অথবা, বাংলার প্রধান ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যগুলো আলোচনা কর ।
উত্তর৷ ভূমিকা : বাংলা পৃথিবীর বৈচিত্র্যপূর্ণ ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। এর ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য এ অঞ্চলের সমাজ, সংস্কৃতি, ধর্ম, ভাষা ও রাজনৈতিক জীবনকেও প্রভাবিত করেছে। বাংলার মানুষের প্রাত্যহিক জীবনে এ বৈশিষ্ট্যগুলো নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করেছে।
প্রধান ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য : সামগ্রিক দিক থেকে বাংলার ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যগুলোকে কয়েকটি মৌলিক বিষয়ে বিভক্ত করা যায়। এগুলো হলো :
প্রথমত, গাঠনিকগত ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ায় বাংলা ভূখণ্ডের অস্তিত্ব বা অবস্থানে উপমহাদেশের সর্বপূর্ব প্রান্তে নির্ধারিত হয়েছে।
দ্বিতীয়ত, ভূতাত্ত্বিকভাবে বাংলা সুগঠিত ভূভাগ এবং অপেক্ষাকৃত নবীন ভূভাগের সমন্বয়ে সৃষ্ট।
তৃতীয়ত, বাংলা পৃথিবীর বৃত্তের বদ্বীপ বা ভেল্টা।
চতুর্থত, বাংলার দক্ষিণে উন্মুক্ত সমুদ্রদ্বার ।
পঞ্চমত, বাংলা মৌসুমি জলবায়ুর দেশ, এটা বৃষ্টি বহুল অঞ্চল।
ষষ্ঠত, বাংলা প্রাকৃতিকভাবে নির্ধারিত নৌ এবং স্থল যোগাযোগের পথ সমৃদ্ধ একটি অঞ্চল ।
সপ্তমত, বাংলার রয়েছে অসংখ্য নদী সমন্বিত বিরল ভূ-বৈশিষ্ট্য।
অষ্টমত, বাংলা ভারতীয় উপমহাদেশ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাথে Land bridge হিসেবে যোগাযোগে ভূমিকা রাখছে এর ভৌগোলিক অবস্থান এবং বৈশিষ্ট্যের কারণে। এ বৈশিষ্ট্যের কারণে বাংলা একটা বৈচিত্র্যপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে, যা বাংলার ধর্মীয় সহনশীলতা, সামাজিক উদারতা এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জীবনকে প্রভাবিত করেছে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলার নদীবিধৌত উর্বর সমতল ভূমি এর ভৌগোলিক অবস্থানকে পৃথিবীর অন্যান্য দেশ থেকে সম্পূর্ণরূপে পৃথক করেছে। তাছাড়া পাহাড়-পর্বত ও জলবায়ুও এ দেশের ভূমি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তাই বাংলার ভূপ্রকৃতি ছিল বেশ বৈচিত্র্যময় ও আকর্ষণীয়।