উত্তর ঃ ভূমিকা ঃ দক্ষ নেতৃত্বই পারে দেশ ও জাতিকে উন্নতির শিখরে আরোহণ করাতে। আর শিশুরা হলো কোনো জাতির ভবিষ্যৎ নেতা। তাই তাদেরকে যোগ্য ও সুনাগরিক গুণাবলিসম্পন্ন করে তুলতে পারলে জাতির নতুন ভাগ্য রচিত হবে। প্রতিটি মানুষের কিছু মৌল চাহিদা থাকে শিশুদের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। মূলত শিশুদের সুস্থ-স্বাভাবিক, যোগ্য, দায়িত্বশীল এবং নেতৃত্বপূর্ণ জীবন পরিচালনার নিমিত্তে যেসব প্রয়োজন বা চাহিদার পূরণ অপরিহার্য হয়।
সেগুলোকে শিশুদের মৌল চাহিদা বলা হয়ে থাকে। শিশুদের মৌল চাহিদাগুলো তাদের জীবন গঠনে বেশ সহায়ক। তাই এগুলোর বেশ গুরুত্ব আছে।
→ শিশুদের মৌল চাহিদাসমূহ ঃ আগামীর ভবিষ্যৎ দ্রষ্টা শিশুরা সর্বদাই একটি জাতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত । এসব শিশুদের কিছু মৌল চাহিদা রয়েছে। যা নিম্নরূপঃ
১. শারীরিক চাহিদা ঃ শিশুদের শারীরিক চাহিদগুলো হলো : পুষ্টিকর ও সুষম খাদ্য, ভাল বস্ত্র, স্বাস্থ্যকর আশ্রয় ও নিদ্রা, নির্মল বাতাস ইত্যাদি চাহিদাসমূহ পুরুণ হওয়৷ অত্যন্ত জরুরি। এছাড়া শিশুর বিকাশ বাধাপ্রাপ্ত হবে।
২. পরিচর্যা লাভ ঃ জন্মপূর্ব থেকে জন্ম পর পর্যন্ত বিভিন্ন পরিচর্যাসমূহ লাভ করা প্রত্যেক শিশুর এক অব্যক্ত চাহিদা। শিশুদের এ চাহিদা পরিবারের সকল সদস্যকেই পূরণ করতে হয়।
৩. সামাজিক চাহিদা : প্রতিটি শিশুই সমাজে জন্ম নেয় ও সমাজের পরিবেশে বেড়ে উঠে। সুতরাং, সমাজে বিভিন্ন মানুষের সাথে মেশা, উপযুক্ত বন্ধু পাওয়া, প্রশংসা নেতৃত্বদান ও সম্মান প্রভৃতি শিশুর অন্যতম সামাজিক চাহিদা হিসেবে বিবেচিত হয় ।
৪. নিরাপত্তা লাভ ঃ নিরাপত্তা লাভ শিশুর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মৌল চাহিদা। শিশুদের সর্বাস্থায় এমন কি যুদ্ধের সময়ও নিরাপত্তাদান করা প্রতিটি রাষ্ট্রের অন্যতম দায়িত্ব।
.৫. স্নেহ-ভালোবাসা ও প্রীতি পুনর্বাসন ব্যবহার : স্নেহ-ভালোবাসা প্রীতিপূর্ণ ব্যবহার পাওয়া প্রতিটি শিশুর অন্যতম মৌল চাহিদা। স্নেহ-ভালোবাসা পেলেই শিশুদের মানসিক বিকাশ ঘটাতে শুরু করে।
৬. শিক্ষা ঃ শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য উপযুক্ত শিক্ষার প্রয়োজন। বাংলাদেশে শিশুদের শিক্ষাদানে বিভিন্ন স্কুল কিন্ডার গার্টেন, মাদ্রাসা প্রভৃতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।
৭. বিনোদনে অংশগ্রহণ ঃ বিনোদনে অংশগ্রহণ করা ও শিশুদের একটি মৌল চাহিদা। শিশুর শারীরিক সুস্থতা ও মানসিক উন্নতি সাধনে খেলাধুলা, আবৃত্তি গঠন, নাচ-গান ও নৃত্য প্রভৃতিতে অংশগ্রহণ করা জরুরি।
৮. চরিত্র গঠন ঃ সুন্দর চরিত্র গঠনের জন্য শিশুদের নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ প্রয়োজন তাই শিশুদের জন্য চরিত্র গঠনমূলক শিক্ষাদান করা প্রয়োজন ।
৯. স্বাধীনতা ঃ স্বাধীনতা শিশুদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মৌল চাহিদা বলে গণ্য হয়ে থাকে। শিশুদেরকে তাদের মতামত প্রকাশের ক্ষেত্রে ইতিবাচক মনোভাব রাখতে হবে বড়দেরকে। যা শিশুদের মাঝে নেতৃত্ব বিকাশে অত্যন্ত সহায়ক হতে পারে।
উপসংহার ঃ পরিশেষে বলা যায় যে, শিশুরাই জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা, উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের একমাত্র নির্মাতা। শিশুদের প্রধান প্রধান মৌল চাহিদা পূরণ করা অত্যন্ত জরুরি। সামাজিক, মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক দিক দিয়ে বিশ্বের
অন্যান্য রাষ্ট্রের শিশুদের মত বাংলাদেশেরও উচিত তার লাখ লাখ নিষ্পাপ শিশুদের উন্নতি বিধানে তাদের মৌল চাহিদা পূরণে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো। তবেই তারা জাতিকে উন্নতির শিখরে দাঁড় করাতে সক্ষম হবে।