✍️বাংলাদেশের খাদ্য ও অর্থকরী ফসলের একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও ।

[ad_1]

✍️বাংলাদেশের খাদ্য ও অর্থকরী ফসলের একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও ।

উত্তর ভূমিকা : জনগণের খাদ্যের প্রয়োজন মিটানোর জন্য যে সকল ফসল উৎপাদন করা হয় সেগুলোকে খাদ্যশস্য বলে । কৃষক যেসব ফসল খাদ্যের জন্য নয় বরং বিক্রয়ের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের জন্য উৎপাদন করে তাকে অর্থকারী ফসল বলা হয় ।

খাদ্য ও অর্থকরী ফসল : নিম্নে খাদ্য শস্য ও অর্থকরী ফসলের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হলো ।

ক . বাংলাদেশের খাদ্য শস্য : বাংলাদেশের প্রধান খাদ্যশস্যগুলোর বিবরণ নিয়ে দেয়া হলো :

১. ধান : ধান বাংলাদেশের প্রধান খাদ্য শস্য । এদেশের মানুষের প্রধান খাদ্য ভাত বিধায় ধানের চাহিদা বিশাল । বাংলাদেশের মাটি ও জলবায়ু ধান চাষের জন্য খুবই উপযোগী । বরিশাল , সিলেট , দিনাজপুর , খুলনা , কুমিল্লা , রাজশাহী , ময়মনসিংহ , নোয়াখালী ইত্যাদি জেলাতে অধিক পরিমাণে ধান উৎপাদিত হয় । দেশের মোট চাষযোগ্য জমির ৭৫ % ধান উৎপাদনে নিয়োজিত আছে । ২০০৯-১০ অথবছরে দেশে ২৬৭.৫৮ লক্ষ একর জমিতে মোট ৩২২.৫২ লক্ষ টন ধান উৎপাদিত হয় । এটা মোট খাদ্য শস্যের প্রায় ৯০ ভাগ ।

২. গম : বাংলাদেশের খাদ্যশস্য হিসেবে ধানের পরই গমের স্থান । ময়দা , আটা , লুজি ইত্যাদি আকারে গম ব্যবহার করা হয় । বাংলাদেশের কুষ্টিয়া , খুলনা , যশোর , বগুড়া , পাবনা , রংপুর , দিনাজপুর প্রভৃতি এলাকায় গম ভালো হয় । গম উৎপাদনে নিয়োজিত জমির পরিমাণ ছিল প্রায় ১৭.৩২ লক্ষ একর । ২০০৯-১০ অর্থবছরে ২০ লক্ষ একর জমিতে ৯.৬৯ লক্ষ টন গম উৎপাদন যা মোট খাদ্যশস্যের প্রায় ৭ ভাগ ।

৩. ডাল : বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ প্রায় নিয়মিত ভাতের সাথে ভাল খায় । দেশের প্রায় সর্বত্র ডাল উৎপাদিত হয় । ডালের মধ্যে মুগ , মসুর , কালাই , খেসারি , মটরসুটি , শিম , অড়হর ইত্যাদি । উল্লেখযোগ্য , মোট চাষযোগ্য জমির প্রায় ৫ % ডাল উৎপাদনে ব্যবহৃত হয় । ২০০৯-১০ অর্থবছরে প্রায় ১৩ লক্ষ একর জমিতে প্রায় ৫ লক্ষ টন জন উৎপাদন হয় ।

৪. তৈলবীজ : সরিষা , তেল , বাদাম , তিসি , নারকেল , রেড়ী ইত্যাদি । বাংলাদেশে প্রচুর উৎপাদিত হয় । ঢাকা , টাহাইল , খুলনা , ময়মনসিংহ , রাজশাহী , দিনাজপুর ইত্যাদি জেলায় অধিক তৈলবীজ উৎপন্ন হয় । কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় উৎপাদন অনেক কম হওয়ার কারণে প্রতি বছর অনেক ভোজ্য তেল আমদানি করতে হয় । সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মোট চাষযোগ্য জমির ৩ % তৈলবীজ উৎপাদনে ব্যবহৃত হয় । ২০০৯-১০ অর্থবছরে ১২ থেকে ১৩ লক্ষ একর জমিতে ৪ লক্ষ টন তৈলবীজ উৎপাদিত হয় ।

৫. গোলআলু : আলু একটি শীতকালীন ফসল । বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্র আলুর চাষ হয় । তবে সিলেট , ঢাকা , রংপুর , বগুড়া , দিনাজপুর , পাবনা , রাজশাহী ইত্যাদি অঞ্চলে আলুর অপেক্ষাকৃত ভালো চাষ হয় । ২০০৯-১০ অর্থবছরে দেশে প্রায় ৫ হাজার মে . টন আলু উৎপাদিত হয় ।

৬. শাক – সবজি : বাংলাদেশের সর্বত্র প্রচুর শাক – সবজি উৎপাদিত হয় । সম্প্রতি কিছু অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে শাক সবজির চাষ আরম্ভ হয়েছে । বাংলাদেশে উৎপাদিত শাক- সবজির মধ্যে ঢেরস , পটল , করলা , ঝিঙ্গা , শিম , মুলা , ফুলকপি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য ।

৭.ফলমূল : বাংলাদেশে আম , জাম , কাঁঠাল , কলা , কমলা , পেঁপে , পেয়ারা ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকারের ফলমূল উৎপন্ন হয় । সাধারণত অপরিকল্পিতভাবে বসত বাড়িতে ফলমূল উৎপন্ন হয় । তবে ঢাকা , ময়মনসিংহ , রাজশাহী ইত্যাদি অঞ্চলে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদিত হয়ে থাকে । ২০০৯-১০ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রায় ৩ লক্ষ টন আম এবং ৪ লক্ষ টন ৯২ লক্ষ টন অন্যান্য ফল উৎপাদিত হয় ।

৮. বার্লি : বাংলাদেশে অল্প পরিমাণে বার্লি উৎপাদিত হয় । ১৯৯৬-৯৭ সাথে রায় ০.২৩ লক্ষ একর জমিতে ৬ হাজার মেট্রিক টন বার্লি উৎপাদিত হয় । পক্ষান্তরে , ২০০৯-১০ অর্থবছরে ০.০২ লক্ষ একর জমিতে ১ হাজার মেট্রিক টন বানি উৎপাদিত হয় । ভুট্টা বাংলাদেশে বর্তমানে স্বল্প পরিমাণে ভুট্টার চাষ হচ্ছে । রাজশাহী , পাবনা , দিনাজপুর , টাঙ্গাইল , ময়মনসিংহ , কুমিল্লাতে কিছু কিছু অঞ্চলে ভুট্টার চাষ হয় । ২০০৯-১০ অর্থবছরে ২.৮ লক্ষ একর জমিতে প্রায় ৪ হাজার মেট্রিক টন ভুট্টা উৎপাদন হয় ।

৯. মসলা : আমাদের খাদ্যশস্যের অন্যতম একটি অংশ নানা প্রকার মসলা , রসুন , পিঁয়াজ , ধনিয়া , আদা , হলুদ মরিচ , জিরা , তেজপাতা , লবঙ্গ ইত্যাদি নানা প্রকার মসলা উৎপন্ন হয় । ২০০৯ – ১০ অর্থবছরে প্রায় ৫.৫ লক্ষ টন মসলা উৎপন্ন হয় ।

খ . বাংলাদেশে অর্থকরী ফসলের বর্ণনা : কৃষক যেসব ফসল খাদ্যের জন্য নয় বরং বিক্রয়ের মাধ্যমে অর্থ উপাজনের জন্য উৎপাদন করে তাকে অর্থকরী ফসল বলা হয় । বাংলাদেশে পাট , তামাক , ইক্ষু , চা , তুলা , রেশম , রবার ইত্যাদি অর্থকরী ফসল ।

নিম্নে প্রধান অর্থকরী ফসলগুলোর বর্ণনা দেয়া হলো :

১. পার্ট : পাট বাংলাদেশে প্রধান অর্থকরী ফসল । বাংলাদেশ বিশ্বের প্রধান পাট উৎপাদনকারী দেশ । ঢাকা ময়মনসিংহ , জামালপুর , টাঙ্গাইল , পাবনা প্রভৃতি অঞ্চলে ভালো পাট চাষ হয় । সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মোট চাষযোগ্য জমির প্রায় ৪ % পাট উৎপাদনে ব্যবহৃত হয় । ২০০৯-১০ অর্থ বছরে প্রায় ১৩ লক্ষ একর জমিতে প্রায় ১০ লক্ষ মেট্রিক টন পাট উৎপাদন হয় । ২০১০ সালে ফসলে কাঁচা পাট রপ্তানি করে প্রায় ১২ কোটি মার্কিন ডলার আয় হয় ।

২. চা : চা বাংলাদেশে দ্বিতীয় অর্থকরী ফসল । সিলেট , চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে চা উৎপাদিত হয় । বাংলাদেশে ১৫৬ টি চা বাগান আছে । ১৯৯৪-৯৫ সালে বাংলাদেশে প্রায় ৫.১৬ কোটি কেজি চা উৎপাদিত হয় । ২০০৯ ১০ অর্থ বছরে প্রায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার একর জমিতে প্রায় ৬২ হাজার টন চা উৎপন্ন হয় ।

৩. ইক্ষু : ইক্ষু বাংলাদেশের তৃতীয় অর্থকরী ফসল । ইক্ষু থেকে চিনি ও গুড় উৎপন্ন হয় । এছাড়া ইক্ষুর ছোবড়া থেকে কাগজ ও হার্ডবোর্ড তৈরি করা হয় । যশোর , ঢাকা , ময়মনসিংহ ইত্যাদি অঞ্চলের ভূমি ও আবহাওয়া ইক্ষু উৎপাদনের জন্য বিশেষ উপযোগী । এছাড়া দেশের সর্বত্র প্রায় ইক্ষুর উৎপাদন কিছু কিছু হয় । ২০০৯-১০ অর্থ বছরে বাংলাদেশে প্রায় ৫.৫ লক্ষ একর জমিতে প্রায় ৮০ লক্ষ টন আখ উৎপন্ন হয় ।

৪. তামাক : তামাক বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল । তামাক প্রধানত সিগারেট ও বিড়ি উৎপাদনে ব্যবহৃত হয় । রংপুর , কুষ্টিয়া , দিনাজপুর প্রভৃতি অঞ্চলে তামাক উৎপাদন হয় । রংপুরের ‘ মুতিহার ‘ দিনাজপুরের ‘ যাতি ‘ তামাকের বেশ কদর আছে । ২০০৯-১০ অর্থ বছরে বাংলাদেশে একর জমিতে প্রায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন তামাক উৎপাদন হয় ।

৫. তুলা : বাংলাদেশের স্বল্প পরিমাণে তুলা উৎপাদন হয় । সার্বিকভাবে বাংলাদেশের আবহাওয়া ও মৃত্তিকা তুলা উৎপাদনের জন্য উপযোগী নয় । তবে শীত মৌসুমে চট্টগ্রাম , পার্বত্য চট্টগ্রাম , কুমিল্লা ও ময়মনসিংহের কিছু অঞ্চলে তুলার চাষ হয় । ২০০৯ – ২০১০ অর্থ বছরে ৭ হাজার একর জমিতে প্রায় ৭ হাজার মে . টন তুলা উৎপাদন হয় ।

৬. রেশম : তুঁত গাছের পাতা গুটি পোকার খাদ্য । বাংলাদেশে রাজশাহী , বগুড়া , ময়মনসিংহ , কুষ্টিয়া , যশোর ফরিদপুর , সিলেট প্রভৃতি অঞ্চলে রেশম উৎপন্ন হয় । বাংলাদেশে বৎসরে প্রায় ৪ হাজার মে . টন রেশম উৎপন্ন হয় । ২০০৯ – ১০ অর্থ বছরে প্রায় ২.৫ হাজার একর জমিতে ৪.৫ হাজার মে . টন রেশম উৎপন্ন হয় ।

৭. রাবার : সম্প্রতি বাংলাদেশে রাবার চাষ আরম্ভ হয়েছে । সিলেট , চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের কিছু কিছু এলাকায় রাবার উৎপাদন হচ্ছে । বর্তমানে প্রায় ৯০ হাজার একর জমিতে বছরে প্রায় সাতশত মে . টন রাবার উৎপন্ন হয় ।

উপসংহার : বাংলাদেশের খাদ্য শস্য ও অর্থকরী ফসলের অবদান অনস্বীকার্য । খাদ্য শস্য ও অর্থকরী ফসলে বাংলাদেশ যদি স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পারে তাহলে দেশের কৃষিনীতি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে ।

✍️বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কৃষিনীতি কেমন হওয়া উচিত । ফসল বহুমুখী করণের পক্ষে যুক্তি দেখাও ।

উত্তর ৷ ভূমিকা : খাদ্যশস্য উৎপাদনে বাংলাদেশের প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণতার পরিস্থিতি কৃষিনীতির গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা নির্দেশ করে । নব্বইয়ের দশকের প্রথম দিকে দেখা গেছে যে , ধানের মূল্য পড়ে যাওয়ার প্রবণতা রোধ করা দুরূহ কাজ হয়ে গেছে । সরকারের গুদামে সংগৃহীত ধানের পরিমাণ কোন কোন বছর এত বেশি হয়েছে যে , ‘ কা . বি . খা . ’ ও ভি . জি . এফ কর্মসূচিতে দানের গমের পরিবর্তে সংগৃহীত চাল ব্যবহারের চিন্তাভাবনা করা হয়েছে । সরকার চাল রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিতেও বাধ্য হয়েছে ।

ভবিষ্যৎ কৃষিনীতি কেমন হওয়া উচিত : এ পরিস্থিতি কৃষিনীতির মধ্যে নিম্নোক্ত গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা নির্দেশ করে ।

১. চাহিদা ব্যবস্থাপনা কৃষিনীতি : বাংলাদেশের কৃষি নীতির মধ্যে বিগত দিনে যোগান ব্যবস্থাপনা পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ ছিল । বর্তমানে চাহিদা ব্যবস্থাপনা পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে । অর্থাৎ এখন কিছু কিছু কৃষি পণ্যের পর্যাপ্ত চাহিদা নিশ্চিত করতে হবে । বিশেষত চালের বাজারে পর্যাপ্ত চাহিদা যেন সৃষ্টি হয় সে ব্যবস্থা করতে হবে ।

২. ফসল বহুমুখীকরণ : কৃষির উন্নয়নের জন্য খাদ্যশস্য ছাড়াও অন্যান্য ফসল উৎপাদনে মনযোগ দিতে হবে । অর্থাৎ ফসল বহুমুখীকরণ নীতি অবলম্বন করতে হবে । এতে কৃষক তার খাদ্যশস্য ছাড়া অন্যান্য ফসলের ন্যায্য মূল্য পাবে এবং ক্ষতি এড়াতে পারবে । অধিকন্তু কৃষিখাতে অন্যান্য ফসলের আয় থেকে খাদ্যশস্যের চাহিদা সৃষ্টি হবে ।

৩. শিল্পায়ন : বাংলাদেশের অর্থনীতি কৃষি নির্ভর থাকবে এমন কথা বলা যায় না । বর্তমান কৃষি উৎপাদনের প্রবৃদ্ধির হারের ভিত্তিতে হিসাব করলে দেখা যায় যে , ধানের উৎপাদন ২০১০ সালে ৩২-৩৪ মিলিয়ন মে . টনে পৌঁছাবে । এ স্তরের ঊর্ধ্বে উৎপাদন বাড়াতে হলে বিশাল বন্যা নিয়ন্ত্রণ , পানি নিষ্কাশন ইত্যাদি বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে । এ ধরনের বিনিয়োগ এতই ব্যয়বহুল হবে যে , বাংলাদেশ কৃষিপণ্য উৎপাদনে আপেক্ষিক সুবিধা হারিয়ে ফেলবে । ফলে বাংলাদেশ তখন কৃষি পণ্য রপ্তানির পরিবর্তে আমদানি করবে । অর্থাৎ এখন থেকে প্রায় ২০ বছর পর বাংলাদেশ খাদ্যশস্য নয় বরং অন্য পণ্য রপ্তানি করবে । অতএব কৃষির তুলানায় শিল্পের ও অন্যান্য খাতের আপেক্ষিক গুরুত্ব বেড়ে যাবে । এ ভবিষ্যৎ পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে কৃষিনীতি প্রণয়ন করতে হবে ।

বাংলাদেশের ফসল বহুমুখীকরণের পক্ষে যুক্তি ফসল বহুমুখীকরণের পক্ষে যুক্তি :

কৃষি উন্নয়নের কৌশল হিসেবে ফসল বহুমুখীকরণের সুবিধাগুলো নিম্নরূপ :

১. চাহিদা সৃষ্টি : বাংলাদেশের অর্থনীতির মধ্যে কৃষি বৃহত্তম খাত । শিল্প বা সার্ভিস খাত এখনো যথেষ্ট প্রসার লাভ করে নি , আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশও সহজ নয় । অতএব কৃষি খাতের ভেতরেই কৃষি পণ্যের চাহিদা সৃষ্টি করতে হবে । তাই শুধু ধান উৎপাদন করলে ধানের পর্যাপ্ত চাহিদা থাকবে না , বরং কৃষি খাতে একাধিক ` ণ্য উৎপন্ন হলে পণ্যগুলো পরস্পরের চাহিদা সৃষ্টি করবে । অতএব বাংলাদেশে ফসলের বহুমুখীকরণ প্রয়োজন ।

২. ভূমি ক্ষমতা সংরক্ষণ : একই জমিতে বছরের পর বছর একই ফসল উৎপাদন করলে জমির উৎপাদন ক্ষমতা বিনষ্ট হয় । পক্ষান্তরে , বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করলে গুণাবলির ভারসাম্য বজায় থাকে । অতএব ভূমির উৎপাদন ক্ষমতা সংরক্ষণের জন্য ফসলের বহুমুখীকরণ আবশ্যক ।

৩. সেচ ব্যবস্থার দক্ষতা : ধান ছাড়া অন্যান্য ফসলের জন্যও পানি সেচের প্রয়োজন হয় । অতএব সেচ সেবার বাজারে দক্ষতা অর্জিত হবে যদি ফসলের বহুমুখীকরণ করা হয় । বছরের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ফসলের জন্য পানির চাহিদা সৃষ্টি হলে সেচ সেবার দক্ষ ব্যবহার সম্ভব হবে ।

৪. ঝুঁকি হ্রাস : এক ফসলের পরিবর্তে অনেক ফসল উৎপাদন করলে কৃষকের ঝুঁকি হ্রাস পায় । একটি ফসল বিনষ্ট হলেও অন্য ফসল থেকে কৃষকের আয় উপার্জনের সম্ভাবনা থাকে ।

৫. কৃষকের আয় বৃদ্ধি : ফসল বহুমুখীকরণের কারণে সারা বছর খামারে কোন না কোন ফসল থাকে । ফলে কৃষক অধিক আয় উপার্জন করে । এছাড়া একটি পণ্যের যোগান বেড়ে গিয়ে মন্দা সৃষ্টি হয় না বলে কৃষক ন্যায্য দাম পায় । ফলে কৃষকের আয় বাড়ে ।

৬. পুষ্টি : ফসল বহুমুখীকরণের ফলে মানুষ খাদ্যে বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার করে । ফলে খাদ্য অধিক পুষ্টিকর ও সমৃদ্ধ হয় ।

উপসংহার : বাংলাদেশের কৃষিনীতি যাতে কৃষকদের পক্ষে যায় এবং ফসল বহুমুখীকরণ হয় তার জন্য সরকারকে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে ।

[ad_2]