✍️যৌথ খামার কী ?

[ad_1]

✍️যৌথ খামার কী ?

উত্তর : সমাজতন্ত্রের পরিপূর্ণ অবস্থায় কৃষিতে যৌথ খামার প্রতিষ্ঠিত হয় । যৌথ খামার জমির মালিকানা ব্যক্তির নিকট থেকে রাষ্ট্রের নিকট হস্তান্তরিত হয় । জমির উপর ব্যক্তিগত মালিকানার চিহ্ন থাকে না । দেশের সমগ্র কৃষি জাতের উপর সামাজিক মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয় । সমবায় খামারের সঙ্গে যৌথ খামার পার্থক্য এই যে , সমবায় খামারের জমির উপর চাষিরা ব্যক্তিগত মালিকান্না অক্ষুন্ন থাকে এবং যেকোন সময়ে সে তার জমি নিয়ে সমবায় থেকে বের হয়ে যেতে পারে । কিন্তু যৌথ খামারে জমির ব্যক্তিগত মালিকানা বিলোপ সাধন করা যায় । দেশের সমস্ত মালিকানা বিলোপ সাধন করা যায় । দেশের সমস্ত কৃষিজমির মালিকানা রাষ্ট্রের নিকট অর্পণ করা হয় ।

দ্বিতীয়ত , সমবায় কৃষি খামার কৃষকেরা স্বেচ্ছায় সম – মর্যাদার ভিত্তিতে নিজেদের জমি , শ্রম ও মূলধন একত্রিত করে সমবায় সমিতি গঠন করে এবং প্রত্যেক চাষি তার জমি , মূলধন এবং শ্রম অনুযায়ী নিজের প্রাপ্য অংশ গ্রহণ করে । পক্ষান্তরের , যৌথ খামার আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং কৃষি উৎপাদন ও বন্টন রাষ্ট্র কর্তৃক পরিচালিত হয় । যৌথ খামারের সুবিধা এই যে , জমির রাষ্ট্রীয়করণ দ্বারা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যক্তিগত জোতের বিলোপ সাধন করে বৃহদায়তন কৃষি খামার গঠন করা যায় এবং এসব খামার পেশাদারি ম্যানেজারের হাতে ন্যস্ত করে বৃহদায়তন উৎপাদন ব্যয়সংকোচের সুবিধাগুলো লাভ করা সম্ভবপর হয় ।

ফলে এ ব্যবস্থায় জমির অর্থনৈতিক ব্যবহার নিশ্চিত হয় এবং ভূমি কৃষিতে ব্যক্তিগত মালিকানা না থাকার ফলে কৃষকের কর্মোদ্যম হ্রাস পাবে এবং তাতে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হবে । কিন্তু এরূপ আশঙ্কা নিতান্তই অসম্ভব । কারণ শিক্ষা সামাজিক মর্যাদা দান এবং পুরস্কারের দ্বারা কৃষকদেরকে উৎসাহিত করে রাষ্ট্রায়ত্ত কৃষির উৎপাদন উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি করা সম্ভব ।

✍️ বাংলাদেশে ক্ষুদ্রায়তন খামারের সমস্যাবলি আলোচনা কর ।

উত্তর ভূমিকা : বাংলাদেশে ক্ষুদ্রায়তন খামারের আধিক্য রয়েছে । এসব ক্ষুদ্রায়তন খামারের আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা দুঃসাধ্য । ফলে খামারের ক্ষুদ্র আয়তন আমাদের কৃষির আধুনিকায়নের পথে বাধার সৃষ্টি করছে ।

ক্ষুদ্রায়তন খামারের সমস্যা : নিম্ন ক্ষুদ্রায়তন খামারের প্রধান সমস্যাগুলো আলোচনা করা হলো :

১. যান্ত্রিকরণের অসুবিধা : কৃষিতে মনুষ্য ও পশুশক্তির পরিবর্তে যন্ত্রশক্তি ব্যবহার করলে চাষাবাদের দক্ষতা বৃদ্ধি পায় । কিন্তু ছোট ছোট খামারে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা যায় না ।

২. সঞ্চয়ের স্বল্পতা : স্বাভাবিক কারণেই ক্ষুদ্রায়তন খামারের সঞ্চয় কম । জীবন ধারণের উপযোগী ছোট খামারে উদ্বৃত্ত কম হয় বলে সঞ্চয় ও বিনিয়োগ সম্ভব হয় না ।

৩. উচ্চ ফলনশীল বীজের ব্যবহার : উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ ব্যবহারের ফলে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পায় । কিন্তু উচ্চ ফলশনীল জাতের বীজ ক্রয় ব্যয় ও এদের ব্যবহারের ঝুঁকির পরিমাণ বেশি । জীবনধারণের উপযোগী ছোট খামার উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ ক্রয়ের ব্যয় ঝুঁকিবহন করতে হয় না ।

৪. বিপণনের সমস্যা : ছোট খামারের উৎপাদন ও বিক্রয়ের পরিমাণ কম । ছোট খামারের বিক্রয়ের পরিমাণ কম বলে এদের বিক্রয় খরচ বেশি পড়ে ।

৫. ঋণের সমস্যা : ক্ষুদ্রায়তন খামারের আয় ও সম্পদের পরিমাণ কম । ছোট খামারের বিক্রয় পরিমাণ কম বলে জামানতের অভাবে প্রাতিষ্ঠানিক ঋণের সুযোগ গ্রহণ করতে পারে না ।

৬. ঝুঁকি গ্রহণের অনিচ্ছা : আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি ব্যয়বহুল বলে ক্ষুদ্র খামার আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ঝুঁকি নিতে চায় না ।

৭. উপকরণ ক্রয়ের সমস্যা : ছোট খামার একসঙ্গে অধিক পরিমাণে সার বীজ কীটনাশক ওষুধ ক্রয় করে না । ফলে এরা পাইকারি দামের সুবিধা ভোগ করতে পারে না ।

৮. ছদ্মবেশী বেকারত্ব : বিকল্প নিয়োগের অভাবে ছোট খামার পরিবারের সকলেই নিয়োজিত থাকে । এদের মধ্যে থেকে বাড়তি লোকদেরকে সরিয়ে নিলেও উৎপাদন হ্রাস পায় না । ফলে এসব লোকদের প্রান্তিক উৎপাদন শূন্য । ফলে এসব শ্রমিককে ছদ্মবেশী বেকার বলে ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় উক্ত সমস্যাবলি দূর করে ক্ষুদ্রায়তন খামারকে দক্ষ করে গড়ে তুলা সম্ভব ।

✍️ ক্ষুদ্রায়তন খামারের সমস্যাসমূহের সমাধানের উপায়সমূহ আলোচনা কর ।

উত্তর : ক্ষুদ্রায়তন খামারের সমস্যাবলি সমাধানের উদ্দেশ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় :

১. সমবায়ের মাধ্যমে বৃহদায়তন খামার গঠন : বাংলাদেশের ক্ষুদ্রায়তন খামারের আয়তন এতই ছোট যে , আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতির প্রয়োগ সম্ভব নয় । সুতরাং কৃষির আধুনিকীকরণের স্বার্থে দেশে বৃহদায়তনের খামার গঠন উৎসাহিত করা প্রয়োজন । সরকারি সহযোগিতার কৃষকেরা সমিতি গঠন করে খামারগুলো একত্রিত করে বৃহদায়তন খামার গঠন করা যেতে পারে । অবশ্য আমাদের দেশে সমবায় আন্দোলনের সাফল্য খুবই সীমিত ।

২. যৌথ খামার : সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোতে যৌথ খামার গঠনের মাধ্যমে বৃহদায়তন খামার গঠিত হয়েছিলো এই পদ্ধতিতে আইনের সাহায্যে একটি নির্দিষ্ট এলাকা নিয়ে যৌথ খামার গঠিত হয় ।

৩. বাজার স্থিতিশীলকরণ : বাজারের অস্থিতিশীলতার কারণে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয় । অসৎ ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে চাষের মৌসুমে উপকরণের দাম বৃদ্ধি পায় ও ফসলের মৌসুমে কৃষিপণ্যের মূল্য পড়ে যায় । এতে ক্ষুদ্র খামারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় ।

৪. কৃষি ঋণের যোগান বৃদ্ধি : পর্যাপ্ত জামানতের অভাবে আমাদের ছোট খামারের মালিকেরা প্রাতিষ্ঠানিক ঋণের সুবিধা ভোগ করতে পারে না ।

৫. এন . জি . কমসূচির সম্প্রসারণ : বর্তমানে আমাদের দেশে কতিপয় এন . জি . ও ভূমিহীন ও ছোট খামারের জন্য ক্ষুদ্র ঋণদান কর্মসূচি গ্রহণ করছে । এ ধরনের ঋণদান কর্মসূচি উৎসাহ প্রদান করা হয় ।

৬. কৃষি সেবা বিক্রয়ের ব্যবস্থা : ছোট খামারের পক্ষে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয় ও এদের কাম্য ব্যবহার সম্ভব হয় না । সুতরাং যন্ত্রপাতি , পাওয়ার টিলার প্রকৃতি কৃষি উপকরণ ভাড়া দেয়ার জন্য গ্রাম অঞ্চলে ছোটখাটো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা দরকার ।

৭. কৃষি পণ্যের বাজারজাতকরণ : ক্ষুদ্রায়তন খামারের উৎপাদনের পরিমাণ কম বলে তারা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্যের দক্ষতার সাথে বাজারজাত করতে পারে না । উৎপাদনের স্বল্পতার জন্য ক্ষুদ্র খামার ফসল বিক্রয়ের পরিবহন খরচও বেশি । সুতরাং সরকারকে এই বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে ।

উপসংহার : সুতরাং এখন থেকেই বাংলাদেশে বৃহদায়তন বাণিজ্যিক খামার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত ।

✍️ ক্ষুদ্ৰাতন ও বৃহদায়তন খামারের মধ্যে পার্থক্য কী ?

উত্তর : ক্ষুদ্রায়তন ও বৃহদায়তন খামারের মধ্যে পার্থক্য :

১. চাষাবাদ পদ্ধতি : ক্ষুদ্রায়তন খামারে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা হয় না । পক্ষান্তরে , বৃহদায়তন খামারে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা হয় ।

২. মূলধন : ক্ষুদ্রায়তন খামারে মূলধনের পরিমাণ কম থাকে , বৃহদায়তন খামারে মূলধনের পরিমাণ বেশি থাকে ।

৩. ঋণ সুবিধা : ক্ষুদ্রায়তন খামারের কৃষকেরা পর্যাপ্ত পরিমাণে ঋণ সুবিধা পায় না । পক্ষান্তরে , বৃহদায়তন খামারের কৃষকেরা পর্যাপ্ত পরিমাণে ঋণ সুবিধা পায় ।

৪. উন্নত প্রযুক্তি : ক্ষুদ্রায়তন খামারের উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার হয় না বললেই চলে । পক্ষান্তরে , বৃহদায়তন খামারে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার বেশি হয় ।

৫. ব্যবস্থাপনা : ক্ষুদ্রায়তন খামার পরিচালিত হয় পরিবারের সদস্যদের দ্বারা । পক্ষান্তরে , বৃহদায়তন খামার পরিচালিত হয় ভাড়া করা শ্রমিক দ্বারা ।

✍️ বাংলাদেশে ক্ষুদ্রায়তন খামারের সুবিধা কী কী ?

উত্তর : ক্ষুদ্রায়তন খামারের সুবিধাসমূহ :

ক . স্বল্প পুঁজি : ক্ষুদ্রায়তন খামার পরিচালনার জন্য স্বল্প পরিমাণ পুঁজির প্রয়োজন হয় । ফলে খামারের মালিকেরা সহজেই পুঁজি সংগ্রহ করতে পারে ।

খ . দক্ষ ব্যবস্থাপনা : ক্ষুদ্রায়তন খামারের ব্যবস্থাপনায় থাকে পরিবারের সদস্যরা । তাই এ খামারের ব্যবস্থাপক হিসেবে পরিবারের সদস্যরা । গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।

গ . পরিবারের শ্রম : ক্ষুদ্রায়তন খামারের বাইরে থেকে ভাড়া করা শ্রমিক নিয়োগ করতে হয় না । ফলে পরিবারের সদস্যরা শ্রম দিতে পারে ।

ঘু. উৎপাদনশীলতা : ক্ষুদ্রায়তন খামারের একর প্রতি উৎপাদন বেশি হয় । কারণ কৃষক যত্নসহকারে অল্প জমি চাষ করে ।

ঙ . সারা বছর চাষ : ক্ষুদ্রায়তন খামারের সারা বছর কৃষক অল্প খরচে চাষাবাদ করতে পারে ।

✍️বাংলাদেশে ক্ষুদ্রায়তন খামারের অসুবিধাসমূহ কী কী ?

উত্তর : অসুবিধাসমূহ :

ক . যান্ত্রিক চাষাবাদ সম্ভব নয় : ক্ষুদ্রায়তন খামার আকারে ছোট হওয়ায় যান্ত্রিক চাষাবাদ করা সম্ভব হয় না ।

খ . উফসী প্রযুক্তি প্রয়োগ সমস্যা : ক্ষুদ্রায়তন খামারে উফসী প্রযুক্তি প্রয়োগ লাভজনক নয় । এতে উৎপাদন খরচ বেশি পড়ে ।

গ . ঋণ সুবিধার অভাব : ক্ষুদ্রায়তন খামারের মালিকদের ঋণ সুবিধা পেতে অসুবিধা হয় । কারণ তাদের খামারের আয়তন ছোট এবং উৎপাদন কম ।

ঘ . ফসলের বহুমুখীকরণ সম্ভব নয় : ক্ষুদ্রায়তন খামার ফসলের বহুমুখীকরণ সম্ভব নয় । অর্থাৎ খামারে একসাথে বহু ফসল চাষ করা সম্ভব নয় ।

.পরিচালনা ব্যয় বেশি : ক্ষুদ্রায়তন খামারে তুলনামূলকভাবে পরিচালনা ব্যয় বেশি হয় । কারণ স্বল্প উপকরণ বাজায় থেকে নিয়ে আনতে খরচ বেশি হয় ।

চ . লাভজনক নয় : ক্ষুদ্রায়তন খামারে চাষাবাদ করে বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হওয়া যায় না । কৃষকের অবস্থার কোন পরিবর্তন হয় না ।

✍️ বৃহদায়তন খামারের সুবিধাসমূহ কী কী ?

উত্তর : বৃহদায়তন খামারের সুবিধা :

বৃহদায়তন খামারের সুবিধাসমূহ নিম্নরূপ :

সুবিধাসমূহ : ১. যান্ত্ৰিক চাষাবাদ সম্ভব : বৃহদায়তন খামারে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা সম্ভব । কারণ এতে চাষাবাদে তুলনামুলকভাবে খরচ কম হয় ।

২. উফসী প্রযুক্তি প্রয়োগ : বৃহদায়তন খামারে উফসী প্রযুক্তি যেমন উন্নত বীজ , যান্ত্রিক সেচ , ব্যাপক সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করা সম্ভব ।

৩. বাণিজ্যিক চাষ : বৃহদায়তন খামারে বাণিজ্যিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা যায় এবং তা লাভজনক হয় ।

৪. ঋণ সুবিধা : বৃহদায়তন খামারের সুবিধা হলো এর বিপরীত পর্যাপ্ত প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ সুবিধা পাওয়া যায় ।

৫. বহুমুখীকরণ : বৃহদায়তন খামারের বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করা যায় । অর্থাৎ বহুমুখী ফসলের চাহিদা পূরণ করা যায় ।

✍️বৃহদায়তন খামারের অসুবিধাসমূহ কী কী ?

উত্তর : অসুবিধাসমূহ :

১. ব্যয়বহুল : বৃহদায়তন খামার পরিচালনার অনেক পুঁজির দরকার হয় । তাই বৃহদায়তন খামার পরিচালনা করা ভীষণ ব্যয়বহুল ।

২. ভাড়া করা শ্রমিক : বৃহদায়তন খামারের দৈনন্দিন কাজ করার জন্য ভাড়া করা শ্রমিক প্রয়োজন হয় । এতে উৎপাদন খরচ বেশি পড়ে । তাছাড়া ভাড়া করা শ্রমিকেরা ভালোভাবে কাজ করতে চায় না ।

৩. অব্যবস্থাপনা : বৃহদায়তন খামারের অব্যবস্থাপনা দেখা দিতে পারে । যন্ত্রপাতি ক্রয় , পানি সেচ , কীটনাশক প্রয়োগ সময়মতো সেচ দেয়া ইত্যাদি ক্ষেত্রে অব্যবস্থাপনা দেখা যায় ।

৪. তদারকির অসুবিধা : বৃহদায়তন খামারের তদারকির সমস্যা দেখা যায় । ভাড়া করা শ্রমিকেরা কাজে ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা করে ।

✍️বাংলাদেশের জন্য কোন ধরনের খামার বেশি উপযোগীন ?

উত্তর : ক্ষুদ্রায়তন ও বৃহদায়তন খামারের বতায় কোন ধরনের খামারের অধিক গুরুত্ব রয়েছে তা নিম্নরূপ :

১. খামারের সংখ্যা : খামারের পরিমাণ বা সংখ্যা দিয়ে কোন দেশে ক্ষুদ্রায়তন বা বৃহদায়তন খামারের গুরুত্ব বেশি তা জানা যায় । বাংলাদেশে ১৯৮৪ সনের কৃষি জরিপে মোট খামারের প্রায় ৭০ % ছিল ক্ষুদ্রায়তনের ২৫ % ছিল মাঝারি এবং মাত্র ৫ % ছিল বৃহদায়তন । তাই বাংলাদেশের কৃষিতে ক্ষুদ্রায়তন খামারের গুরুত্ব বেশি ।

২. কর্মসংস্থান : কর্মসংস্থান সুযোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে বাংলাদেশে বৃহদায়তন খামারের তুলনাস ক্ষুদ্রায়তন খামারের গুরুত্ব বেশি । মোট কৃষি শ্রমিকের প্রায় ৭৫ % -ই ক্ষুদ্রায়তন খামারে নিয়োজিত থাকে । এর কারণ সাধারণত পরিবারের সদস্য দ্বারা পরিচালিত হয় । মুদ্রায়তন খামার.

. উৎপাদনশীলতা : বৃহদায়তন খামারের তুলনায় ক্ষুদ্রায়তন খামারের গড় উৎপাদন ক্ষুদ্র বশি । এ বিষয়টি অনেক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে । কারণ ক্ষুদ্রায়তন খামার সাধারণত পরিবারের সদস্য দ্বারা পরি হয় । যার যার জমিতে সেই সেই চাষ করলে জমি খুব খন্ড খণ্ড হয় । ভালভাবে চাষ , নিড়ানি , সেচ ও তদারকি হয় বলে উৎপাদন বেশি হয় । বৃহদায়তন খামারের ক্ষেত্রে তার উল্টোটা হয় । তাই বাংলাদেশে ক্ষুদ্রায়তন খামার ব্যবস্থা লাভজনক ৷

৪. ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা : বাংলাদেশের দরিদ্র কৃষকের পক্ষে দক্ষতার সাথে বৃহদায়তন খামার পরিচালনা করা সম্ভব নয় । পক্ষান্তরে , ক্ষুদ্রায়তন খামার পরিচালনার ক্ষেত্রে এদেশের কৃষকেরা দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে । তাই বাংলাদেশে বৃহদায়তন খামারের তুলনায় ক্ষুদ্রায়তন খামারের গুরুত্ব বেশি ।

✍️জীবন নির্বাহী ও বাণিজ্যিক খামারের মধ্যে পার্থক্য কী ? অথবা , জীবন নির্বাহী ও বাণিজ্যিক খামারের মধ্যে পার্থক্যসমূহ নিরূপণ কর ।

উত্তর : জীবন নির্বাহী ও বাণিজ্যিক খামারের মধ্যে পার্থক্যসমূহ নিম্নরূপ :

১. লাভ – লোকসান : জীবন নির্বাহী খামারের পরিচালনায় লাভ – লোকসান হিসাব করা হয় না । পক্ষান্তরে , বাণিজ্যিক খামারে লাভ – লোকসানের হিসাবে করা হয় ।

২. খামারের আয়তন : খামার সচরাচর ক্ষুদ্রায়তনের হয় । পক্ষান্তরে , বাণিজ্যিক খামার সচরাচর বৃহদায়তনের হয়ে থাকে ।

৩. শুন নিয়োগ : জীবন নির্বাহী খামারের পরিবারের ভরণ – পোষণের জন্য পরিবারের সদস্যরাও কাজ করে । বাণিজ্যিক খামারে প্রধানত ভাড়া করা শ্রমিক কাজ করে ।

৪. ব্যবস্থাপনা : বাণিজ্যিক খামার পরিচালনায় শিক্ষিত , প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও দক্ষ ব্যবস্থাপকের প্রয়োজন হয় । পক্ষান্তরে , জীবন নির্বাহী খামারে পরিচালনায় অদক্ষ লোক ব্যবহার করা যায় ।

৫. সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণ : বাণিজ্যিক খামারে ফসলের সংরক্ষণ এবং বাজারজাতকরণে আধুনিক গদাম নির্মাণ ও বিক্রয় নেটওয়ার্ক স্থাপন করতে হয় । কিন্তু জীবন নির্বাহী খামারের ফসলের সংরক্ষণ এবং বাজারজাতকরণে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয় না ।

৬. মূলধন : জীবন নির্বাহী খামার পরিচালনায় খুব বেশি মূলধনের প্রয়োজন হয় না । পক্ষান্তরে , বাণিজ্যিক খামার পরিচালনায় খুব বেশি মূলধনের প্রয়োজন হয় ।

✍️বাংলাদেশের বহুমুখী খামারের সুবিধাসমূহ কী কী ?

উত্তর : বহুমুখী খামারের সুবিধাসমূহ নিম্নরূপ :

১. ভূমির উর্বরতা বৃদ্ধি : সারা বছর একই জমিতে চাষ করা হলে বহুমুখী খামারের অধীনে উর্বরতা বৃদ্ধি পায় ।

২. স্বল্প মূলধন : স্বল্প মূলধন নিয়োগ করে বহুমুখী খামার পরিচালনা করা যায় ।

৩. আয়তনগত সুবিধা : সাধারণত ক্ষুদ্রায়তনের খামারে পারিবারিকভাবে বহু ফসলের চাষ করা হয় । এজন্য বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে এ ধরনের খামার বেশি উপযোগী ।

৪. দেশীয় প্রযুক্তির ব্যবহার : দেশীয় লাগসই প্রযুক্তি ব্যবহার করেই ক্ষুদ্রায়তন বহু ফসলি খামার পরিচালনা করা যায় এজন্য বিদেশি যন্ত্রপাতির উপর নির্ভর করতে হয় না ।

৫. পরিবারের চাহিদা পুরণ : বহুমুখী খামার কৃষক পরিবারে বহুমুখী পণ্যের চাহিদা পুরণে সক্ষম । কারণ এ ধরনের খামারে পরিবারের চাহিদা মোতাবেক ফসল উৎপাদন করা হয় ।

৬. ঝুঁকি কম : বহু ফসলি খামারে তুলনামূলকভাবে ঝুঁকি কম । কারণ কোন কারণে এক জাতের ফসল নষ্ট হলে অন্য জাতের ফসল থেকে সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যায় ।

৭. নিয়মিত আয় প্রাপ্তি : বহুমুখী খামারের কৃষকের নিয়মিত আয় প্রাপ্তি ঘটে । কারণ এ ধরনের খামার থেকে * বছরের কোন না কোন সময় ফসল পাওয়া যায় ।

৮. উপজাত দ্রব্যের অবচয় রোধ : বহুমুখী খামারের একটি বড় সুবিধা হলো এক্ষেত্রে কোন ফসলের উপজাত দ্রব্যের অপচয় হয় না । যেমন ধানের খড় বড় পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায় ।

[ad_2]