অথবা, সমাজকর্মের একটি মূল্যবোধ হিসেবে “স্বনির্ভরতা অর্জন” নীতি ব্যাখ্যা কর।
অথবা, সমাজকর্মের মূল্যবোধ হিসেবে স্বনির্ভরতা অর্জন ধারণাটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর।। ভূমিকা : প্রতিটি পেশার ন্যায় সমাজকর্ম পেশারও কতকগুলো মূল্যবোধ রয়েছে।সমাজকর্মীদের এই মূল্যবোধ অনুসরণ করে কাজ করতে হয়। মূল্যবোধ সমাজকর্ম অনুশীলনের Guideline বা Principle হিসেবে কাজ করে।
সমাজকর্মে স্বনির্ভরতা অর্জন : সমাজকর্ম অনুশীলনে সমাজকর্মীগণ কতকগুলো সাধারণ মূল্যবোধ অনুসরণ করেন।সমাজকর্মের এ সাধারণ মূল্যবোধগুলোর একটি হলো স্বনির্ভরতা অর্জন।নিম্নে এ নীতি নিয়ে আলোচনা করা হলো :
স্বনির্ভরতা অর্জন (Self sufficient) : স্বনির্ভর প্রত্যয়টির অর্থ হলো নিজের উপর নির্ভর করে চলা।আর অন্যের মুখাপেক্ষী না হয়ে আত্মনির্ভরশীল হয়ে চলার প্রচেষ্টাকে বলা হয় স্বনির্ভরতা। অপরের সাহায্য-সহানুভূতি লাভের আশায় হাত গুটিয়ে বসে না থেকে, নিজ প্রচেষ্টায় ও নিজ সামর্থ্যে সক্ষমতা অকে বলা হয় স্বনির্ভরতা। সমাজকর্ম বিশ্বাস করে, প্রত্যেক মানুষের ভিতরে রয়েছে সুপ্ত সম্ভাবনা। এ সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করার জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত পরিবেশ।যথার্থ পরিবেশ পেলে অন্যের অনুকম্পার জন্য বসে না থেকে মানুষ নিজে তার নিজের কল্যাণে ব্রতী হতে পারে। এতে একজন ভিখারীর হাত কর্মীর হাতিয়ারে পরিণত হতে পারে।সমাজকর্ম মানুষের যোগ্যতা ও সামর্থ্যানুযায়ী এমনভাবে সাহায্য করে, যাতে তারা নিজেরাই নিজেদের সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীলতা অর্জনের সুযোগ পায়।এভাবে আত্মনির্ভরশীলতা বা স্বনির্ভরতা অর্জনের মাধ্যমে সমাজের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত হয়। এ কারণে সমাজকর্মে ‘স্বনির্ভরতা অর্জন’ একটি নীতিমালা ও মূল্যবোধ হিসেবে স্বীকৃত।সমাজকর্ম পরনির্ভরশীল মন-মানসিকতার পরিবর্তে নিজ প্রচেষ্টা ও সামর্থ্যের মাধ্যমে স্বনির্ভরতা অর্জনের নীতিতে বিশ্বাসী।প্রকৃতপক্ষে, স্বনির্ভরতা অর্জনের মাধ্যমেই মানুষ কর্মে পরিতৃপ্তির স্বাদ আস্বাদন করতে পারে।নিজ প্রচেষ্টার বড় হওয়ায় আত্মপ্রত্যয় দৃঢ় হলেই মানুষ স্বনির্ভরতা অর্জনে সক্ষম হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সমাজকর্মে ‘স্বনির্ভরতা অর্জন’ নীতিতে বিশ্বাস করে বলেই সমাজের মানুষকে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তুলতে চায়। সমাজকর্ম বিশ্বাস করে মানুষকে সুযোগ দিলে সে স্বনির্ভরতা অর্জন করবেই।