অথবা, সামাজিক পরিসংখ্যানের সংজ্ঞা দাও।
অথবা, সামাজিক পরিসংখ্যান কী?
অথবা, সামাজিক পরিসংখ্যান ধারণাটি ব্যাখ্যা কর।
অথবা, সামাজিক পরিসংখ্যান বলতে কী বুঝ?
উত্তর! ভূমিকা : সামাজিক প্রপঞ্চ খুব স্বাভাবিকভাবে জটিল । সামাজিক বিজ্ঞান সমাজের সংস্কৃতি, ধর্ম, রাজনীতি, অর্থনীতি প্রভৃতি বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। কিন্তু, সামাজিক প্রপঞ্চ নিয়ত পরিবর্তনশীল; বিভিন্নতায় পরিপূর্ণ এবং বেশিরভাগ সময় গুণগত বৈশিষ্ট্য বহন করে, যা সহজে ইন্দ্রিয়গোচর হয় না । গুণবাচক তথ্য পরিমাপ করা যায় গণনা করা যায় না ।
সামাজিক পরিসংখ্যান : পরিসংখ্যানের একটি শাখা হলো সামাজিক পরিসংখ্যান । সামাজিক বিজ্ঞানে যে পরিসংখ্যান ব্যবহৃত হয় তাকে সামাজিক পরিসংখ্যান বলে। সামাজিক বিজ্ঞানে পরিসংখ্যানের প্রয়োগ ও ব্যবহার কষ্টসাধ্য। কিন্তু, পরিসংখ্যানকে প্রয়োজনে জ্ঞানের সকল শাখায় ব্যবহার করা যায়। জনৈক পরিসংখ্যানবিদের একটি উদ্ধৃতি এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য। তিনি বলেছেন, “পরিসংখ্যান কাদামাটির মতো, একে ইচ্ছামতো দেবদেবী আবার শয়তান করেও গড়ে তোলা যায়।
L. R. Conner বলেছেন, “পরিসংখ্যান হচ্ছে সুশৃঙ্খলভাবে বিন্যস্ত প্রাকৃতিক বা সামাজিক বিষয়বস্তু পরিমাপ, গণনা বা হিসাব, যাতে সেগুলোর অভ্যন্তরীণ সম্পর্কে দেখানো হয়।”
Norman R. Kurtz বলেছেন, “পরিসংখ্যান কতিপয় পদ্ধতির সমষ্টি। এ পদ্ধতিগুলো সামাজিক জীবনের বিভিন্ন উপাদান সম্পর্কে সংখ্যাত্মক তথ্য সংগ্রহ, বর্ণনা ও বিশ্লেষণের জন্য ব্যবহৃত হয়।” জ্ঞানের সকল শাখার মতো সামাজিক বিজ্ঞানে পরিসংখ্যানের ব্যবহার হয়। সামাজিক বিজ্ঞানে সামাজিক গবেষণায় পরিসংখ্যানভিত্তিক গবেষণা, ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ হলে তাকে সামাজিক পরিসংখ্যান বলে । সামাজিক বিষয় বা প্রপঞ্চ অপেক্ষাকৃত জটিল, আবার পরিসংখ্যান পদ্ধতি বেশ সূক্ষ্ম ও প্রতিক্রিয়াশীল । তাই সামাজিক বিজ্ঞানে পরিসংখ্যানের ব্যবহার খুব সতর্কতার সাথে করতে হয়। সামাজিক বিজ্ঞানে সতর্কতা ও দক্ষতার সাথে পরিসংখ্যানকে ব্যবহারের মাধ্যমে সামাজিক প্রপঞ্চকে যেমন অর্থবহ করে তোলা যায়, তেমনি সমাজের বিভিন্ন বিষয়ে পরিসংখ্যানের গবেষণার পরিধি বাড়ানো যায় ।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে একথা বলা যায় যে, সামাজিক পরিসংখ্যানের অনেক সীমাবদ্ধতা য়েছে। তা সত্ত্বেও সামাজিক পরিসংখ্যান সমাজের বিভিন্ন সমস্যাকে চিহ্নিত করে, তুলনা করে বর্তমানকে অতীতের সাথে । ভবিষ্যৎ সম্পর্কে দেয় সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা ।