উত্তর : ভূমিকা : হিন্দু মুসলিম সমন্বয়সাধনের উদ্দেশ্যে সব ধর্মের সমতা, এক ঈশ্বরবাদে বিশ্বাসী, ভক্তি ও প্রেমের মাধ্যমে
ভগবৎ প্রাপ্তি ইত্যাদি মূলনীতির উপর ভক্তিবাদ মতবাদ প্রতিষ্ঠিত। হিন্দু সমাজের কলুষতা দূর করার জন্য এবং হিন্দু-
মুসলিম সমন্বয়ের জন্য ভক্তিবাদী সাধকগণ জীবনব্যাপী কাজ করেছেন । হিন্দু সমাজে ভক্তিবাদের গুরুত্ব অনেক।
ভক্তিবাদ : সংস্কৃত শব্দ ভক্ত থেকে ভক্তির উৎপত্তি। হিন্দু মুসলিম সমন্বয়সাধনে উদ্দেশ্যে সব ধর্মের সমতা, এক ঈশ্বরবাদে বিশ্বাসী, ভক্তি ও প্রেমের মাধ্যমে ভগবৎ প্রাপ্তি প্রভৃতি মূলনীতির উপর প্রতিষ্ঠিত মতবাদকে ভক্তিবাদ বলে। ভারতবর্ষে ভক্তিবাদের ইতিহাস দীর্ঘদিনের। খ্রিস্টের জন্মের বহু বছর পূর্বে কোনো বহিঃপ্রভাব ছাড়াই ভারতের মাটিতে ভক্তিবাদের সৃষ্টি হয়েছিল বলে পণ্ডিতগণ মনে করেন। সুলতানি আমলে ধর্মের ক্ষেত্রে হিন্দু মুসলিম সংস্কৃতির পরস্পর প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। ইসলামের প্রভাবে একদিকে যেমন হিন্দু সমাজের রক্ষণশীলতা ও জাতিভেদে প্রথা কঠোরতর হয়েছিল তেমনি অপরদিকে এর
প্রভাবে ভক্তিবাদ নামক উদার এক ধর্মনীতির উদ্ভব হয়েছিল। সব ধর্মের সমতা এক ঈশ্বরবাদে বিশ্বাসে ভক্তি ও প্রেমের মাধ্যমে ভগবান প্রাপ্তি ইত্যাদি মূলনীতির উপর প্রতিষ্ঠিত ভক্তিবাদ এ সময়ে প্রসার লাভ করে। ভক্তিবাদের প্রচারকগণের মধ্যে রামানন্দ, বল্লভাচার্য, শ্রীচৈতন্য, কবীর ও নানকের নাম তিহাসে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মধ্যযুগে হিন্দু সমাজব্যবস্থা ছিল কুসংস্কার, অনাচার, বর্ণ প্রথায় আচ্ছন্ন। হিন্দু সমাজের কুসংস্কার দূর করার জন্য ভক্তিবাদ আন্দোলন শুরু হয়। বাংলার চৈতন্যদেব কৃষ্ণ ভক্তিকে কেন্দ্র করে যে ধর্ম আন্দোলন শুরু করেছিলেন তাকে ভক্তি আন্দোলন বলা হয়।