমন হওয়া উচিত যাতে নিয়োজিত শ্রম ও মূলধনের পুরোপুরি ব্যবহার করা সম্ভবপর হয় । অর্থনৈতিক জোতের পরিমান কতটুকু হবে তা নির্দিষ্ট করে বলা মশকিল । একজন কৃষকের পক্ষে সর্বোত্তম সর্বাপেক্ষা লাভজনক ভাবে যতটুকু জমি চাষ করা সম্ভব এবং একটি সংসার স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে প্রতিপালনের জন্য যা যথেষ্ট , তাই আর্থিক জোত । ডঃ ম্যানের মতে , “ অর্থনৈতিকজোেত এমন একটি জমি যা একটি পরিবারের জন্য সন্তোষজনক বলে বিবেচিত ন্যূনতম স্বাচ্ছন্দ্যের উপকরণ যোগ্যতা সক্ষম ।

” নির্বাহের উপযুক্ত স্বাচ্ছন্দ্য প্রদান করতে পারে । ”

উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে এটি পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে যে , কোন একটি নির্দিষ্ট এককের মধ্যে অর্থনৈতিক জোতকে সীমাবদ্ধ করা যায় না । সকল জমির উর্বরতা সমান নয় , সর্বত্র জলসেচের সুবিধা সমান নেই এবং সর্বত্র কৃষি পদ্ধতি একরূপ নয় । সুতরাং অর্থনৈতিক জোতের পরিমাণ স্থির করার সময় এসব বহুবিধ বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হয় ।

✍️ শিল্পের উপর কৃষির নির্ভরশীলতা ব্যাখ্যা কর ।

উত্তর : শিল্পের উপর কৃষির নির্ভরশীলতা :

১. শিল্পের প্রসারতা : কৃষি উন্নয়নের জন্য শিল্পের প্রসারতা আবশ্যক । কৃষির আধুনিকীরণের জন্য শিল্পের বিকল্প নেই । এ কারণে কৃষি উন্নয়নের জন্য দেশে শিল্প কারখানা স্থাপন আবশ্যক ।

২. পণ্যের প্রক্রিয়াজাতকরণ : আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের বেশির ভাগ বাণিজ্য কাঁচামালের মাধ্যমে হয় বিধায় পণ্যের সর্বোচ্চ মূল্য লাভ সম্ভব হয় না । তাই অনুকূল ভারসাম্যের জন্য আমাদের দেশে শিল্প বৃদ্ধি করা আবশ্যক ।

৩. কৃষি পণ্যের অপচয় রোধ : কৃষিপণ্যের অপচয় রোধের জন্য আমাদের বেশি পরিমাণে শিল্প স্থাপন করা উচিত উদ্বৃত্ত মালামালের অর্থনৈতিক ব্যবহারের জন্য আমাদের দেশে শিল্পের পরিমাণ বৃদ্ধি করা উচিত ।

৪. কাঁচামাল চাহিদা বৃদ্ধি : শিল্পের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে কাঁচামালের চাহিদা ও বৃদ্ধি পাবে । উৎপাদনের উপকরণ হিসেবে কাঁচামালের চাহিদা বৃদ্ধি পেলে কৃষকেরা নিজ নিজ পণ্যের সর্বোচ্চ মূল্য লাভ করে অধিক উৎপাদনের উৎসাহ ফিরে পাবে ।

৫. আমদানি হ্রাস : কৃষিতে বেশি উৎপাদনের জন্য রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবহার আবশ্যক স্থানীয়ভাবে এসব উপকরণ তৈরি সম্ভব হলে আমদানি খাতে ব্যয় হ্রাস পাবে । কাজেই কৃষি উপকরণের আমদানি হ্রাস করার জন্য শিল্প খাতের উন্নতি করতে হবে ।

✍️ দারিদ্র্য বিমোচনে মৎস্য অধিদপ্তরের কার্যক্রম আলোচনা কর ।

উত্তর : মৎস্য অধিদপ্তরের অধিকাংশ কার্যক্রম দারিদ্র্য বিমোচনকে কেন্দ্র করে বাস্তবায়িত হচ্ছে । মৎস্য চাষ কার্যক্রম জোরদার করার জন্য রাজস্ব বাজেটের আওতায় ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির অধিনে অভীষ্ট জনগোষ্ঠীর মাঝে প্রায় ৪.৫ কোটি টাকা ক্ষুদ্র ঋণ হিসাবে বিতরণ করা হয়েছে । এ ছাড়া সমন্বিত মৎস্য চাষের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন প্রকল্পের মাধ্যমে ২৩ কোটি এবং অন্যান্য প্রকল্পের মাধ্যমে আরো ২.৫ কোটি সর্বমোট ৩০ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে । মৎস্য অধিদপ্তরের অধীনে পরিচালিত এ ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে গ্রামীণ দারিদ্র্য জনগোষ্ঠী তথা মৎস্যচাষি দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে । বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প ও রাজস্বখাত হতে ঋণ প্রাপ্ত সুফলভোগীর সংখ্যা বর্তমানে প্রায় ২ লক্ষ ৬০ হাজারে উন্নীত হয়েছে । সুফলভোগদের মাঝে বিতরণকৃত ঋণের আদায়ের হার বেশ ফলপ্রসূ ।

✍️ কৃষি চাষাবাদ খামার ধারণা ও প্রকারভেদ আলোচনা কর ।

উত্তর : খামার বলতে সকল রকমের ভূমি ব্যবস্থাকে নির্দেশ করে । পৃথিবীর বিস্তৃত এলাকা যেখানে কৃষি , শিল্প ও অন্যান্য সকল প্রকার উৎপাদন কাজ পরিচালিত হয় সেসব ক্ষেত্রই খামার । খামারের আয়তন বড় কিংবা ছোট যে কোন ধরনের হতে পারে । তবে যে ভূমিতে কৃষি কাজ করা হয় তাকে কৃষি খামার বলে । কৃষি খামারের চাষাবাদের প্রকৃতি ও আয়তনের দিক দিয়ে এটাকে দুভাবে ব্যাখ্যা করা যায় । ক . জীবন নির্বাহী খামার ( Subsistance Farm ) : জীবন নির্বাহী খামার বা পারিবারিক খামার বা আত্মতোষণ খামার বলতে সে আয়তনের ভূখণ্ডকে নির্দেশ করে যেখানে উৎপাদনের সুষ্ঠু প্রয়োগের ফলে একর প্রতি যে ফসল উৎপন্ন হয় । এর আয় হতে ঐ ভূমি খণ্ডে নিয়োজিত কৃষক এবং তার পরিবার মোটামুটি জীবন নির্বাহে সক্ষম । অর্থাৎ জীবন নির্বাহের জন্য কৃষক যে ভূমি খণ্ডে ফসল উৎপাদন করে তাকে জীবন নির্বাহী খামার বলে ।

বাণিজ্যিক খামার ( Commercial Fram ) : বাণিজ্যিক খামার বা বিশেষায়িত খামার বলতে ঐ খামারকে নির্দেশ করে যেখানে উৎপাদনকারী বৃহদায়তন ভিত্তিক উৎপাদন কার্যক্রম বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পরিচালনা করে । বাণিজ্যিক খামারের মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে উৎপাদিত ফসল বিক্রি করে উদ্বৃত্ত সৃষ্টির মাধ্যমে অস্বাভাবিক মুনাফা সর্বোচ্চকরণ । এ ধরনের খামার অসংখ্য শ্রম নিয়োগ করে উৎপাদন কার্য পরিচালনা করা হয় , যার ব্যবস্থাপনার ও পরিচালনার দ্বারা উৎপাদিত দ্রব্য বাজারজাতকরণ করা হয় । তা থেকেই মুনাফা সৃষ্টি করে অর্থনৈতিক সুবিধা বড় করে দেখা হয় ।

✍️ সবুজ বিপ্লব কী ?

উত্তর : সবুজ বিপ্লৰ : সবুজ বিপ্লব মূলত কৃষি উন্নয়নের সাথে সম্পর্কিত একটি ধারণা । বিপ্লব বলতে সাধারণত কোন কিছুর আমূল পরিবর্তনকে বুঝায় । কোন বস্তুর পরিমাণগত পরিবর্তনের মাধ্যমেই তার গুণগত পরিবর্তন আসে । উচ্চ ফলনশীল ধান ও গমের বীজ কৃষি ক্ষেত্রে প্রবর্তনের কৃষি উৎপাদনে যে অভূতপূর্ব ইতিবাচক লক্ষ্য করা যায় অর্থনীতিবিদগণ তাকেই সবুজ বিপ্লব হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন । আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্কার এক সময়কার প্রশাসক William Gand ১৯৬৮ সালে ওয়াশিংটনে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সমিতির এক সভায়

” The Green Revolution : Accomplaments and Apprehecsions ” নামক বক্তৃতায় সবুজ বিপ্লব কথাটিকে একটি রাজনৈতিক শ্লোগান হিসেবে অভিহিত করেছেন । সবুজ বিপ্লব হলো কৃষি উৎপাদনের এক বিরাট পরিবর্তন । সবুজ বিপ্লব কথাটি সংকীর্ণ ও বিস্তৃত এ দু অর্থে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে । কোন কোন অর্থনীতিবিদ বিস্তৃত অর্থে অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর কৃষিখাতের ব্যাপক পরিবর্তনের বিষয় অর্থাৎ খাদ্য ঘাটতি দূর করা এবং দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য কৃষিখাতের আমূল পরিবর্তনের বিষয়টি সবুজ বিপ্লব হিসেবে নির্দেশ করেছেন । আবার অনেকে সংকীর্ণ অর্থে এটাকে উচ্চ ফলনশীল ধান ও গমের উৎপাদনের সাথে সম্পৃক্ত করে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর খাদ্য সমস্যার একমাত্র সমাধান হিসেবে চিহ্নিত করেছেন ।

✍️ সবুজ বিপ্লব কী ?কৃষিক্ষেত্র প্রাতিষ্ঠানিক ঋণের উৎসসমূহ কী কী ?

উত্তর : প্রাতিষ্ঠানিক ঋণের উৎসসমূহ : কৃষি ঋণের উৎসসমূহ মূলত নিম্নোক্ত ছয় ধরনের । যেমন :

১. বাংলাদেশ ব্যাংক

২. রাষ্ট্রীয় ও বাণিজ্যিক ব্যাংক ও বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক ।

৩. বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ।

৪. সমবায় ব্যাংক ও সমিতিসমূহ ।

৫. বাংলাদেশ পল্লি উন্নয়ন বোর্ড ।

৬. গ্রামীণ ব্যাংক ।

✍️ প্রাতিষ্ঠানিক ঋণের অসুবিধাসমূহ আলোচনা কর ।

উত্তর : প্রাতিষ্ঠানিক ঋণের অসুবিধাসমূহ : প্রাতিষ্ঠানিক ঋণের নিম্নোক্ত অসুবিধাসমূহ রয়েছে ।

১. প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ সময়মতো পাওয়া যায় না । কৃষকের কোন ঋতুতে ফসল উৎপাদনের জন্য ঋণের প্রয়োজন হলে যে সময়ে ঋণ প্রয়োজন ঋণ পেতে সে সময় পার হয়ে যায় ।

২. গ্রামের ক্ষুদ্র ও দরিদ্র কৃষকরা অশিক্ষিত । প্রান্তিক পর্যায়ে ঋণ পেতে যে ফর্মালিটির প্রয়োজন হয় তা কৃষকরা বুঝে না । ফলে দালালদের সম্মুখীন হতে হয় ।

৩. প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আমলাতান্ত্রিক মনোভাবের জন্য কৃষকদের পক্ষে প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ গ্রহণ করা দুঃসাধ্য ব্যাপার ।

৪. সরকারি / প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ের ঋণ দান পদ্ধতি অত্যন্ত জটিল ও হয়রানিমূলক বলে কৃষক সহজে এ ধরনের ৫. অনেক সময় প্রতিষ্ঠানিক উৎসের কাছে বেশি পরিচিতির জন্য কোন জামানত দিতে হয় না । এ ক্ষেত্রে কৃষকরা অপ্রতিষ্ঠানিক ঋণ নিতে আগ্রহী হয় । করতে পারেন । ও অনেক ক্ষুদ্র ও ভূমিহীন কৃষক রয়েছে যারা জামানত দিতে পারে না । তারা প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ পাওয়ার কথা চিন্তা ৭. প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ সংগ্রহ করতে সময় ও ব্যয় পড়ে বেশি ।

✍️কৃষির যান্ত্রিককরণ ও আধুনিকীকরণ এর মধ্যে পাথ্যক্য লিখ ।

উত্তর : কৃষির যান্ত্রিককরণ ও আধুনিকায়নের পার্থক্য : কৃষির যান্ত্রিককরণ এবং আধুনিকায়নের মধ্যে আপাত মিল থাকলেও এ দুটি ধারণার মধ্যে কিছু মৌলিক পার্থক্য রযেছে । যেমন –

১. যান্ত্রিকীকরণ বলতে শুধু চাষাবাদের যন্ত্রের ব্যবহারকে বুঝায় । পক্ষান্তরে , আধুনিকায়ন কৃষিখাত বলতে চাষাবাদ ছাড়াও কৃষির অপরাপর সকল স্তরে আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগকে বুঝায় ।

২. কৃষি যান্ত্রিকীকরণ মূলত কৃষি উন্নয়নের একটি আবশ্যিক দিক নির্দেশ করে । পক্ষান্তরে , কৃষির আধুনিকায়ন কৃষিখাতের সামগ্রিক উন্নয়নের দিক নির্দেশ করে ।

৩. কৃষি যান্ত্রিকীকরণ কৃষির আধুনিকায়ন নির্দেশ করে । আধুনিকায়নের একটি বিশেষ পর্যায় হলো যান্ত্রিকীকরণ । কিন্তু আধুনিকায়ন অবশ্যই যান্ত্রিকীকরণ নির্দেশ করে ।

৪. যান্ত্রিকরণের তুলনায় আধুনিকায়ন ধারণাটি অধিকতর ব্যাপক । প্রকৃতপক্ষে যান্ত্রিকীকরণ হলো আধুনিকায়নের একটি পর্যায় মাত্র । এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে , সাধারণভাবে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ এবং আধুনিকরণের মধ্যে কোন পার্থক্য করা হয় না । আধুনিকায়ন এবং যান্ত্রিকরণকে একই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিচার করা হয় । অথবা বর্তমান আলোচনায় কৃষির আধুনিকায়নকে একই সাথে যান্ত্রিকীকরণ হিসেবেও বিবেচনা করা যায় ।

✍️উফশী প্রযুক্তি বলতে কী বুঝায় ?

উত্তর : উফশী প্রযুক্তি : কৃষিখাতে উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি , উন্নত বীজ , পর্যন্ত পরিমাণে সার , কীটনাশক ও যান্ত্রিক সেচ ব্যবস্থার প্রয়োগকে উচ্চ ফলনশীল প্রযুক্তি বা সংক্ষেপ উফশী প্রযুক্তি বলা হয় । সংক্ষেপে উন্নত বীজ ও আধুনিক উপকরণের সাহায্যে কৃষি কাজ পরিচালনা করাকে উফশী প্রযুক্তি বলে ।

এ প্রযুক্তির অন্তর্ভুক্ত ধারণাগুলো হলো :

১. গভীরভাবে ভূমি কর্ষণ ( কলের লাঙ্গলের সাহায্যে ) ,

২. উচ্চ ফলনশীল বীজ বপন ও ( সারিবদ্ধভাবে চারা রোপণ ) ,

৩. যন্ত্রের সাহায্যে ( অগভীর নলকূপ ) সেচকার্য পরিচালনা ,

৪. প্রয়োজনমতো কীটনাশক ও বাইনাশক এর ব্যবহার ,

৫. উন্নত যন্ত্রের সাহায্যে ফসল পরিচর্যা এবং নিড়ানি ,

৬. যন্ত্রের সাহায্যে ধান মাড়াই এবং

৭. জলাবদ্ধ জমি থেকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি । উপরে উল্লিখিত বিষয়গুলো একযোগে কিংবা অধিকাংশ একত্রে প্রয়োগকে উচ্চ ফলনশীল প্রযুক্তি বলে । অন্যভাবে বলা যায় যে , উফশী কোন একক প্রযুক্তি নয় । বরং কয়েকটি কৃষি উপকরণ মিলে উফশী প্রযুক্তি গঠিত হয়েছে । উল্লেখ্য উফশী প্রয়োগের মূল লক্ষ্য হলো একর প্রতি ফলন বাড়ানো এবং একই সাথে উৎপাদন ব্যয় হ্রাস করা । আশার কথা এই যে , বাংলাদেশে গত দুই দশক ধরে উফশী প্রযুক্তির ব্যবহার ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং জমির উৎপাদনশীলতা বিশ শতকের ৫০-৭০ দশকের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে ।

✍️কৃষি প্রযুক্তি বলতে কী বুঝায় ?

উত্তর : কৃষি প্রযুক্তি : প্রযুক্তি বলতে উৎপাদনের উপকরণ ব্যবহারের কলাকৌশল ও পদ্ধতিকে বুঝায় । কাজেই কৃষি উপকরণ ব্যবহারের পদ্ধতি ও কলাকৌশলের প্রয়োগকে কৃষি প্রযুক্তি বলে । উৎপাদনের উপকরণ সাধারণত ৪ টি । যথা : ভূমি , শ্রম , মূলধন এবং সংগঠন । কৃষি উপকরণের অন্তর্ভুক্ত কয়েকটি বিষয় হলো : চাষযন্ত্র , সেচযন্ত্র , সার , কীটনাশক , উন্নত বীজ ইত্যাদি । অতএব কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে এসব উপকরণের সর্বাধিক দক্ষতাপূর্ণ ব্যবহার ও প্রয়োগের কলাকৌশলকে কৃষি প্রযুক্তি বলা হয় । কোন দেশ যত দক্ষতার সাথে উপকরণের ব্যবহার করতে পারবে সে দেশের প্রযুক্তি তত উন্নত বলে বিবেচিত হবে ।

কৃষি প্রযুক্তির সাথে জড়িত তথা কৃষি উৎপাদনের সাথে জড়িত কয়েকটি স্তর হলো : ১. ভূমিকর্ষণ , সেচ ও তার প্রয়োগ ; ২. বীজ বপন ও চারা রোপণ ; ৩. নিড়ানি , পরিচর্যা , ৪. ফসল কাটা ও মাড়াই ৫. ফসল সংরক্ষণ / গুদামজাতকরণ ; ৬. শস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ / বাছাইকরণ ও ৭. শস্য বাজারজাতকরণ । কাজেই ভূমি ‘ নর্মাণ কর্ষণ থেকে আরম্ভ করে বাজারজাতকরণ পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে প্রাপ্ত উপকরণের প্রয়োগ কৌশলই হলো কৃষি প্রযুক্তি । উন্নত গবেষণা ও আবিষ্কারের মাধ্যমে প্রযুক্তির উন্নয়ন সাধন করা যায় । নতুন নতুন আবিষ্কারের ফলে বিশ্বে নিয়ত প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটেছে । বাংলাদেশে ও নিরন্তর প্রযুক্তির বিকাশ অব্যাহত রয়েছে । ১৯৫০-৬০ এর দশকে এই বাংলাদেশেই একর প্রতি ধানের ফসল ৫ থেকে ৭ মণ । তখন উন্নয়ন বীজ , সার ও কীটনাশকের ব্যবহার ছিল না । অথচ ১৯৯০ ২০০০ এর দশকের উন্নত বীজ , সার কীটনাশক ও সেচযন্ত্র ব্যবহারের ফলে উৎপাদন ৪ গুণ থেকে ৬ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে ।

[ad_2]