অথবা, ঘটনা অনুধ্যানের সমস্যাসমূহ উল্লেখ কর।
অথবা, ঘটনা অনুধ্যানের নেতিবাচক দিকসমূহ লিখ।
অথবা, ঘটনা অনুধ্যানের সীমাবদ্ধতাগুলো উল্লেখ কর।
অথবা, ঘটনা অনুধ্যানের কী কী সমস্যা রয়েছে?
উত্তর।৷ ভূমিকা : ঘটনা অনুধ্যান পদ্ধতি সামাজিক গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। তবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা সত্ত্বেও এর ক্ষেত্রে ব্যাপক সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
ঘটনা অনুধ্যানের সীমাবদ্ধতা/সমস্যা : নিম্নে ঘটনা অনুধ্যানের সমস্যা বা সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করা হলো :
১. ঘটনা অনুধ্যান পদ্ধতিতে তথ্যসংগ্রহের ক্ষেত্রে ব্যক্তি রোজনামচা, দলিলপত্র ও অন্যান্য নথিপত্রের প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু ব্যক্তির কাছ থেকে ব্যক্তিগত নথিপত্র, রোজনামচা ও দলিলপত্র পাওয়া খুব কষ্টসাধ্য। আবার পাওয়া গেলেও সেখানে অনেক কিছু অতিরঞ্জিত থাকে যা দ্বারা সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া সম্ভব হয় না।
২. এ পদ্ধতিতে প্রাপ্ত তথ্যের সাধারণীকরণ ও তুলনামূলক তথ্য উপস্থাপনের সুযোগ অনেকটাই সীমিত।
৩. ঘটনা অনুধ্যান পদ্ধতির সব চেয়ে বড় সমস্যা হলো অতিমাত্রায় ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা। যার ফলে এ পদ্ধতির ক্ষেত্রে ব্যক্তির মূল্যবোধ, চিন্তাচেতনা প্রভাব পড়ে।
৪. ঘটনা অনুধ্যান পদ্ধতিতে ঘটনার সামগ্রিকতা বজায় রাখা সম্ভব হয় না। তাছাড়া প্রাপ্ত তথ্যের কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয়ের ক্ষেত্রে তেমন কোন সুযোগ নেই।
৫. এ পদ্ধতিতে পরিসংখ্যানিক পদ্ধতির প্রয়োগ সম্ভব হয় না। ফলে এটি অপেক্ষাকৃত কম বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি।
৬. ঘটনা অনুধ্যান পদ্ধতিতে ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব, আচার আচরণ, মূল্যবোধ ও তার পরিবেশ সম্পর্কে নিবিড়ভাবে জানার চেষ্টা করা হয় বলে এ পদ্ধতিতে বেশি সময়ের প্রয়োজন হয়।
৭. এ পদ্ধতি গভীর জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ গবেষকের প্রয়োজন হয় কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দক্ষ গবেষক ও তথ্যসংগ্রহকারী পাওয়া সম্ভব হয় না। ফলে প্রাপ্ত তথ্যের নির্ভুলতা সম্পর্কে প্রশ্ন থেকেই যায়।
৮. এ পদ্ধতিতে স্বল্পসংখ্যক বিষয়ের উপর ভিত্তি করে কার্যক্রম পরিচালিত হয়। তাই এর সাধারণীকরণ করা বেশ কঠিন।
উপসংহার : উপর্যুক্ত সীমাবদ্ধতার আলোকে বলা যায়, গবেষণা কাজে গবেষক ছাড়া অন্য কেউ বিস্তারিতভাবে জানতে পারে না। এক্ষেত্রে তার মতামতকেই চূড়ান্ত বলে ধরে নেয়া হয়। ফলে এ পদ্ধতিতে প্রাপ্ত তথ্যের সঠিকতা যাচাই করা যায় না।