ব্র্যাকের পরিচিতি উল্লেখপূর্বক এর রূপকল্প বা দর্শন কি?

উত্তর ঃ ভূমিকা ঃ ব্র্যাক বাংলাদেশের প্রাচীন দেশীয় বেসরকারি সংস্থা। দারিদ্র্য বিমোচন ও দারিদ্র্যের ক্ষমতায়নকে গুরুত্ব দিয়ে ব্র্যাকের পথচলা শুরু হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানটি গ্রাম অঞ্চলে ভাগ্যাহতদের কল্যাণের নিমিত্তেই কাজ করে থাকে। ব্র্যাক বাংলাদেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবাসহ বহুমুখী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে। এর কর্মসংস্থান প্রকল্পের মাধ্যমে
বহু বেকার যুবক যুবতীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। তাই ব্র্যাকের গুরুত্ব ক্রমাগত বাড়ছে।
→ ব্র্যাকের পরিচিতি ঃ ব্র্যাক হচ্ছে বাংলাদেশে দুঃস্থ দরিদ্র অসহায় জনগণের কল্যাণ ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তৃণমূল পর্যায়ে সম্প্রসারিত একটি বৃহৎ বেসরকারি সংস্থা। দরিদ্রদের মাঝে দলীয় ভিত্তিতে ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান, শিক্ষা ও ব্যবহারিক শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, পল্লি উন্নয়ন মানব সম্পদ বিকাশ, স্বাস্থ্য অন্যান্য সেবা সহায়তা এ সংস্থাটি নিয়োজিত । ১৯৭০ সালে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের এক প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কল্যাণার্থে জনাব ফজলে হাসান আবেদ। বিভিন্ন সংস্থার সাথে কাজ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করে। তখন থেকেই তিনি দুর্দশাগ্রস্তদের জন্য কিছু করবার তীব্র তাগিদ অনুভব করেন। এরপর ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে অসংখ্য মানুষ বাস্তুহারা হয়ে পড়ে। এ সময় তিনি ‘Save Bangladesh’ (বাংলাদেশ বাঁচাও) নামক সংস্থার মাধ্যমে তৎপরতা চালান। ১৯৭২ সালে সিলেটের শাল্লা গ্রামে যুদ্ধবিধস্ত দেশের জনগণের সাহায্য ও পুনর্বাসনের লক্ষ্যে তিনি Bangladesh Rehabilatim Assistance
Committee গঠন করেন। এটি প্রাথমিকভাবে ভারত থেকে প্রত্যাগত শরণার্থীদের জন্য ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ব্র্যাক দীর্ঘমেয়াদি সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে তার দৃষ্টিনিবদ্ধ করে। কিন্তু এ কর্মসূচি ড. ফজলে হাসান আবেদের কাছে অপ্রতুল মনে হলে ১৯৭৬ সালে সুবহৎ ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাভিত্তিক কর্মসূচি প্রবর্তন করেন।
তখন ‘Bangladesh Rehabilatim Assistance Committee’ এর নাম পরিবর্তন করে ‘Bangladesh Rural Advancement Committee’ ‘রাখা হয়। বর্তমানে দেশের প্রায় ৭০ হাজার গ্রামে ব্র্যাকের উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে।এটি অর্থনৈতিক উন্নয়ন, স্বাস্থ্য উন্নয়ন, সামাজিক উন্নয়ন প্রভৃতি কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করছে।
→ব্র্যাকের রূপকল্প/দর্শন ঃ ব্র্যাকের রূপকল্প বা দর্শন নিম্নে দেওয়া হলো : একটি ন্যায়সঙ্গত, শিক্ষিত, স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও গণতান্ত্রিক সমাজ যা ক্ষুধা, দারিদ্র্য, পরিবেশগত অবক্ষয় এবং বয়স, লিঙ্গ,ধর্ম ও জাতি নির্বিশেষে সকল প্রকার শোষণমুক্ত।
উপসংহার ঃ পরিশেষে বলা যায় যে, গ্রামপ্রধান বাংলাদেশের তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত জনগণের বহুমুখী প্রয়োজন পূরণ ও বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে ব্র্যাক কাজ করে যাচ্ছে। এ জন্য এর প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। তাই ব্র্যাককে আরো উদ্যোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।